ক্যান সফর স্মৃতির আখ্যান
মহুল ব্রহ্ম
এ কি স্বপ্ন! না সত্যি! এমন যে হতে পারে তা ভাবিনি কখনও।
আমাদের প্রথম ছোট ছবিটি প্রদর্শনের জন্য বেছে নিয়েছেন ক্যান ফিল্মোৎসবের বিচারকরা।
আমাদের সাধারণ এক প্রয়াসকে বেছে নেবেন খোদ ক্যানের সিনেমাবোদ্ধা বিচারকমণ্ডলী! সেখানে ছবি দেখানোর সুযোগও করে দেওয়া হল - 'পরশমণি' (এলিক্জিয়া)! এই ঘটনা আমাদের মনে বিস্ময়ের ঝড় তুলেছিল। আমাদের কাছে ব্যাপারটা ছিল দারুণ উপভোগ্য, সন্দেহ নেই এতটুকুও। অতএব যাত্রা হল শুরু। হাজির হলাম ক্যান ফিল্মোৎসবের বারান্দায়।
ভিসার যোগাড় হল। ইউরোপের একাধিক দেশে যাত্রার অনুমতি পেলাম। এই ফাঁকে একটি নির্দিষ্ট দেশকে কেন্দ্র করে পাশ্চাত্যের আরও কয়েকটি দেশ ঘুরে দেখার সুযোগ হাতছাড়া করিনি। আমার পছন্দ ছিল ফ্রান্স।
আমার সহযাত্রী একাধারে আমার স্কুলের বন্ধু, সিনেমাটির সহযোগী প্রযোজকও। কলকাতা থেকে পৌঁছলাম মিলান। সময় নষ্ট না করে, দীর্ঘ যাত্রার ক্লান্তি ভুলে ট্রেন ধরে হাজির হলাম নবজাগরণের জন্মভূমি ফ্লোরেন্সে। সেখানে দুদিন কাটাব বলে আগে থেকেই পরিকল্পনা করা ছিল। কোথায় কতদিন থাকব তা কলকাতায় বসেই ঠিক করে রেখে ছিলাম। কোনও হোটেল নয়, বাসা ভাড়া করেছিলাম। আমার মতে, স্থানীয় সুবাস নিতে এর থেকে ভাল পন্থা আর হয় না কোনও। তাই তো পুরনো ফ্লোরেন্সে ভাড়া বাড়ি নেওয়ার সিদ্ধান্ত।
রাস্তাঘাট বেশ সরু। ফুটপাথ সে তুলনায় আরও সরু যেন। সে পথে একজনের পক্ষে হাঁটাচলা আরামদায়ক নয় বোধহয়। কিন্তু অর্নো নদীর ধারে গড়ে ওঠা এই শহরটির সৌন্দর্য ততক্ষণে মুগ্ধ করেছে। ইটালির তাসকানির রাজধানী ফ্লোরেন্স। ছক কষে ফেলেছি সকালের রোদ্দুর গায়ে মেখে ঘুরে দেখব গোটা তাসকানি। পা চালিয়ে পৌঁছে গেলাম মধ্য তাসকানির প্রাচীন শহর সিয়েনার কোলে। এরপরের গন্তব্য তাভারনেল্লে ভ্যাল দি পেসা, গ্রেভে ইন চিয়ান্তি। আঙুর ক্ষেতে তখন চলছিল সুরার আস্বাদ ক্ষমতা বিচারের মরশুম। চিয়ান্তি প্রদেশের নির্দিষ্ট সীমারেখা চিহ্নিত করা গেল না। তবে এই প্রদেশটি ফ্লোরেন্স, সিয়েনা পর্যন্ত বিস্তৃত। এই দুই অঞ্চল ঘিরে তা পূর্বে প্রসারিত হয়েছে ভালদার্নোর দিকে, আর পশ্চিমে ভাল দি'এলসায়। হামেশাই শোনা যায় 'ফ্লোরেন্তাইন চিয়ান্তি' এবং 'সিয়েনিজ চিয়ান্তি'। কোন অঞ্চল কার নিকটস্থ তা বোঝাতে মূলত এই শব্দবন্ধ ব্যবহার করা হয়। তবে চিয়ান্তি অঞ্চলে উৎপাদিৎ সুরা নিয়ে আলোচনার সময় এগুলি অনেক ক্ষেত্রে উল্লেখ করা হয়ে থাকে। সূর্য ঢলে পড়তে চলেছে। আর তেমন সময় এসে পড়েছি পিসার হেলানো মিনারের কাছে। দুনিয়ার কাছে এ এক আশ্চর্যের স্থাপত্য। এখানকার আরও কিছু হেলানো স্থাপত্য নজরে পড়ল। আসলে এই অঞ্চলে মাটির প্রকৃতিই এমন। ভারসাম্য থাকে না, স্থাপত্য হার মানে - এক দিকে ঝুঁকে পড়ে।
