বেড়ানোর মতই বইপড়ার আদতও বাঙালির চেনা সখ – তা ছাপা হোক বা ই-বুক। পুরোনো ভ্রমণ কাহিনিগুলির নস্টালজিয়া তাতে এনে দেয় একটা অন্যরকম আমেজ। আজকের ভ্রমণপ্রিয় বাঙালি লেখক-পাঠকেরা অনেকেই শতাব্দী প্রাচীন এইসব লেখাগুলি পড়ার সুযোগ পাননি। 'আমাদের ছুটি'-র পাঠকদের জন্য পুরোনো সাময়িক পত্রিকার পাতা থেকে অথবা পুরোনো বইয়ের কিছু কিছু নির্বাচিত অংশ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে পত্রিকার পাতায়।

 

abala bose

বাংলাদেশের বাসন্তীর বাখরগঞ্জে ১৮৬৪ সালের ১২ অক্টোবর কামিনী রায়ের জন্ম হয়। তাঁর পিতা ছিলেন সাবজজ চণ্ডীচরণ সেন। কামিনী বেথুন কলেজ থেকে বি.এ. পাস করে ওই কলেজেই সংস্কৃতের অধ্যাপিকা নিযুক্ত হন। মাত্র পনেরো বছর বয়সে লেখা 'আলো ও ছায়া' কাব্যগ্রন্থটি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকাসহ ১৮৮৯ সালে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই তাঁর কবিখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। ১৮৯৪ সালে ব্রাহ্মনেতা কেদারনাথ রায়ের সঙ্গে বিবাহ হয়। ১৯০৯ সালে স্বামীর এবং তার চার বছর পর জ্যেষ্ঠ পুত্রের মৃত্যু হয়।
পরবর্তীকালে কামিনী রায় সমাজসেবা ও জনহিতকর কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন। ব্রাহ্ম বালিকা বিদ্যালয়ের পরিচালনায় তিনি যুক্ত ছিলেন। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের যুগে তাঁর লেখা 'তোরা শুনে যা আমার' গানটি বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় জগত্তারিণী পদকে কামিনী রায়কে সম্মানিত করে। তিনি বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সহ সভানেত্রী (১৯৩২-৩৩) ছিলেন। ১৯৩৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর কলকাতায় কামিনী রায়ের মৃত্যু হয়। ২০১৪ সাল তাঁর জন্মের সার্ধ শতবর্ষ।
দার্জিলিং নিয়ে কামিনী রায়ের লেখা হয়তো একমাত্র ভ্রমণ কাহিনির প্রথম অংশটুকু বামাবোধিনী পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। লেখিকার সম্পর্কে সম্পাদকের মন্তব্য থেকে জানতে পারি লেখাটি 'বঙ্গমহিলা সমাজের কুমারী কামিনী সেন বি এ.র পঠিত হিমালয় ভ্রমণ প্রস্তাব হইতে গৃহীত'। কামিনী ১৮৮৬ সালে বেথুন কলেজ থেকে বি.এ.পাস করেন। এই লেখাটি প্রকাশ হয়েছিল অক্টোবর ১৮৮৬ তে। আমার বিশ্বাস সেই সময়ের কলকাতায় কামিনী সেন নাম্নী আর কোন বি.এ.পাস লেখিকা ছিলেন না অর্থাৎ এই ভ্রমণকাহিনির লেখিকা কামিনী সেনই বিবাহ-পরবর্তী সময়ে কবি কামিনী রায় নামে পরিচিত হন। দুঃখের বিষয় এই ভ্রমণ কাহিনিটি একটিমাত্র সংখ্যায় বেরোনোর পর 'ক্রমশ' লেখা থাকা সত্ত্বেও আর প্রকাশিত হয়নি। আমি পত্রিকাটির পরবর্তী অনেকগুলি সংখ্যা তন্নতন্ন করে খুঁজেছি, বামাবোধিনীর সূচিপত্রের সংকলনেও কোথাও দ্বিতীয় কোন সংখ্যায় এই লেখাটির উল্লেখ নেই। সমসাময়িক অন্য কোন পত্রিকাতেও লেখাটির পরবর্তী কোন অংশ প্রকাশিত হয়নি। কবি কামিনী রায়ের গদ্য সংকলন যা পেয়েছি সেখানেও কোন ভ্রমণ কাহিনির উল্লেখ নেই। আদৌ তিনি কোন ভ্রমণ কাহিনি লিখে গেছেন বলেই কোথাও কিছু পাইনি। অথচ সম্পাদকের উক্তি থেকে বোঝা যায় 'হিমালয় ভ্রমণ প্রস্তাব' বলে পূর্ণাঙ্গ একটি ভ্রমণ রচনার সামান্য অংশই এই লেখা। তাহলে মূল লেখাটি গেল কোথায়? কামিনী রায়কে নিয়ে যাঁরা গবেষণা করেছেন বা করছেন তাঁদের সংগ্রহে এই লেখা বা অন্য ভ্রমণলেখা থাকলে তা জানালে নিতান্তই বাধিত হব।


