সোনায় মোড়া দেশ
শরণ্যা ব্যানার্জী
রাজস্থানের তথ্য ~ রাজস্থানের আরও ছবি
জয়সলমীর না গেলে বুঝতামই না সোনার কেল্লার রহস্য। রাতের অন্ধকারে প্রথম দর্শন। নীচ থেকে আলোকিত কেল্লাকে ধরাছোঁয়ার বাইরের এক স্বপ্নপুরী মনে হচ্ছিল। পরদিন সূর্যের সোনা রং মেখে তার ঝলমলে অন্য রূপ।
শুক্রবার রাতে প্রায় হঠাৎ-ই পুরনো দিল্লি রেল স্টেশন থেকে মান্দোর এক্সপ্রেসে চেপে বসেছিলাম আমি, মা, বাবা। ট্রেন ছাড়ল রাত সোয়া নটায়। পরদিন সকাল সাতটা পঞ্চাশে যোধপুর। রিফ্রেশিং রুমে ফ্রেশ হয়ে প্ল্যাটফর্মেই ব্রেকফাস্ট সেরে নিলাম। আমাদের তিনজনের পিঠে তিনটে ব্যাগ; সুতরাং হোটেলের চক্করে না গিয়ে একটা অটো পাকড়ালাম। রফা হল আটশো টাকায় সারাদিন যোধপুর ভ্রমণ। শুরু হল উমেদ ভবন দিয়ে, চড়াই অনেকটা-অটো ড্রাইভার ছবির মত প্রাসাদের গেটে নামাল। একশো টাকা দিয়ে টিকিট কেটে ভেতরে ঢুকে জানলাম প্রাসাদের বেশির ভাগই হোটেল হিসেবে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। বাকী অংশটুকু আর মিউজিয়াম ঘন্টাখানেকের মধ্যে দেখা হয়ে গেল। এবার আসল গন্তব্য – মেহেরানগড়। আমাদের দেশের বিশাল এবং গুরুত্বপূর্ণ কেল্লাদের মধ্যে অন্যতম।
দূর থেকে পাহাড়ের মত 'ম্যাজেস্টিক মেহেরানগড়' কে দেখতে পেলাম, নীচে ছড়িয়ে রয়েছে 'নীল নগরী' যোধপুরের নীলরঙা ঘরবাড়ি। অটোচালক মনোহর সিং জানালেন গরমের হাত থেকে রেহাই পেতে এ ব্যবস্থা। মায়ের সঙ্গে বেশ ভাব হয়ে গেছে মনোহর সিং-এর। বলে দিলেন কেল্লা চারশো দশ ফিট উঁচু; চড়াই উঠতে অসুবিধে হলে লিফট এর ব্যবস্থা আছে। এখানেও সেই একশো টাকার টিকিট; তবে ছাত্রছাত্রীদের জন্য ছাড় আছে। পাঠভবনের আই কার্ড সঙ্গে থাকায় ছাড়গুলো বারবার পেতে লাগলাম। ছাড় পেলাম অডিও গাইডেও। কেল্লার ভেতরের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টের আদ্যোপান্ত ইতিহাস কানেকানে বলে দেয় এই যন্ত্র। এমনিতে দেড়শো টাকা। আমার জন্য একশো। এই যন্ত্র মারফৎ জেনেছিলাম রাজস্থানের রানিরা যুদ্ধজয়ী রাজাকে সাদরে বরণ করে 'পাধারো মারো দেশ' বলে, কিন্তু যুদ্ধে হেরে গেলে সে রাজার স্থান হয় না কেল্লায়। তাকে আত্মরক্ষার্থে পালিয়ে বেড়াতে হয় বনে জঙ্গলে।
মেহেরানগড় কেল্লায় ঢোকার মুখে বাঁদিকের একটা ফলকে অনেকগুলো ছোট ছোট হাতের ছাপ আছে। শুনলাম সতী হতে যাবার সময় এখানে রানিদের হাতের ছাপ দিয়ে যেতে হত। অজান্তেই হাত চলে গেল দেওয়ালে। প্রাণপণে চেষ্টা করলাম অনুভব করতে এই সব হাত যাদের ছিল তাদের যন্ত্রণা। শেষমেশ চশমা খুলে চোখ মুছতে হল বারবার।