দ্বিতীয় দিন। নবজাগরণের পুরোধাদের কীর্তির মুখোমুখি। মিকেলেঞ্জেলো থেকে শুরু করে বোত্তিসেলি, রাফায়েল, লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি। গ্যালারিয়া দেল আকাদেমিয়া এবং উফ্ফিজি গ্যালারিতে। ডেভিড। মিকেলেঞ্জেলোর অমর সৃষ্টি। মার্বেলে খোদাই করা বিস্ময় যেন। যা তৈরি করা হয়েছিল মেডিসি বংশের সদস্যদের পৃষ্ঠপোষকতায়। পরতে পরতে বিস্ময় লুকিয়ে রয়েছে। কী করে একজন শিল্পী এমনটা তৈরি করতে পারেন! মার্বেল পাথরে মানবদেহের প্রতিটি শিরা, উপশিরা, মাংস পেশী নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। যা দেখে মনে হতে পারে অবিশ্বাস্য। ক্রীতদাসদের জীবন নিয়ে তিনি বেশ কিছু কাজ করেছিলেন। সেখানে গেলে দেখতে পাওয়া যাবে সেগুলিও। মিকেলেঞ্জেলো নিজের শিল্পীজীবনে মাত্র একখানি ছবি এঁকেছেন। আর সেটি এক ধনকুবেরের জন্য। তিনি ভেবেছিলেন এটা খুব সহজ কোনও কাজ এবং তাঁর পক্ষে অনুপযুক্ত। লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির 'দ্য ব্যাপ্টিজম অফ ক্রাইস্ট' অথবা 'অ্যানানসিয়েশন' দেখলে মনে হবে অন্য কোনও ভুবনে চলে এসেছি যেন।
একটা খুব দরকারি কথা বলে নেওয়া ভাল। এই সব জায়গায় যেতে হলে কলকাতা থেকে বুকিং সেরে নেওয়া বিচক্ষণতার কাজ হবে। কারণ টিকিট কাউন্টারের লম্বা লাইন। একে বেঁকে চলে যায় বহু দূর। দিনের একটা বড় সময় চলে যেতে পারে সেই লাইনে দাঁড়িয়েই।
নবজাগরণের সময়ের শিল্প নিদর্শনের মুগ্ধতা নিয়ে আর এক সুন্দর শহর মন্টো কার্লোতে কখন চলে এলাম মনে নেই। নীল সমুদ্রের মোনাকোর এই শহরটি তখন তৈরি হচ্ছিল আরেক উৎসবের জন্য। যার নাম গ্রাঁ প্রি। এক বন্ধু ফুট কাটল, গ্রেস কেলির খোঁজ করলে না! পুরনো শহর থেকে বিত্তবানদের বাজারের চটকদার বাজার। আর বিখ্যাত সব গাড়িতে ছেয়ে রয়েছে নগরী। ফেরারি, লুম্বর্গনি, রোলস রয়েস, বেন্টলি, পোর্শে থেকে শুরু করে তিলোত্তমা কলকাতায় যে সব গাড়ি হামেশাই দেখতে পাওয়া যায় – হন্ডা সিটি এবং ভারনা। আমাদের আলফা রোমিও সে তুলনায় কারও কাছে নস্যি মনে হতেই পারে। সে যাই হোক। রেস ট্র্যাকের সেই গতি দারুণ উপভোগ করলাম। সেইসঙ্গে বিয়ারের স্বাদ। স্থানীয় ব্রেসেরিয়ে দে মোনাকো গ্রাঁ প্রি। সেখানকার খুব নামীদামি বিয়ার বিশেষ। এখানকার প্রত্যেক বিয়ার ব্র্যান্ডের নিজস্ব গ্লাস রয়েছে।
চলে এলাম নাইসে। কোনও শিল্পী যেন নিজের রঙের ভান্ডার ঢেলে দিয়েছেন সমুদ্রে। মোহময় হালকা নীল। সৈকতে কেটে গেল বেশ কিছুটা সময়। এরপর নগর পরিভ্রমণ। একটি জায়গা তৈরি হয়েছে যোগ ব্যায়ামকে কেন্দ্র করে। আসলে সেটি যোগকে নিবেদন করা হয়েছে। ছোটো ছোটো অজস্র মূর্তি। যেগুলি যোগ ব্যায়ামে মগ্ন। আরও কিছু দুর্দান্ত সময় হাজির হলাম আমাদের আসল গন্তব্য ক্যানে।
