আগরতলা(Agartala)- ত্রিপুরার প্রাচীন রাজধানী ছিল উদয়পুর। আগরতলার রাজধানীর তকমা জোটে ১৮৪০ সালে। এই শহরের মূল আকর্ষণ উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ। ১৯০১ সালে প্রাসাদটি তৈরি করেন মহারাজ রাধাকিশোর মাণিক্য। বর্তমানে এটি বিধানসভা ভবন। রাজ্যপালের বাসভবন কুঞ্জবন প্রাসাদটিও ভারি সুন্দর। শেষবার ত্রিপুরায় এসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এখানেই ছিলেন। তবে ত্রিপুরায় এলে রবীন্দ্রনাথ সচরাচর যে বাড়িটিতে থাকতেন সেটি হল মালঞ্চ নিবাস। এখানে বসেই রচনা করেছিলেন তাঁর ‘বিসর্জন’ নাটকটি। অন্যান্য দ্রষ্টব্যের মধ্যে রয়েছে ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির, মহারাজা বীরবিক্রম কলেজ, স্টেট মিউজিয়াম, আনন্দময়ী মায়ের আশ্রম, উমা-মহেশ্বর মন্দির, জগন্নাথ মন্দির, বেনুবন বিহার, গেদু মিঞার মসজিদ, চতুর্দশ দেবতার মন্দির ও প্রাচীন রাজপ্রাসাদ।
আগরতলা থেকে ২৫কিমি দূরে বিখ্যাত অভয়ারণ্য সিপাহিজলা। এই অরণ্যের মধ্যেই রয়েছে চিড়িয়াখানা। শহর থেকে ৩০কিমি দূরে কমলাসাগর দিঘি। ৫৫কিমি দূরে প্রাচীন রাজধানী, মন্দিরের শহর উদয়পুর। ৫৩কিমি দূরে বিশাল জলাশয় রুদ্রসাগর ও রুদ্রসাগরের তীরে অপরূপ কারুকার্যমন্ডিত নীরমহল প্রাসাদ।
আগরতলা থেকে ১৭৮কিমি দূরে পাহাড়-জঙ্গলে ঘেরা ঊনকোটি। রঘুনন্দন পাহাড়ের পাথরের গায়ে খোদাই করা আছে অসংখ্য দেবদেবীর মূর্ত্তি। অষ্টম ও নবম শতাব্দীতে নির্মিত এই মূর্ত্তিগুলির মধ্যে তিরিশ ফুট উঁচু ঊনকোটিশ্বর কালভৈরব শিবের মূর্ত্তিটি বিশেষ দ্রষ্টব্য। প্রচলিত লোককথা অনুযায়ী মূর্ত্তির সংখ্যা এক কম কোটি, তাই স্থানটির নাম হয়েছে ঊনকোটি।
আগরতলা থেকে ২২৫কিমি দূরে ত্রিপুরার একমাত্র শৈলাবাস জম্পুই শহর।
যাওয়াঃ- নিকটতম বিমানবন্দর আগরতলা। আগরতলায় পৌঁছে নিজেদের উদ্যোগে বা ত্রিপুরা পর্যটন দপ্তরের আয়োজিত প্যাকেজট্যুরে ত্রিপুরার দর্শনীয় স্থানগুলি ঘুরে নেওয়া যায়।
থাকাঃ- এয়ারপোর্ট থেকে শহর যাওয়ার পথে পড়বে সরকারি ট্যুরিস্ট লজ, এদেরই যাত্রিকা ও রাজ্যশ্রী যাত্রী নিবাস। এছাড়াও শহরজুড়ে অনেক হোটেল আছে।
উৎসবঃ- ত্রিপুরার কয়েকটি প্রধান উৎসব হল নভেম্বরের মাঝামাঝি জম্পুই পাহাড়ে কমলা ও পর্যটন উৎসব, ডিসেম্বরে নীরমহলে নীরমহল উৎসব, আগস্টে রুদ্রসাগরে নৌকাবাইচ উৎসব, জানুয়ারি মাসে ঊনকোটিতে ঊনকোটি উৎসব।
কেনাকাটাঃ- ত্রিপুরার হস্তশিল্পের বিশেষ খ্যাতি আছে। বিশেষত বাঁশ, বেতের সামগ্রী ও তাঁতের কাপড়ের। আগরতলায় কেনাকাটার জন্য রয়েছে ত্রিপুরা সরকারের পূর্বাশা এম্পোরিয়াম।