কেল্লার দর্শনীয় স্থানগুলো বিশদে লিখব না কারণ ইন্টারনেটে অনেক বেশি ভালো বর্ণনা দেওয়া আছে ছবিসমেত। শুধু বলব এই কেল্লা খুঁটিয়ে দেখার জায়গা। এক কথায় অপূর্ব! এখনও যা আছে তাতে রাজস্থানের রাজসিক জৌলুস আর আড়ম্বরের আন্দাজ করতে অসুবিধে হয় না। দৌলতাবাদ আর গোলকোন্ডা কেল্লারা শুধু ইমারৎগুলো ধরে রেখেছে। আগ্রা ফোর্ট দেখেও আড়ম্বরের পুরোপুরি আন্দাজ হয় না। এখানে সবকিছু এমনভাবে রাখা আছে যে ক্ষণিকের ভাবনায় নিজেকে যোধাবাঈ বা মান সিং গোছের কিছু মনে করতে কষ্ট হয় না। কী প্রচন্ড বিলাস, রঙ-এর হুল্লোড় আর সদম্ভ অস্তিত্বের প্রকাশ এই কেল্লায়। বিশেষ করে মহারাজ তখ্ত সিং রাঠোরের কথা না বললে নয়। ইনি ছিলেন আদ্যন্ত ভোগী এবং নারীসঙ্গলোভী রাজা। শোনা যায় তার নাকি ষোলোজন রানি এবং চৌত্রিশজন উপরানি ছিল। মজার ব্যাপার, রানির পুত্র হলে তবেই রাজা হওয়ার অধিকার ; নচেৎ রাওরাজা উপাধিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে।
মেহেরানগড় থেকে বেরিয়ে আমরা গেলাম যথাক্রমে যশবন্ত থাডা আর মান্দোর গার্ডেনে। প্রথমটা মহারাজা যশবন্ত সিং-এর সমাধিস্থল এবং যোধপুরের তাজমহল বলে পরিচিত। দ্বিতীয়টা নাকি রাবণের শ্বশুরবাড়ি; অর্থাৎ মন্দোদরীর বাপের বাড়ি। জায়গাটা খুব সুন্দর ; বিগত দিনের রাজা রানিদের সমাধি সৌধ গুলো অপূর্ব।
এরপর জিপসি রেস্টুর্যান্ট এ পাক্কা রাজস্থানী থালি খেয়ে মনোহর সিং-এর ঠিক করে দেওয়া হোটেলে রাত যাপন।
অবশ্য ইচ্ছে করলে সেদিনই রাতের ট্রেনে জয়সলমীর বেরিয়ে যাওয়া যায়। তবে ধকল বেশি হবে মনে করলে পরদিন বাসেও যাওয়া যেতে পারে। পরদিন সকালে যোধপুরে মায়ের কিছু কাজ থাকায় আমরা দুপুর একটায় বাসে চাপলাম জয়সলমীরের উদ্দেশ্যে। মজার ব্যাপার,যোধপুর-জয়সলমীরে বাসে মেয়েদের ভাড়া ছেলেদের চাইতে অনেক কম। সরকারি নির্দেশ সম্ভবত। আমাদের তিনজনের টিকিট ৯০০ টাকার মধ্যে হয়ে গেল। এম আর ট্রাভেলসের বাস - এসি এবং লাক্সারি। নন এসি আরও সস্তা, কিন্তু নভেম্বর মাত্র দুদিন দূরে অথচ বাতাসে গরম হলকা - মরুভূমি থেকে বয়ে নিয়ে আসছে বোধ হয়।