নাম নিয়ে যে কথা না বললেই নয়। যে যেমন পারেন ডাকেন। আসলে উচ্চারণ হবে 'ক্যান।' ব্যস আর কিছু না। সৈকত শহর। ছবির মতো সাজানো গোছানো। এই শহরের সৌন্দর্যের সঙ্গে সঙ্গেই উচ্চারিত হয় ফিল্মোৎসবও। হালে যা নাম পাল্টেছে। আগে পরিচিত ছিল ফেস্টিভ্যাল ইন্টারন্যাশনাল দ্যু ফিল্ম। এখন সবাই জানেন ফেস্টিভ্যাল দে ক্যান নামে।
এই সিনেমা উৎসবে বাণিজ্য, শিল্প, সৃজনশীলতা এবং চাকচিক্য – সবই রয়েছে। মাথা খারাপ করে দেওয়ার মতো। পাম দি'ওর অথবা গোল্ডেন পাম পরিচিত শিল্পের সম্মান হিসেবে। বাণিজ্যসফল মানে মার্চে দ্যু ফিল্ম। আর রেড কার্পেটের পালায়েস দে ফেস্টিভ্যাল মানে চাকচিক্যের ঝলকানির ছড়াছড়ি।
গোটা শহর যেন ফিল্মোৎসবে ডুবে যায়। নিত্যদিনের আর যে কোনও ঘটনা তাঁদের কাছে কোনও গুরুত্ব পায় না। সব চলে যায় পেছনের সারিতে। হলিউডের তারকাদের আড়ম্বরপূর্ণ রেড কার্পেট, বিলাসবহুল প্রমোদ জলযানে অনুষ্ঠান বাকি সব কিছুকে ঢেকে ফেলে যেন।
এখানকার ইন্টারন্যাশনাল ভিলেজ যেন একটা ক্ষুদ্র জগৎ। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে সিনেমাপ্রেমীর আসেন। হয়ে ওঠে বিশ্ব সিনেমার মঞ্চ। আলাদা আলাদা দেশের জন্য থাকে নির্দিষ্ট প্যাভিলিয়ন। বিশ্বের সিনেমাওয়ালাদের কাছ থেকে জেনে নেওয়া যায় এই শিল্প মাধ্যমের গতিপ্রকৃতি তাদের দেশে কোন পথে বইছে।
ক্যান সিনেমা উৎসবের সময়, ১১–২২ মে বেশির ভাগ হোটেল টানা বুকিং নেয়। অন্তত কেউ যেন এক সপ্তাহের জন্য ঘর ভাড়া নেন, তেমনই চান হোটেল কর্তৃপক্ষ। দু–তিনদিনের জন্য ঘরভাড়া দিতে তাঁরা রাজি হন না সাধারণত। চাহিদা মতো দামও চড়ে। সেখানে একরাত কাটাতে ২৫০ থেকে ৩৫০ পাউন্ড পর্যন্ত গুণতে হতে পারে। আর হ্যাঁ পাঁচতারা হোটেলের কথা বলছি না কিন্তু।
এবার আসা যাক স্থানীয় সুরা নিয়ে আলোচনার কথায়। তেমনই একটা চেখে দেখেছিলাম এক পানশালায়। ব্রেসেরিয়ে দ্যু ক্যাসিনো। এই পানশালাগুলি রয়েছে রেড কার্পেটের মক্কা হিসেবে পরিচিত পালায়েস দে ফেস্টিভ্যালের ঠিক উল্টোদিকে।
ব্রেসেরিয়ে দে সেইন্ট – সিলভেস্ত্রে, ট্রয়েস মন্টস, ব্রেসিওরস দ্যুক এবং জেনলেইন। এগুলি স্থানীয় বিয়ারের ব্র্যান্ড। বিয়েরে দে গার্দে গোত্রভুক্ত! ঐতিহ্য মেনে যা উৎপাদিত হয় ফ্রান্সের নর্দ–পাস–দে–ক্যালিয়িস অঞ্চলে। এই অঞ্চলে বিয়ার তামাটে অথবা সবুজরঙা হয়। নাম থেকে বোঝা যায় সেটির উৎপাদন করতে গিয়ে কোন পথ বেছে নেওয়া হয়েছে। কী ভাবে শস্যদানা গাঁজিয়ে তা তৈরি করা হয়েছে জানা যায় নাম দিয়ে। ভূভান্ডারে বেশ কিছু সময়ের জন্য সঞ্চিত রাখা হয়। যাতে পরে কোনও সময় তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করা যায় সেটি।
আপনি ওয়াইনভক্ত হলে হাতে তুলে নিতে পারেন এক ধরণের রেড ওয়াইন পেট্রাস।
ইউরোপীয় রন্ধনশৈলীতে প্রস্তুত খাবার পানের মজা বাড়িয়ে তুলবে কয়েক গুণ। সুস্বাদু ভেড়ার মাংসের তৈরি পদ মুখে পড়লে মনে হবে দুনিয়া রসাতলে যাক গে!