দার্জ্জিলিং ভ্রমণ

কুমারী কামিনী সেন


দার্জ্জিলিঙ্গের নাম বামাবোধিনীর পাঠিকারা সকলেই শুনিয়াছেন। এই সুরম্য পার্ব্বত্য নগরের সৌন্দর্য্য বর্ণনা করিয়া অল্প পরিমাণেও তাহা অপরের হৃদয়ঙ্গম করাইতে পারি, আমার এমন সাধ্য নাই। বিশেষতঃ যেরূপ চক্ষু এবং যেরূপ হৃদয় লইয়া বিধাতার বর্ণনাতীত রচনা কৌশল পর্য্যবেক্ষণ করিতে হয়, আমার চক্ষু সৌন্দর্য্যানুভবে তদ্রূপ শিক্ষিত বা হৃদয় সেই সৌন্দর্য্য সম্যক উপভোগ করিবার পক্ষে তদনুরূপ উন্নত হয় নাই। সুতরাং দার্জ্জিলিঙ্গের সৌন্দর্য্যের অতি অল্পই আমি নিজে হৃদয়ঙ্গম করিতে সমর্থ হইয়াছি।
ভারতবর্ষের মানচিত্রের শিরোভাগে হিমাচল নামে যে মহান্ পর্ব্বতপ্রাচীর পূর্ব্ব হইতে পশ্চিম পর্য্যন্ত বিস্তৃত দেখা যায়, উহার একটি ক্ষুদ্র অংশে দার্জ্জিলিং সংস্থাপিত। হিমাচল পর্ব্বতকে হিন্দু কবিগণ নগাধিরাজ বলিয়া অভিহিত করিয়াছেন। প্রকৃতপক্ষেও হিমালয় পর্ব্বতদিগের রাজা। ইহার ন্যায় প্রকাণ্ড পর্ব্বত পৃথিবীতে আর দেখা যায় না। ইহার দৈর্ঘ্য ১৫০০ মাইল এবং প্রস্থ ২০০ মাইল। ইহার সর্ব্বোচ্চ শৃঙ্গ গৌরীশঙ্কর অথবা এবারেষ্ট সমুদ্র পৃষ্ঠ হইতে ২৯০০২ ফিট উচ্চ। এবারেষ্ট নামক জনৈক ইয়োরোপীয় সর্ব্বপ্রথম এই শৃঙ্গের উচ্চতা নির্ণয় করেন বলিয়া তাঁহারই নামানুসারে ইয়োরোপীয়গণ ইহাকে অভিহিত করেন। উচ্চতায় দ্বিতীয় স্থানীয় এবং দার্জ্জিলিঙ্গের প্রধান আকর্ষণ কাঞ্চন জুঞা। কাঞ্চন জুঞা অর্থ পঞ্চ হিমাধার। এর উচ্চতা, সমুদ্র পৃষ্ঠ হইতে ২৮১৭৬ ফিট। কাঞ্চন জুঞা নেপালের পূর্ব্ব সীমায় ও সিকিমের উত্তর পশ্চিম সীমায় অবস্থিত।
দার্জ্জিলিঙ্গের উত্তরে সিকিম রাজ্য। বড়রঙ্গীত, ত্রিস্রোতা বা তিস্তা এবং রম্মে নামক তিনটি নদী দার্জ্জিলিংকে সিকিম রাজ্য হইতে বিচ্ছিন্ন করিতেছে। দার্জ্জিলিঙ্গের দক্ষিণে পূর্ণিয়া ও রঙ্গপুর; কিঞ্চিৎ দক্ষিণপূর্ব্বে রাজসাহী ও কুচবিহার। পূর্ব্বদিকে ডেচি ও নেচি নামক দুইটী নদী ইহাকে ভূটান হইতে পৃথক্ করিতেছে। পশ্চিমে মেচি নামক নদী ও একটী পর্ব্বত শ্রেণী ইহাকে নেপাল হইতে পৃথক্ করিতেছে। দার্জ্জিলিঙ্গের সাধারণ উচ্চতা ৭০০০ ফিট, উচ্চতা বশতঃই ইহার এত শৈত্য। কলিকাতায় যখন দারুণ গ্রীষ্ম, দার্জ্জিলিঙ্গে তখনও বেশ শীত বোধ হয়।
