অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প ট্রেকিং
স্নেহাদ্রি মেউর
~ ~ অন্নপূর্ণা বেসক্যাম্প ট্রেক রুট ম্যাপ ~ অন্নপূর্ণা বেসক্যাম্প ট্রেকের আরও ছবি ~
২০০৬-এ প্রথম সান্দাকফু ট্রেক করার পর আবার অন্য কোথাও ট্রেকিং করার জন্য মনটা আনচান করছিল। অধীরদা - আমাদের ট্রেক ইকুইপমেন্ট যোগান দেয়, বলল, তোরা অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প যাচ্ছিস না কেন? বেশ উৎসাহিত হয়ে উঠলাম শুনে। একটা রবিবার মিটিং-ও ঠিক হয়ে গেল। আমরা চারজন -কাঞ্জিলাল (ক্যাপ্টেন) , তমঘ্ন , শুভেন্দু, আমি আর অধীরদা আসবে তার গুরু তুহিনদাকে নিয়ে। মিটিং-এর দিন অধীরদা না এলেও তুহিনদা হাজির। বয়সে প্রবীন হলেও প্রথম দিনেই তিনি আমাদের সঙ্গে বেশ মিশে গেলেন। তুহিনদার অন্নপুর্নার স্লাইড শো দেখলাম -এক কথায় অসাধারণ। কোনো গাইড পোর্টার ছাড়াই কীভাবে ট্রেকটা করা যাবে তার একটা প্রাথমিক ধারণাও পেয়ে গেলাম।
নেপালে ঢোকার দুটি রাস্তা আছে বিহার আর পশ্চিম বাংলা দিয়ে। তুহিনদা পরামর্শ দিলেন, বাংলা দিয়ে যাও ওটাই সুবিধা জনক। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে পানিটাঙ্কি (ভারতের সীমানায় ) হয়ে কাঁকরভিটা (নেপাল সীমানায়)। ভারতীয় ১০০ টাকা বা তার কম টাকার নোটই নেপালি সরকারি ব্যাঙ্ক এক্সচেঞ্জ করে। আর এ সি সি এ পি (ACCAP) থেকে অনুমতি করাতে হবে এই ট্রেকের জন্য।
মে মাসের শেষের দিকের এক রবিবারে আমরা যাত্রা শুরু করলাম। কামরূপ এক্সপ্রেস ধরে পরেরদিন সকাল ছ'টা নাগাদ নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন-এ পৌঁছলাম। ট্রেকার ধরে কাঁকরভিটা পৌঁছালাম সাতটা নাগাদ ; ভাড়া জন প্রতি ১০০ টাকা। লোকাল একজন গাইড নিলাম, নাম রাজু। এখানেই নেপালি কারেন্সিতে টাকা বদলে নিলাম। সারাদিন একটা হোটেলে কাটিয়ে সন্ধ্যের বাসে পোখরার দিকে রওনা দিলাম।
বিকেল সাড়ে পাঁচটায় বাস ছাড়ল। রাস্তার দুপাশে শুধুই ধুধু প্রান্তর। মাঝে মাঝেই নদীর ওপর ব্রিজ আর নীচে সরু সরু নদী বয়ে চলেছে। রাত্রিবেলা বাস চলেছে পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে। আকাশ ঝক ঝক করছে তারায়, রাস্তা ঝল মল করছে স্ট্রিট ল্যাম্পের আলোতে। ভোরের বেলা ঘুম ঘুম চোখে দেখি আকাশের মুখ ভার। কাঞ্জিলাল বলল "আর কোনো দিন মে মাসে ট্রেক করব না রে পিকু (আমার ডাক নাম)"। সকাল সাতটা নাগাদ পৌঁছলাম পোখরা বাস স্টান্ডে। হোটেলে ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়ে পড়লাম ACCAP-পোখরা damside এর উদ্দেশে। ইন্টার সিটি বাসগুলো বড় মারুতি ভ্যানের মত। অনেকক্ষণ হন্যে হয়ে খোঁজার পর অবশেষে ACCAP পেলাম। জন প্রতি ২০০ নেপালি টাকার বিনিময়ে ফটো যুক্ত অনুমতিপত্র হাতে পেলাম। পায়ে হেঁটে শহরটা খানিক ঘুরে গেলাম "ডেভিসফল"। তারপর হোটেলে ফিরে লাঞ্চ সেরে একটা লম্বা ঘুম।
পরের দিন ভোর পাঁচটা নাগাদ হোটেলের উল্টো দিকের বাসস্ট্যান্ড থেকে লোকাল বাস ধরে "ফেদী" পৌঁছলাম। বাসভাড়া ১৫০ নেপালি টাকা। চা বিস্কুট খেয়ে ছ'টায় ট্রেক শুরু হল – ৬০ ডিগ্রি খাড়াই সিঁড়ি ভাঙ্গতে হবে এটাই নাকি এই ট্রেকের মজা অথবা সাজা!
