উত্তর-পুবের জঙ্গল-পাহাড়ে
জাহির রায়হান
~ কাজিরাঙ্গার আরও ছবি ~ শিলং-চেরাপুঞ্জির আরও ছবি ~
১
লাজলজ্জার মাথা খেয়ে ছ্যাঁচড়ামিটা করেই ফেললাম। স্বদেশদা ফোনে জানতে চাইল গৌহাটি আর শিলং-এ ভালো হোটেলের খবর দিতে পারব কিনা। তখন আমি অতি সুবোধ বালকের ন্যায় মায়ের জ্বালানি কাঠের বন্দোবস্তে ব্যস্ত ছিলাম। কাজকাম বিশেষ নেই, মনটাও পালাই পালাই করছে বহুদিন। তাই উত্তরে বললাম, দিতে পারি তবে কেন দেব? মানে? - স্বদেশদা সন্দিগ্ধ। মানে সিম্পল, আমিও আপনাদের সঙ্গে যাব। পরের পাঁচ সাত মিনিট বহুভাবে, যেমন, আমাদের প্রোগ্রাম সেটল্, ট্রেনের টিকিট হয়ে গেছে, গাড়িও বুক করে ফেলেছি ইত্যাদি ইত্যাদি বলে আমাকে নিরস্ত করার নিরন্তর চেষ্টা চলল। কিন্তূ নাছোড় রবাহূত বা অনাহূত অতিথির মতো আমাকে থামানো গেল না। অতএব গুয়াহাটি, কাজিরাঙ্গা ও মেঘালয়।
সপরিবার স্বদেশদা, রেবাদি এবং বিবাহ-অযোগ্য আমি। রামপুরহাট থেকে ট্রেন ধরার ব্যবস্থা, কেন তা আমি আজও বুঝিনি। সাদা অ্যাম্বাসাডার চেপে রামপুরহাট। পথে সর্বসম্মতিক্রমে ব্যাঙ্ক চাকুরে স্বদেশদাকে ট্যুর ম্যানেজারের দায়িত্ব গছিয়ে নিশ্চিন্ত। টি-শার্ট, জিনস্ আর পায়ে হাওয়াই জুতো দেখে টিনা হাসতে লাগল, বলল - জাহির মামা, তুমি বেড়াতে চললে না কাজে চললে? বললাম, কানার আবার দিন রাত!! ভারতীয় রেল কবে যে ঠিকঠাক সময়ে চলেছে তা একমাত্র রেলের টাইম কিপারই বলতে পারবে। কিন্তু বিকেল সাড়ে পাঁচটার ট্রেন রাত সাড়ে দশটাতেও যখন এলো না, আমি কস্তুরাদিকে জিজ্ঞেস করলাম, দিদি ট্রেন ত্রিবান্দ্রম ছেড়েছে তো? দিদি বলল, তোমার দাদাকে জানো, টিকিট ওই করেছে। টিনার দিকে তাকিয়ে দেখি, তাকে প্রায় নিরঞ্জিত প্রতিমার মতো দেখাচ্ছে।
অনেক ছোটবেলায় আনন্দবাজারের ক্রীড়া সাংবাদিকের একটি লেখা পড়েছিলাম - অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ক্রিকেট বিশ্বকাপ কভার করতে গিয়ে তিনি 'বিশ্বকাপের কড়চা'য় লিখেছিলেন, নিউজিল্যান্ডের ট্রেনে উঠেই আপনার মনে হবে আমরা এত গরিব কেন? ভারতীয় রেলের স্লিপারে উঠলেই আমার মনে হয়, আমরা এত অসভ্য কেন?! বেশি কথা বলে লাভ নেই, নিজের ধৈর্য ও সহ্য ক্ষমতা যদি বাড়াতে চান তাহলে স্লিপারে ভ্রমণ করুন। কোনওক্রমে রাতটুকু কাটিয়ে তাই দাদার কাছে চলে গেলাম। হাসি, মস্করা ও ঠাট্টার আবহে তখন বেড়ানোর আমেজ আসতে চলেছে। রসভঙ্গ হলো টিটি আসাতেই, আমার স্লিপারের টিকিট, রয়েছি থার্ড এসি'তে। স্বদেশদা কী যে বলল কি জানি, টিটি সাহেব মাথা নাড়াতে নাড়াতে চলে গেলেন। দাদা একটুখানি ভাব নেওয়ার আগেই, কস্তুরাদির টিপ্পনী, এরকম ম্যানেজারি সংসারেও তো একটু আধটু করলে পারো!!