বাস চলল। রাস্তা এমন যে ছবি আঁকতে আঁকতে যাওয়া যায়। দেশে প্রচুর বিদেশি মুদ্রা আনে যোধপুর, জয়সলমীরসহ গোটা রাজস্থান। আমাদের বাসেও প্রচুর বিদেশি - অত্যন্ত বিনয়ী তারা। তবে নিজেদের নিয়ে থাকতে ভালবাসে। আমার সীটের বাঁদিকে ইংল্যান্ড থেকে আসা বছর কুড়ির একটি ছেলে একা উঠেছিল বাসে - পাশের সিটে ইজরায়েলি মাঝবয়েসী একজনকে পেয়ে দারুণ উচ্ছসিত। দেচু, পোখরান এসব পেরিয়ে সাড়ে সাতটা নাগাদ বাস ঢুকল জয়সলমীর। আমাদের হোটেল বুক করা নেই। শরণাপন্ন হলাম কন্ডাক্টর হুকুম সিং রাঠোর-এর। বাস থামলে আমাদের একটা সাদা ইন্ডিগোতে চাপাল হুকুম সিং। বলল, কয়েকটা হোটেল দেখাব, যেটা পছন্দ হয়। প্রথম দেখাতেই পছন্দ হয়ে গেল হোটেল অশোকা, চার্জ আশাতীতভাবে সস্তা। সেদিন রাতে আবার খেলাম রাজস্থানী থালি - আর মায়ের বিশেষ প্রিয় ডাল-বাটি-চুরমা। সেই ইন্ডিগোই আমাদের হোটেল সুস্বাগতমে খাওয়াতে নিয়ে গেল। লোকজন এত ভালো যে মনে হচ্ছিল আমরা যেন বহুদিন বাদে নিজেদের ফেলে যাওয়া জায়গায় ফিরে এসেছি। বিশেষ করে বছর কুড়ির মহব্বত খানের আপ্যায়নে আমরা আপ্লুত!
হোটেলে ফিরে পরদিনের ট্যুর প্যাকেজ ঠিক করা হল। চব্বিশ ঘণ্টার প্যাকেজ। মাথাপিছু আঠারশো টাকার বিনিময়ে আমরা যেন চব্বিশ ঘণ্টার স্বপ্ন কিনে নিলাম। সে স্বপ্নের সওদাগর রাজু সিং রাঠোর। হ্যাঁ, এই নামই বটে তার যাকে বলা যায় টল, ডার্ক এন্ড হ্যান্ডসাম; যার দুকানের দুলে হীরের দ্যুতি। সে পরদিন সকাল নটায় হাজির আবার সেই দুধসাদা ইন্ডিগো নিয়ে। গাঢ়িসার লেক দিয়ে শুরু করে সে আমাদের দেখাল জয়সলমীরে গভর্নমেন্ট মিউজিয়াম এবং নাথমলজী কি হাভেলি, সালিম সিং কা হাভেলি, পাট্টো কা হাভেলি - চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না হাভেলিগুলোর সৌন্দর্য। জয়সলমীর যে একসময় গুরুত্বপূর্ণ বানিজ্যকেন্দ্র ছিল, এই হাভেলিগুলো তার প্রমাণ। বিকেল চারটেয় রাজু সিং আমাদের নিয়ে চলল ডেজার্ট সাফারিতে। বলে দিল পরবর্তী গন্তব্যের নাম - সাম স্যান্ড ডিউন।
গাড়ি জয়সলমীর ছাড়তেই দুপাশে সোনার কেল্লায় দেখা অবিকল দৃশ্য ঝাঁপিয়ে পড়ল। আশ্চর্য, সিনেমায় যেমন দেখেছি ঠিক তাই। এতটুকু পরিবর্তন হয়নি এতগুলো বছরে। তবে রাজু সিং যখন দূর থেকে বড়াবাগ দেখাল এক নিমেষে মোহিত হয়ে গেলাম। পশ্চিমে ঢলে পড়া সূর্যের আলোয় অসংখ্য সোনালি ছত্রী (জয়সলমীর রাজপরিবারের সমাধিস্থল) - ছোটো গম্বুজাকৃতি কাঠামোগুলোকে অপূর্ব দেখাচ্ছিল।
এদিকে প্রথম সমুদ্র দেখার মতই প্রথম মরুভূমি দেখার উত্তেজনা ভেতরে। থর মরুভূমি, দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান ডেজার্ট - ভারত আর পাকিস্তানের প্রাকৃতিক সীমারেখা হিসেবে কাজ করছে। রাজু সিং দেখাল সেই হাইওয়ে যা পাকিস্তানের দিকে মুখ করে শুয়ে আছে।