পূর্ব্বে দার্জ্জিলিং সিকিমের অন্তর্ভূত ছিল। এককালে নেপালী গুরুখাগণ সিকিমের কিয়দংশ অধিকার করিয়া ক্রমে ব্রিটিষ রাজ্য আক্রমণ করে। ইংরাজগণ ইহাদিগকে পরাজিত করিয়া হিমালয় প্রদেশের কিয়দংশ ইহাদিগের নিকট হইতে গ্রহণ পূর্ব্বক নৈনিতাল, মশুরি এবং সিমলা প্রভৃতি স্থান স্বাস্থ্যবিহার স্থানরূপে ব্যবহার করিতে লাগিলেন; এবং মোরাঙ্গ নামক বর্ত্তমান দার্জ্জিলিং প্রদেশের দক্ষিণ ভাগ সিকিমপতিকে প্রদান করিয়া তাঁহার সহিত সন্ধিসূত্রে আবদ্ধ হইলেন। ইহার এগার বৎসর পরে দুইজন ইংরাজ কর্ম্মচারী নেপাল ও সিকিম রাজ্যদ্বয়ের সীমা নির্দ্ধারণ করিতে যাইয়া দার্জ্জিলিঙ্গের কিঞ্চিৎ পূর্ব্বে চৌচাঙ্গ নামক স্থান পর্য্যন্ত ভ্রমণ করিয়া আইসেন। দার্জ্জিলিং দেখিয়া তাঁহাদের মনে হইল যে এই স্থান স্বাস্থ্যোন্নতির সম্পূর্ণ উপযোগী হইবে, অতএব এই স্থানে ইংরাজ উপনিবেশ স্থাপন করিলেই ভাল হয়। তাঁহারা প্রত্যাবর্তন পূর্ব্বক তদানীন্তন শাসনকর্ত্তা লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ককে আপনাদের মন্তব্য জ্ঞাপন করিলেন। ১৮৩০ খৃঃঅব্দে জনৈক ইংরাজ আমিন সিকিম রাজ্য পরিদর্শন করিতে প্রেরিত হইলেন। তাঁহার রিপোর্ট ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানীর ডিরেক্টরদিগের নিকট প্রেরিত হইল; ডিরেক্টরদিগের অনুমত্যনুসারে ব্রিটিষ গবর্ণমেন্ট সিকিমরাজের নিকট হইতে দার্জ্জিলিং প্রদেশ স্বাস্থ্য বিধায়ক স্থান এবং সেনানিবেশরূপে ব্যবহার করিবার জন্য চাহিয়া লইলেন; এবং তদ্বিনিময়ে সিকিমপতিকে বার্ষিক ৩০০০৲ টাকা দিতে প্রতিশ্রুত হইলেন। কাচমূল্যে মণি বিক্রিত হইল! এপ্রিল হইতে অক্টোবর পর্য্যন্ত স্বাস্থ্য লাভার্থ এবং আমোদার্থ অনেকানেক ইংরাজপুরুষ ও রমণী এস্থানে সমাগত হন। বঙ্গের শাসনকর্তা অর্থাৎ ছোটলাট বাহাদুর গ্রীষ্মকালে এই স্থানে বিহার করেন। দার্জ্জিলিং সহরের নিকটে এবং দূরে প্রায় তিন পার্শ্বেই অসংখ্য চা-বাগান। এক একটী ক্ষুদ্র পাহাড়ে এক একটী বাগান এবং চা-করের সুদৃশ্য বাড়ী, আর তাহারই কিয়দ্দূরে কুলিদিগের বস্তি অথবা কুটীরময় ক্ষুদ্র গ্রাম। দার্জ্জিলিঙ্গে দাঁড়াইয়া এই চা-বাগানগুলির দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করিলে