২
গৌহাটি ঢোকার আগে থেকেই মোবাইল অকেজো। খোঁজখবর করে জানা গেল উত্তর-পূর্বে প্রিপেড সিম অচল। অবশ্য গাড়ি দাঁড়িয়েই ছিল। প্রথমে যাব কাজিরাঙ্গা। অনেকটা রাস্তা। খাওয়া-দাওয়ার পাট চুকিয়ে যাত্রা হল শুরু। নানা জায়গায় ঘোরার সুবাদে বুঝেছি, যে কোনও স্থানে যাওয়ার আগে কিছু পড়াশোনা করা জরুরি, তাতে করে নতুন অভিজ্ঞতা আত্মস্থ করতে সুবিধে হয়। এবার যেটা একেবারেই হয়নি, তাই তাৎক্ষণিক বোঝাপড়ার ওপরই মনোযোগী হলাম। অবশ্য কস্তুরাদি ভূগোলের দিদিমণি, কিছু ব্যাখা অনায়াসে পাওয়া যাবে। সৌর ও টিনাকে দেখলাম তাদের বাবার সঙ্গে হিন্দি সিনেমায় হাস্যরসের ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করছে, তার কেন্দ্রে রয়েছে রোহিত শেঠি পরিচালিত 'গোলমাল'। রেবাদি বলল - জাহির চুপ কেন? আমি আসলে স্বদেশদা ও কস্তুরাদির হনিমুন ট্রিপের কথা ভাবছিলাম, তখন তো ছেলে-মেয়ে ছিল না, কেমন ছিল তাদের সেই মধুযাপন। সে কথা বলতেই রসের দিক ভিন্ন হয়ে গেল। স্বদেশদা বলতে চাইল, সে আর বোলো না ভাই…..কস্তুরা শিকদারের যথারীতি ধমক - তুমি থামো তো!!
গৌহাটি টু গৌহাটি গাড়ি করে নেওয়ার সিদ্ধান্তটি দুর্দান্ত। ঝামেলা এবং সময় দুটোই বাঁচবে দারুণ ভাবে। রাস্তা মসৃণ এবং আরও চওড়া ও মসৃণ করার কাজও চলছে। ছবির মতো নগাঁও পেরোলাম, খুব ভালো লাগলো। নেমে পড়ার ইচ্ছেও জাগল। প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে, এখানকার বাড়ির ছাদ অধিকাংশই করগেটের চাল, ঢাল বজায় রাখার জন্যই এব্যবস্থা। আর একটা ব্যাপারও নজরে আসছে। আমাদের এলাকার মুন্না, আ-কার উচ্চারণ করতে পারে না। রাখালকে বলে রেখাল, আমিরকে বলে এমির, এরকম আর কী। তাকে নিয়ে হাসাহাসিও করি খুব। এখানে দেখছি এক্সিস বেঙ্ক, ষ্টেট বেঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ইত্যাদি ইত্যাদি। বুঝলাম পরিবেশের প্রকারভেদে ঠিক-ভুল বলে কিছু হয়না আসলে।
সন্ধ্যা এবং জঙ্গল একসঙ্গে শুরু হল। চালক সাবধান করলেন, বন্যপ্রাণী চোখে পড়লে চেঁচাবেন না একদম। চেঁচাতে হল না, আমাদের অভ্যর্থনায় কোনও বনবাসী একবারও এল না। তবে অন্ধকারে ভয়ে ভয়ে ঘন জঙ্গলের মধ্য দিয়ে ছুটে চলাটাও দারুণ উপভোগ্য। মেন রাস্তার পাশে আমাদের ঠিকানাটিকে হোটেল না বলে আস্তানা বলা যায় দিব্যি। বাঁশের খুপরিকাটা দেওয়াল, খড় বা ঘাসের ছাউনি। বিছানাটাও মানানসই এবং পরিবেশটাও মনোরম। বাবুদের কেমন লাগবে জানি না, তবে আমার মতো ছাপোষার কোন সমস্যা নেই। পরের দিন সকালে হাতির পিঠে সওয়ার হয়ে গণ্ডার দেখার হাতছানি। সেই মারি তো গণ্ডার, লুটি তো ভাণ্ডার! এই রে, স্বপ্নে আবার হানা দেবে কিনা কে জানে!!