থর মরুভূমি বহু প্রাচীন। রামায়ন মহাভারতেও এর উল্লেখ আছে। এখানকার ডেজার্ট ন্যাশানাল পার্কে নাকি ১৮০ মিলিয়ন বছরের পুরনো প্রাণী এবং গাছের ফসিল আছে। রাজু সিং-ই গাড়ি চালাতে চালাতে গল্প করছিল। গল্পের মাঝেই দেখি রাস্তার দুপাশে ডেজার্ট ক্যাম্পের সমারোহ। রাজপুতানা ডেজার্ট ক্যাম্প, ডেজার্ট স্প্রিং রিসর্ট, রয়্যাল ডেজার্ট ক্যাম্প, রাজস্থান ডেজার্ট সাফারি ক্যাম্প, চোখি ধানি ডেজার্ট ক্যাম্প এরকম সব নাম।
আমাদের গাড়িও এরকম একটা রিসর্টের সামনে থামল। নাম শিবতারা ক্যাম্প। আমাদেরই জন্য সেখানে একটা হুড খোলা জীপ অপেক্ষা করছিল। ব্যস, চললাম আমরা জীপ ডেজার্ট সাফারিতে। সে এক অভিজ্ঞতা বটে! বালিয়ারির মধ্যে দিয়ে জীপ চলেছে - নাগরদোলায় চড়া আর কী! এই চড়াই উঠছে তো ওই নামছে নীচে - বালির ঢিপি আর খাদে ভরা জায়গাটা। ইচ্ছে করেই মরুভূমির মজা দেখাবার জন্য ওরা ট্যুরিস্টদের এখানে নিয়ে আসে। সঙ্গে তারস্বরে গান চালিয়ে দেয়। আমাদের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা দেখে রাজু সিং হেসে কুটিপাটি।
ওখানে ওই বালিয়ারির মধ্যে কয়েকটি অল্প বয়সী স্থানীয় মেয়ে দাঁড়িয়ে ছিল বেশ সেজেগুজে - ঠোঁটে রঙ মেখে। জানি না কেন, ওদের দেখে মনে হচ্ছিল খুব কষ্টে থাকে ওরা। ওদের মধ্যে সবচাইতে ছোটো যে, সে আমার চাইতে অনেক ছোটো - ফিসফিস করে আমার কাছে চকোলেট চাইল। আমার মাথার হেয়ার ক্লাচটা চাইল। জানলাম ওর নাম কমলি।
জীপ আমাদের রিসর্টে ফেরত আনলে আমরা চললাম ক্যামেল সাফারিতে। উটে চেপে সত্যিকারের থর মরুভূমি দেখতে। উটদের নাম মাইকেল আর বাবলু আর চালক দুজনের নাম আলি এবং সৈফ আলি। ওরাই প্রস্তাব দিল তিনশো টাকা করে বাড়তি দিলে আমাদের "রিয়েল থর" দেখাতে নিয়ে যাবে যেখানে বালি নাকি পাউডারের মত। ওদের প্রস্তাবে রাজী না হলে ভীষণ বোকামি হয়ে যেত। ওরা আমাদের এমন এক জায়গায় নিয়ে গেল যেখানে সত্যি বালিতে পা গোড়ালির ওপর অবধি ডুবে যাচ্ছিল, চরাচরে যেন আমরা ছাড়া কেউ ছিলাম না, সূর্যাস্ত হচ্ছিল; সেই মুহূর্তটা দুর্লভ স্মৃতি হিসেবে চিরকালের জন্য আমার মনে আঁকা হয়ে গেছে। ওপাশে পশ্চিমের লাল আকাশের নীচে সওয়ারিসহ উটের সারি, এপাশে আমরা কজন চুপচাপ, শোঁ শোঁ হাওয়া ছাড়া আর কোন শব্দ নেই। এমনকি মাইকেল আর বাবলুও নিশ্চুপ।