ফেদী থেকে লোয়ার দেওরালি
দীর্ঘ রাস্তা, চড়াই নাহলে উতরাই, জঙ্গল মাঝে ছোটো বড় গ্রাম আর পুরোটাই পাথুরে সিঁড়ি উঁচু উঁচু স্টেপ – এই সব অতিক্রম করেই আমরা এগিয়ে চলেছি। আকাশ মেঘে ঢাকা, শুধু নৈসর্গিক সৌন্দর্য যা বর্ণনা করে বোঝানো যায় না। অবশ্য রয়েছে জোঁকের আতঙ্কও, যেন এক জোঁকের রাজ্যে অনুপ্রবেশ করেছি, রীতিমত তাড়া করছে থেকে থেকেই। এই ভাবেই জঙ্গল নদী পাহাড় পর্বত পেরিয়ে ঘন্টা পাঁচেক হাঁটার পর অবশেষে দেওরালি দেখা গেল। মাত্র দুটি ট্রেকার্স হাট। কাঠের দোতলায় একটি ঘর পেলাম ১০০ টাকার বিনিময়ে তবে বেশ ছোট আর ভিতরে জোঁকও আছে। ঘরের সামনে পাথরের বাঁধানো উঠোনে চেয়ার টেবিল পাতা। সেখানে বসে গল্প করছি হঠাৎ মেঘ সরে গেল আর ফেওয়া লেক আর পোখরা শহরের কিছুটা অংশ পরিস্কার দেখা গেল – অসাধারণ মুহূর্ত "যেন নাটকের রঙ্গমঞ্চ হতে যবনিকার ধীর গতিতে উত্তোলন"। খাবার বেশ দামী, ভাত ডাল সবজি মিল ১৫০ টাকা প্লেট। ডাইনিংরুমটা খুব সুন্দর, খাদের উপর ঝুলন্ত, চারপাশ কাঁচের জানলা দিয়ে মোড়া আর কেরোসিনের টিমটিমে আলো। রাতের মেনু মোটাচালের ভাত, কালো ডাল (রংটা কালচে হলুদ), লোকাল শাকের সবজি (সবজি স্টিক রোল করা), পাঁপড় আর আচার – কন্টিনেন্টাল রাইস প্লেট মন্দ নয়। সারারাত প্রচণ্ড বৃষ্টি হল, সকালেও আকাশ পরিস্কার হল না। তবে ধৌলাগিরি আর অন্নপূর্ণা পরিস্কার দেখা যাছিল। আমাদের পাশের ঘরে এক ইজরায়েলি মহিলা ছিলেন, ঘরের সিলিং থেকে জোঁক ঝুলছে দেখে আতঙ্কে সারারাত ঘুমোতে পারেননি। আমাদের ঘরেও তাই ছিল কিন্তু খেয়াল করিনি। তবে সকালে ঘুম থেকে উঠে পা থেকে জোঁক ছাড়াতে হয়েছে। তবে এটা আগেরদিনের জোঁকের অভিজ্ঞতার তুলনায় কিছুই না। যাইহোক চা বিস্কুট খেয়ে পরবর্তী গন্তব্য ছমরঙ-এর জন্য আবার পথে বেরিয়ে পড়লাম।
লোয়ার দেওরালি থেকে ঝিনু
সকাল থেকেই মাঝে মাঝেই বৃষ্টি হচ্ছে, রাস্তায় জোঁক একেবারে কেঁচোর মত কিলবিল করছে। একটা কথা আগে বলা হয়নি – ট্রেকটা এত কম উচ্চতা থেকে শুরু যে তিন দিন শুধু রেন ফরেস্টের মধ্যে দিয়ে পথ। চারদিকে অপুস্পক উদ্ভিদের ছড়াছড়ি, মূলত ফার্ন জাতীয় গাছ খুব বড়বড় যা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবেনা । সকাল থেকেই এত সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে পায়ের পেশিতে রীতিমত টান ধরেছে। একটা লোহার ব্রিজ ক্রস করেই রাস্তা প্রায় সমতল