বেশ কিছুটা পথ জিপ গাড়ি করে, তারপর হাতির পিঠে। রেবাদিকে ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে হাতি ও গণ্ডারের নানান সম্ভব অসম্ভব গল্প শোনালাম। হাতি লম্বা লম্বা ঘাসের ভেতর দিয়ে চলতে থাকল। অনেকগুলো একশৃঙ্গ গণ্ডারের দেখাও মিলল। মনে হয় যেন হাত বাড়ালেই ছোঁয়া যাবে। মারাত্মক রকমের রোমাঞ্চ যে হল তা নয়, বরং পুরো ব্যাপারটাই কেমন সাজানো গোছানো বলেই মনে হল। একরকম নির্ভয়েই বন্যতাহীন বন্যপ্রাণী দর্শন।
কাজিরাঙ্গা থেকে শিলং। আবার চেনা দৃশ্যে ফেরা। গাছ, লতাপাতা ও নির্জনতা নিয়ে পথচলা। ইন্ডিয়ান অয়েল, এইচ পি, ভারত পেট্রলিয়ামের পেট্রলপাম্প দেখা অভ্যস্ত চোখে দেখলাম নুমলিগড় পেট্রলপাম্প আর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই মনে হল, ইস্ আমি বাড়ির বাইরে।
৩
শিলং পৌঁছতে রাত্রি হয়ে গেল এবং বেঁধে গেল দক্ষযজ্ঞ, হোটেল নিয়ে। অতি জঘন্য হোটেল। খাটে পায়ার বদলে ইটের ঠেকা, বাথরুম কমন এবং সেটা অন্তত তিন কিমি দূরে, এ মাপজোকটা কস্তুরাদি করেছিল, ঠিক কোন পদ্ধতিতে তা অবশ্য আমি জানি না। আমার অবস্থা তখন জলে কুমির ডাঙায় বাঘ। একদিকে কস্তুরা-স্বদেশের ফাইটিং অন্যদিকে হোটেলের মাতালদের হাত হতে পরিত্রাণের চিন্তা। ভোররাত্রে কাউকে কিছু না বলেই বেরোলাম অমৃতলোকের সন্ধানে। ফিরলাম যখন, তখনও কেউ ওঠেনি। ভালোই হল, প্রত্যেককে ওই অবস্থায় সহজে নিয়ে আসা গেল নতুন হোটেলে। সেখানেই সকালের প্রথম টয়লেট এবং নিশ্চিন্তের চা।
দাদা-দিদি'র মিউচুয়াল আন্ডারষ্ট্যান্ডিং হয় গেছে অনেকক্ষণ। ভাগ্নে ভাগ্নিও স্বাভাবিক। এবার শিলং পিক যাওয়া যেতেই পারে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৯৬৫ মিটার উঁচু এই পিক থেকে সারা শিলং একলহমায় দেখা যায়, অদ্ভূত সে অভিজ্ঞতা। সেনাবাহিনীর একটি সদাজাগ্রত বেস ষ্টেশনও আছে ওখানে। অনুরোধ উপরোধ করে সেটাও নিলাম দেখে। যাওয়া হলো গলফ কোর্স। পাশেই একটি সুন্দর বাড়ি, হরেক রকম ফুল দিয়ে সজ্জিত। বাড়িটি মনে গেঁথে গেল। তারপর লেডি হাইদারি পার্ক, তারপর ওয়ার্ডস্ লেক এবং সবশেষে বাটারফ্লাই গার্ডেন দেখে ডেরায়। সন্ধেটা বাজার এলাকায় ইতস্ততঃ ঘোরাঘুরি, টুকিটাকি কেনাকাটা। শুনেছি মেঘালয় ও মিজোরামে মাতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা। সেই জীবনপ্রবাহটা দেখার আগ্রহও রয়েছে।
দ্বিতীয় দিন এলিফ্যান্ট ফলস্, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশদের পক্ষে যুদ্ধ করা খাসি সৈনিকদের স্মৃতিতে তৈরী মৎফার্ণ। চেরাপুঞ্জির সাত বোনের জলছবি বা সেভেন সিস্টারস্ ফলস্ পেরিয়ে একটা স্থান থেকে বাংলাদেশের সিলেট দেখা যায়। বাঙালির মন বাংলাদেশের জন্য সততই আকুলি বিকুলি করে। আমিও বাদ নই, বাংলা ভাষায় একটা পুরো দেশ চলছে এটাই তো মাঝেসাঝে আমার বিশ্বাস হতেই চায় না। একচটক মনে হল একবার পায়ে হেঁটে এখান থেকে বাংলাদেশ চলে গেলেও বেশ হয়।