কুলি গ্রামের এক একখানি কুটীর খোলা ঘরের এক একখানি খোলার ন্যায় দেখায়। চাকরদিগের যেমন পশার, তেমনই আবার সুখ। দুঃখী বাঙ্গালীরা অর্থাভাবে এমন সুন্দর স্থান দর্শন করিয়া নয়ন মনের তৃপ্তি সম্পাদন করিতে পারেন না, আর যাঁহাদের অর্থের স্বচ্ছলতা আছে, তাঁহাদের অনেকের রুচি অন্যরূপ।
আমরা অপরাহ্নে ২-২০ মিনিটের সময় কলিকাতা ত্যাগ করি। রেলওয়ে পথের কথা কিছুই বলিবার নাই। রেল পথের সুখ দুঃখ সকলেই জানেন। যে পথ দিয়া আমরা দার্জ্জিলিং গিয়াছি, তাহার অর্দ্ধাধিক পথ সচরাচর সকলেই গিয়া থাকেন। তবে পথে আমাদের একটী দৃশ্য বড়ই সুন্দর লাগিয়াছিল, এখনও তাহা ভুলিতে পারি নাই; সেই জন্যই একবার তাহার উল্লেখ করিতেছি। আমি পূর্ব্বে দামুকদিয়া ষ্টেসনে অনেকবার নামিয়াছি, কিন্তু একবারও দামুকদিয়াতে কোনদিকে চক্ষু আকৃষ্ট হয় নাই; কোন মতে গাড়ী হইতে নামিয়া তাড়াতাড়ি জাহাজে উঠিয়াছি। যখন পদ্মা জলে পরিপূর্ণ থাকে, তখন গাড়ী ষ্টেসনের নিকটে থামে; কিন্তু যে সময় নদীর জল কমিয়া নদীপার্শ্ব অনেক দূর পর্য্যন্ত শুকাইয়া যায়, তখন সেই শুষ্ক বালুকাময় ভূমির উপরে রেল পাতিয়া দেওয়া হয় এবং তাহার উপর দিয়া গাড়ী জাহাজ ঘাটের নিকটে আইসে। এবার রেলের দুই পার্শ্বস্থ বালুকারাশি জ্যোৎস্নালোকে এমন সুন্দর দেখাইতেছিল যে আমরা দেখিয়া দেখিয়া আর চক্ষু ফিরাইতে পারি নাই - ; ঠিক বোধ হইতেছিল যেন আমরা শুভ্রফেণ অচঞ্চল জলরাশির মধ্য দিয়া চলিয়া যাইতেছি। আপনারা কোন দিন চন্দ্রালোকে বালুকার উপর দিয়া যদি যান, তাহা হইলে উহা ভাল করিয়া লক্ষ্য করিবেন। জাহাজে নদীপার হইয়া আমরা সারাঘাটে আসিলাম। এখানে আসিয়া দেখিলাম গাড়ীগুলি বড় ছোট। পর দিন প্রত্যূষে আমার পূর্ব্বপরিচিত জলপাইগুড়ি পৌছিলাম। এখান হইতে একঘন্টা পরে শিলিগুড়ি আসিলাম। শিলিগুড়ি আসিয়া গাড়ী পরিবর্ত্তন করিতে হয়। শিলিগুড়ি হইতে যে ট্রেণ দার্জ্জিলিঙ্গ যায়, তাহার গাড়ীগুলি অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র। শিলিগুড়ি হইতে যাইতে যাইতেই মনে হইতে লাগিল, যেন ক্রমে ক্রমে উচ্চে উঠিতেছি। আর কিয়দ্দূরে আসিবামাত্রই পর্ব্বতশ্রেণী তরঙ্গায়িত দিগন্ত প্রসারিণী