হয়ে গেল, সামনেই তোলকা। হালকা টিফিন করে আবার হাঁটা দিলাম। রাস্তা প্রায় সমতল, জনবসতির মধ্য দিয়ে হাঁটা। সামনে অন্নপূর্ণাকে মেঘের আড়াল থেকে আংশিক দেখা যাচ্ছে। প্রায় হঠাৎই রাস্তায় চার জন ট্রেকারের দেখা পেলাম, বাঙালি, হাওড়া শিবপুর থেকে আসছেন। তাঁদের মুখে শুনলাম রাস্তায় এখন অনেক বরফ আছে, অনেকগুলো আইসব্রিজ টপকাতে হবে। এই সব শুনে আমাদের হাঁটার গতি বেড়ে গেল। আকাশ আবার মেঘলা হয়ে আসছে, যখন তখন বৃষ্টি নামতে পারে। ঝিনু থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি শুরু হল। বৃষ্টির মধ্যেই চড়াই ভাঙ্গতে শুরু করলাম। শরীর আর বইছেনা, কোনোমতে নিজেদেরকে টানতে টানতে ঝিনুতে নিয়ে গেলাম। এখানেও দু'টি ট্রেকার্স হাট আছে, প্রথমটিতেই আশ্রয় নিলাম। কাঠের দোতলায় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন একটি ঘর পেলাম ২০০ টাকার বিনিময়ে। এখানে একটি হট স্প্রিং আছে ১ কিলোমিটার দূরে, শারীরিক ক্লান্তির জন্য আমরা যেতে পারিনি।
ঝিনু থেকে বাম্বু
ঝিনু থেকে ২০০০ সিঁড়ি চড়লে তবেই ছমরঙ পৌঁছনো যাবে। আজ আকাশ পরিস্কার আছে। সকালের দিকে শরীরে এনার্জি থাকে বলে, চড়াই ভাঙ্গতে খুব একটা অসুবিধা হচ্ছে না। ঘন্টা দুয়েক পরে আমরা আপার ছমরঙে উঠে এলাম। সামনে অন্নপূর্ণা আর মচ্ছপুচ্ছ আবছাভাবে দেখা যাচ্ছে। এখান থেকে অন্নপূর্ণা যাওয়ার বা ফেরার রাস্তা একটাই। ছমরঙ অনেক দিক দিয়েই আসা যায়, যেমন ফেদী থেকে, সাহুলি বাজার দিয়ে অথবা পুন হিল হয়ে। কিছুটা বিশ্রাম নেওয়ার পর নামতে শুরু করলাম লোয়ার ছমরঙের দিকে। ছমরঙ একটা খুব বড় গ্রাম, লোকবসতি, চাষাবাদ, দোকানপাট,স্কুল, বিদ্যুৎ সংযোগ, এমন কী হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডও আছে। প্রায় ১০০০ সিঁড়ি ভেঙ্গে নামার পর চোখে পড়ল ছমরঙ নদী। ব্রিজ পেরিয়ে আবার ওঠা সিনুয়া পর্যন্ত। প্রায় ৫০০ সিঁড়ি। সিনুয়া পৌঁছে এনার্জি শেষ, এক পেয়ালা করে গরম চায়ে গলাটা ভিজিয়ে নিলাম। আমাদের আজকের পুরো রাস্তাটা একটা বড় 'M' অক্ষরের মত। আকাশের অবস্থা ভালো নয়, বৃষ্টি পড়ল বলে। তাড়াতাড়ি হাঁটা দিলাম, কিছুটা সিঁড়ি ভেঙে নামার পর রাস্তা প্রায় সমতল। ইতিমধ্যেই টিপ টিপ করে হওয়া বৃষ্টি প্রচণ্ড গর্জন ও বর্ষনের রূপ নিয়েছে। কাক ভেজা হয়ে অবশেষে বাম্বু'তে প্রবেশ করলাম । মাথা গোঁজার জায়গা হল একটি একতলা ঘরে, ঘরের মেঝে আর কোমর পর্যন্ত দেওয়াল পাথরের, ওপরের দিকটা কাঠের। রাতের মেনু ভাত-ডাল-তরকারি। ডিনার টেবিলটা খুব বড়, ওদের পরিবারের সঙ্গে বসেই ডিনার সারা হল। বাঁধাকপির একধরনের সুপ দিয়েছিল, অসাধারণ খেতে।