কিছু নাম শুনলেই দেখবেন মনটা কেমন কেমন করে, কেমন জানি উদাস হয়ে যায়। 'মৌসিনরাম' এমনই একটি শব্দ। পথ হারানোর সেরা দিন আজ। যাচ্ছি মৌসিনরাম, পৃথিবীর সবচেয়ে বর্ষণমুখর স্থান, যাকে আমরা চিনি সেই ক্লাস সিক্স থেকে। নির্জন, সবুজ, গিরিখাত আর হারিয়ে যাওয়ার হাতছানি। প্রকৃতির উদারতার কাছে আমরা যে কত ক্ষুদ্র, কত তুচ্ছ তা এমন দিনেই মালুম হয়। ঢেউ খেলানো পাহাড়শ্রেণী, দিগন্তবিস্তৃত সবুজ, অবারিত আকাশনীল যেন তার কোল পেতে আমাদেরই আবাহন করতে চায়, সেখানে মাঝেসাঝেই থামছি, নামছি, দেখছি। দেখছি কোনও মেঘালয়ী মা তার সন্তানকে সামলে ক্ষেতকাজে ব্যস্ত। কেউ বা একপাল ভেড়া নিয়ে চলেছে, চোখে চোখ পরলেই মুখময় সরলহাসি। বারণ করেনি কেউ, তবু সকলেই চুপ। পাখি কি কোন কথা বলে? মেঘের আলয়ে এসে আমরাও বুঝি পাখি হয়ে গেছি।
মৌসিনরাম মেঘাচ্ছন্ন। বৃষ্টি বুঝি নামল ঝেঁপে। কুয়াশার মতোই আঁধার। গাড়িতে উঠতে যাচ্ছি, স্থানীয় একজন বললেন মিনিট দশেক সময় দিন, সব পরিস্কার হয়ে যাবে। হ্যাঁ, হলও সেই ম্যাজিক। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঝকঝকে নীলাকাশ। পুরো পাহাড়শ্রেণীই চোখের সামনে যেখানে ধাক্কা খেয়ে মৌসুমী বায়ু অঝোর ঝারায় সমতলে পড়ে ঝরে। কখনও ভাবিনি একই যাত্রায় কৈশোরের দুটি প্রেম কাজিরাঙ্গা আর মৌসিনরাম দর্শন হবে। স্বদেশদাকে ধন্যবাদ। রামকৃষ্ণ মিশন দেখে আজই গৌহাটি ফিরব। প্রথম রামকৃষ্ণ মিশন আবার আমার বাড়ির পাশে সারগাছিতে অবস্থিত। এ প্রসঙ্গে আলোচনা শুরু হলে আমি জোরের সঙ্গেই বললাম, একমাত্র ব্যক্তিত্ব বিবেকানন্দ, যাঁর চিন্তাভাবনায় একটি সম্পূর্ণ দেশ গড়ে উঠতে পারে, এখনও। উপস্থিত সবাই একবাক্যে মেনে নিল সে কথা।
৪
ব্রহ্মপুত্রের বিশালতা দেখে রাজমহলের গঙ্গার কথা মনে পড়ে। কী বিশাল, কী বিরাট! নৌকা চেপে নদীদ্বীপে অবস্থিত উমানন্দ মন্দিরটি দর্শনে গিয়ে সত্যি কথা বলতে কী ওই বিশালতায় একটু ভয় ভয়ও করছিল। তবে সরাইঘাট ব্রিজ পেরিয়ে দোলগোবিন্দ মন্দির ঘুরে আসা যায় দিব্যি। শ্রীমন্ত্র শংকরদেব কলাক্ষেত্র চত্বরে হঠাৎই বিহুসহ অন্যান্য আদিবাসী নৃত্য দেখার সুযোগ হয়ে গেল। সম্ভবত বিহু উৎসবের প্রস্তুতির অঙ্গ। গৌহাটির ব্যবসা ক্ষেত্রে বাঙালিদের দারুণ রমরমা। বিহু, মেখলার আসাম, চা-বাগানের আসাম অশান্ত হওয়ার খবরে তাই বিচলিত হই। কামাখ্যা মন্দিরে সকলে পুজো দিতে গেল, আমি বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে গাড়িতে বসে রইলাম। মনে মনে একটা হিন্দুনাম ভেবে নিয়ে মাতৃদর্শনে বেরোলাম একা-একাই। আসলে নিজের কারণে বাকিদের কোন বিশ্রী পরিস্থিতিতে ফেলতে চাইনি। দর্শন শেষে মন্দিরের পিছনে পাহাড়ের ওপর থেকে ব্রহ্মপুত্রের সঙ্গে আরও একবার দেখা হল। নীচে নেমে জানালাম মাতৃদর্শনের কথা, রেবাদি বলল - বেশ করেছ, সন্তানের আবার হিন্দু মুসলিম কি?!
~ কাজিরাঙ্গার আরও ছবি ~ শিলং-চেরাপুঞ্জির আরও ছবি ~
জাহির রায়হান কলেজে পড়ান এবং সর্বদা উল্টোপথের পথিক I যে কাজে লোকের অনীহা সেই কাজেই তাঁর তুমুল উৎসাহ I খাওয়াদাওয়া, বেড়ানো আর আমোদপ্রমোদেই জীবনকে প্রত্যক্ষভাবে ভোগ করা যায় বলে বিশ্বাস করেন আর এই বিশ্বাস নিয়েই দিব্যি বেঁচে আছেন।