শিবতারা ক্যাম্পে রাতের অভিজ্ঞতা এককথায় রাজসিক। প্রথমতঃ ওরকম বিলাসবহুল তাঁবুতে থাকা, দ্বিতীয়তঃ রাতের প্রমোদ অনুষ্ঠান। ক্যাম্পের চারিদিকে গোল করে তাঁবু খাটানো। মাঝখানে বিশাল জায়গা জুড়ে গোল প্ল্যাটফর্ম যার ওপর প্রচুর মোটাসোটা গদি আর তাকিয়া - মাঝখানটা খালি। সেখানেই রাজস্থানী লোকগানের তালে জমকালো কাচবসানো রাজস্থানী ঘাগড়া পড়ে দুটি মেয়ে লাগাতার নেচে গেল টানা দু ঘন্টা। কখনো মাথায় পর পর সাতখানা হাঁড়ি চাপিয়ে তো কখনো লকলকে আগুনের পাত্র নিয়ে। সবচাইতে মারাত্মক নাচ হল এইটুকুনি দুটো গেলাসের ওপর দু পা রেখে গোটা শরীর দুলিয়ে নাচ। না দেখলে বিশ্বাস করা মুশকিল।
পরদিন মরুভূমির সূর্যোদয় দেখে জলখাবার খেয়ে ফেরা জয়সলমীর। আসল জায়গা দেখা বাকি যে! সোনার কেল্লা। সোনালী বেলে পাথর (ইয়েলো স্যান্ডস্টোন), যা আমাদের দেশে একমাত্র জয়সলমীরেই পাওয়া যায়, তা দিয়ে তৈরি সোনার কেল্লা। শুধু তা নয় এখানকার ঘরবাড়ি সমস্ত তৈরি ওই পাথরে। কেল্লার ওপর থেকে গোটা জয়সলমীর দেখা যায় - সোনালী জয়সলমীর, দিনের আলোয় ঝলমল করছে। কেল্লার বাইরেটা যত সুন্দর ভেতরটা তত নয় - অন্তত আমাদের মত টুরিষ্টদের জন্য। ভেতর জুড়ে লোকের বসতবাড়ি। এমন কী আমরাও নাকি চাইলে একটা ঘর ভাড়া পেতে পারি কেল্লার ভেতর। তবে রাজস্থানী হস্তশিল্প কেনাকাটার আদর্শ জায়গা এটাই। আমরাও চটজলদি টুকটাক কিনে নিলাম কিছু। কারণ, ফেরার সময় হয়ে গেছে। রাজু সিং আমাদের যোধপুরগামী বাসে চাপিয়ে বিদায় নিল। দিয়ে দিল মোবাইল নম্বর। বিকেল পাঁচটার মধ্যে পৌঁছে গেলাম যোধপুর। দিল্লী ফেরার ট্রেন মান্দোর এক্সপ্রেস রাত আটটায়। রিটায়ারিং রুমে বসে মনে হল জয়সলমীর, সোনার কেল্লা, ডেজার্ট সাফারি - এগুলোর কথা নাহয় নেট সার্ফ করলে লোকে জেনে যাবে কিন্তু আমি যে মনে মনে কমলি, রাজু সিং রাঠোর, মহব্বত খান, মাইকেল, বাবলু আলি, সঈফ আলি এদের কথা দিয়ে এসেছি যে ওদের কথা সবাইকে জানাব। সোনায় মোড়া দেশে ওদের বেঁচে থাকার লড়াইয়ের যতটুকু আঁচ পেয়েছি, বুঝেছি ওদের জন্য জয়সলমীর মোটেও সোনায় মোড়া নয়। বিদেশিরা তো আসেই; আমাদের মত দেশি টুরিষ্টরাও ওদের বেঁচে থাকার লড়াই খানিকটা সহজ করে বৈকি। থর মরুভূমির এক মুঠো বালি সঙ্গে নিয়ে এসেছি আর কথা দিয়ে এসেছি মরুভূমিকেও যে তার সঙ্গে মোলাকাতের কথা সবাইকে জানাব। সেই কথা রাখতেই দু ঘণ্টার মধ্যে এ লেখা লিখে ফেললাম।
রাজস্থানের তথ্য ~ রাজস্থানের আরও ছবি
কলকাতার পাঠভবন স্কুলের কলাবিভাগের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী শরণ্যা ব্যানার্জীর প্রিয় বিষয় ইতিহাস ও সাহিত্য। সুযোগ পেলেই ঘুরে বেড়াতে ভালবাসেন ঐতিহাসিক জায়গায়। ভালবাসেন সে জায়গা সম্বন্ধে পাঁচজনকে জানাতেও। কবিতা, গল্প লেখা, ছবি তোলা, আঁকা সবেতেই আছেন শরণ্যা।