বাম্বু থেকে আপার দেওরালি
সকালের দিকটায় রেন ফরেস্টের ভেতর দিয়ে হাঁটলেও কিছু সময় পর থেকে তা হালকা হতে শুরু করে দিল। আজ অনেকগুলো পাহাড়ি ঝরনা টপকাতে হল। কোনটি বেরিয়ে আসছে জঙ্গলের বুক চিরে, আবার কোনটি পাথরের গা বেয়ে। খুব তাড়াতাড়িই হিঙ্কু কেভ পৌঁছে গেলাম। গুহাটি আকারে খুব বড়, কিন্তু গুহার মুখ স্থানীয় বাসিন্দারা বন্ধ করে দিয়েছেন। আগে অনেক টুরিস্ট এখানেই রাত্রি বাস করত, গেস্ট হাউস কার্যত পর্যটকহীন থাকত, এটাই গুহার মুখ বন্ধের এক মাত্র কারণ। কিছুদূর যাওয়ার পর প্রথম আইস ব্রিজ দেখা গেল, আমরা ওটা টপকে যাব যাব করছি এমন সময় এক পোর্টার উল্টো দিক থেকে ওটার উপরে চড়ল। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর আবার নামতে শুরু করল। ব্যাপারটা বুঝে ওঠার আগেই আইস ব্রিজ ভেঙ্গে পড়ল নদীতে, প্রচণ্ড শব্দ হল "গুড়ুম" করে। বুঝলাম অভিজ্ঞতার দাম, তার অভিজ্ঞতাই আজ তার এবং আমাদেরও প্রাণ রক্ষা করল। পাশেই নদীর ওপরে কাঠের গুঁড়ি ফেলা আছে, সেখান দিয়ে আমরা নদীটা টপকালাম। সামনে দেওরালি দেখা যাচ্ছে, আমাদের দুই সদস্য ওপর থেকে হাত নাড়ছে। দেওরালি ঢোকার পর জানতে পারলাম ওরা ওই আইস ব্রিজ টপকেই গিয়েছিল। খুব বড় একটা অঘটনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে, স্রেফ ভাগ্যের জোরে। ২৮০ টাকার বিনিময়ে একটা ঘর পাওয়া গেল। ঘরের সামনে পাথরের বাঁধান উঠোনে ভলি খেলা চলছে। সামনের পাহাড়গুলো সারিবদ্ধভাবে একই এঙ্গেলে কাত হয়ে আছে, অদ্ভুত গঠন। কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই জায়গাটি নিমজ্জিত হল মেঘের মধ্যে, চারিদিক অন্ধকারে ঢাকা পড়ল। আবার একটু পরেই পরিস্কার, চারদিক ঝক ঝক করছে। সামনের পাহাড়গুলোতে বরফ পড়ে সাদা হয়ে গেছে।
আপার দেওরালি থেকে অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প