মেঘমালার মত সম্মুখস্থ হইতে লাগিল। দেখিতে দেখিতে গাড়ী উচ্চতর ভুমিতে আরোহণ করিতে লাগিল; ক্রমেই মেঘায়মান পর্ব্বতদেহ স্পষ্টতর হইয়া আসিল। অতঃপর পর্ব্বত দেহস্থ বৃক্ষরাজি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গুল্মের ন্যায় প্রতীয়মান হইতে লাগিল। এদিকে রেলপথের এক পার্শ্ব নিম্নতর এবং অপর পার্শ্ব প্রাচীরের ন্যায় কিম্বা তদপেক্ষা অধিক উচ্চতর বোধ হইতে লাগিল। অবশেষে দেখি সম্মুখে ও পার্শ্বে পাহাড়ের পর পাহাড়! একবার যে স্থান অতি উচ্চ বলিয়া মনে হইয়াছে, দণ্ড দুই পরে সে স্থান কত নিম্নে পড়িয়া রহিতেছে। পার্ব্বত্য পথগুলি বক্রাকার, সেই পথে গাড়ীগুলি একবার দক্ষিণে একবার বামে বৃত্তার্দ্ধের মত বাঁকিয়া চলিতেছিল। কখন বা যে পথ দিয়া একবার চলিয়া আসিয়াছি, ঘুরিয়া ঘুরিয়া আবার সেই পথেরই পার্শ্বস্থ উন্নত ভূমির উপর দিয়া আসিতেছি, কখন বা দশ পাঁচ মিনিট পরে ঠিক সেই পথের উপরিস্থ সেতু দিয়া আসিতেছি। পার্ব্বত্যপথ ও গাড়ীর গতি পর্য্যবেক্ষণ করিতে করিতে একটি কথা মনে হইল; ইহা আমি কোথাও পড়িয়াছি, কি ইহা আমার নিজের মানসপ্রসূত চিন্তা, তাহা ঠিক্ বলিতে পারি না। কিন্তু তখন আপনা আপনি মনে হইল যে এই পথের সঙ্গে আমাদের জীবন পথের কত সৌসাদৃশ্য, উভয়েরই উদ্দেশ্য ক্রমোন্নতি লাভ। উন্নত লক্ষ্য গুলি কত নিকট এবং সহজ প্রাপ্য বলিয়া বোধ হয়, অথচ উহার নিকট যাইবার পথ কত দীর্ঘ, যাইতে কত বিলম্ব হয়। যাঁহারা উন্নততর প্রদেশে দণ্ডায়মান রহিয়াছেন, নিজের ও তাঁহাদের মধ্যস্থ দূরত্ব কত অল্প বোধ হয় অথচ নিকটস্থ হইতে কত সময় ও কত আয়াসের প্রয়োজন!

ক্রমশঃ

কৃতজ্ঞতা স্বীকার – ভারতীয় জাতীয় গ্রন্থাগার

[ অভ্রতে কিছু কিছু বাংলা বানান টাইপের অসুবিধাটুকু বাদ দিলে মূল বানান ও বিন্যাস অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। - সম্পাদক ]

SocialTwist Tell-a-Friend

To view this site correctly, please click here to download the Bangla Font and copy it to your c:\windows\Fonts directory.

For any queries/complaints, please contact admin@amaderchhuti.com
Best viewed in FF or IE at a resolution of 1024x768 or higher