আজকের পথে আর গাছেদের দেখা পাওয়া গেলনা। দুদিকেই খাড়া দেওয়াল উঠে গেছে। অনেক উঁচু থেকে এক জোড়া ঝরনা ঝরে পড়ছে, তাদের জলরাশি হাওয়াতেই বাস্পীভুত হয়ে যাচ্ছে। চোখের সামনের এক ফালি জায়গা দিয়ে আকাশ আর কিছু নাম না জানা শৃঙ্গ দেখা যাচ্ছে। যত সামনের দিকে যাচ্ছি, দৃষ্টি পথ ততই উন্মুক্ত হচ্ছে। সামনের পাহাড়ের গা বেয়ে গড়িয়ে আসা আইস ব্রিজ আমাদের রাস্তা আটকে দাঁড়িয়ে আছে। আমাদের আগের দিনের চরম অভিজ্ঞতা ব্রিজ টপকানোর বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোনো মতে এক এক করে আমরা ব্রিজ পেরোলাম। এই ভাবে পর পর তিনটি বড় বড় আইস ব্রিজ টপকাতে হল। ছমরঙ নদীটি কখন যে পাথরের নীচ দিয়ে বইতে শুরু করেছে তা বুঝতে পারিনি। ঘন্টা দুই পর মচ্চপুচ্ছ বেস ক্যাম্পে পৌঁছলাম । সামনে তুষার শৃঙ্গ পিছনে আইস ব্রিজের সারি, ডান দিকে অন্নপূর্ণার রাস্তা চলে গেছে। অন্নপূর্ণার দিকে কিছুটা যাওয়ার পর শুরু হল বরফের রাজত্ব, বেস ক্যাম্প পর্যন্ত পুরো রাস্তাটাই বরফে ঢাকা । চারদিকে চোখ মেলে দেখলাম " সামনে অন্নপূর্ণা পিছনে মচ্ছপুচ্ছ, দুপাশে নাম না জানা অসংখ্য পর্বত-তুষার শৃঙ্গ আর পায়ের নিচে সাদা বরফের চাদর, উন্মুক্ত আকাশে মেঘেরা ভেসে চলেছে, ফেলে আসা পথের কোন অস্তিত্ব আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না কারণ তারা মেঘে ঢাকা পড়েছে – এ যেন মেঘের বুক চিরে স্বর্গের পথে উঠে এসেছি, স্বর্গযাত্রা করছি"। এই মনমুগ্ধকর অপার্থিব দৃশ্য আজ আমাদের জীবনকে সফল করল। বেস ক্যাম্প-এর ডান দিকে রয়েছে সুদূরপ্রসারী অন্নপূর্ণা গ্লেসিয়ার। বেস কাম্পে "ক্লোদিয়ার" স্মৃতিফলকে মোমবাতি জালিয়ে দিলাম। পরের দিন সকালে মেঘমুক্ত আকাশে সূর্যোদয় দেখলাম। প্রথম আলো পড়ল অন্নপূর্ণা ১ এর মাথায়, তারপর অন্নপূর্ণা সাউথ – একেবারে পিওর গোল্ডেন, যেন সোনা দিয়ে বাঁধানো।
এবার ঘরে ফেরার পালা।
ধীরে ধীরে দূরে চলে গেল পাইনের বন, চা বাগান।
~ ~ অন্নপূর্ণা বেসক্যাম্প ট্রেক রুট ম্যাপ ~ অন্নপূর্ণা বেসক্যাম্প ট্রেকের আরও ছবি ~
ছেলেবেলা কেটেছিল ঘুরে ঘুরেই - নানা জায়গায় বাসাবদলের কারণে। তাই পরবর্তী জীবনে ভ্রমণই ভুবন হয়ে উঠেছে পেশায় ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ার স্নেহাদ্রি মেউরের। ভালোলাগার সুন্দর স্মৃতিগুলি পাথেয় করেই জীবন যুদ্ধে এগিয়ে যেতে চান তিনি। নিয়মিত বেড়াতে বেরিয়েই সেই স্মৃতির ঝুলি ভরে তুলতে চান আরও। এখন সেই ভ্রমণের নেশায় যুক্ত হয়েছে অ্যাডভেঞ্চার আর ফটোগ্রাফি। অনেকদিন পরে পুরোনো ভালোলাগার স্মৃতি হয়ে ওঠে মধুরতর – এই ভেবেই ভ্রমণ কাহিনি লিখতেও কলম ধরেছেন।