শেষ পাতে মিঠা খানা। ক্যারামেল কাস্টার্ড। এই পদের এক টুকরো কিন্তু গোটা চার মানুষের পেট ভরিয়ে দিতে যথেষ্ট।
শহরের অলি গলি থেকে রাজপথ ঘুরে দেখতে নিজের পায়ের ওপর ভরসা করলে তা কাজ দেবে। কারণ গাড়ি রাখতে বিস্তর ঝক্কি পোহাতে হবে এখানে। কিন্তু তারকা হলে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
দরদাম করা আপনার পক্ষে যুক্তিযুক্ত কাজ হবে না। তা সবার পাল্লায় নাও পড়তে পারে। তাই বিলাসবহুল পণ্য কেনাকে বিদায় জানাতে হবে। স্থানীয় শিল্পীদের তৈরি চর্মদ্রব্য, ছবি, মূর্তি অথবা ভাস্কর্য কেনাকাটির পক্ষে আদর্শ বলে মনে হয়েছে।
কলকাতা থেকে বুকিংয়ের সব কাজ মিটিয়ে ফেলেছিলাম বলে অনেক সুবিধে পেয়েছি। যে ঘর পেয়েছিলাম তা উৎসবের আঙিনা থেকে মাত্র কয়েক হাত দূরে ছিল।
নীল সমুদ্রের জলরাশি মন যে কখন কেড়ে নেবে বুঝতেও পারবেন না। সৈকতে কেড়ে নেবে অনেকটা সময়।
গোটা নগরী যেন পালায়েস দে ফেস্টিভ্যালে সামিল হয়। বহু চর্চিত রেড কার্পেট, চিত্র তারকাদের এক ঝলক দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে হৃদয়। রেড কার্পেটকে দুভাগে ভাগ করা যেতে পারে। একটি হল, সাধারণের জন্য। আম আদমির। জনগণ বলতে যা বোঝায় আর কী। যাঁরা হেঁটে ঢোকেন সেখানে। আর দ্বিতীয় রকমটি হল তারকাদের। রাজপুত্র, রাজকন্যা বললে বোধ করি ভুল বলা হবে না মোটেই। পরনে চোখ ধাঁধানো রাজপোশাক। রথ থেকে থুড়ি বিলাসবহুল গাড়ি থেকে তাঁদের পা পড়ে মাটিতে। বিশ্বখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনারের তৈরি গাউন মাটি স্পর্শ করেছে। আর তাঁরা তা সযত্নে তা সামলে ধীরে ধীরে এগিয়ে চলেছেন আলো ঝলমল মঞ্চের দিকে।
তারকার দেখা পেলাম। প্রথম রাতেই। ফের বিভ্রম জাগল মনে। রূপকথা মনে হল। ছোট পর্দায় বহুদিন, বহুবার যা দেখে এসেছি। এখন তা সামনে।
এই সেই রেড কার্পেট। এখানে পা ফেলেছেন মার্সোলো মাসত্রইয়ান্নি, ফেলিনি। এ বছর জর্জ ক্লুনি। পরে যাঁর বিলাসবহুল নৌসফরে ঢুকতে ব্যর্থ হব। এলেন মরিয়ন কটিলার্ড, ঐশ্বর্য রাই।
নিজেদের সিনেমার ডালি নিয়ে দুনিয়ার নানা দেশ থেকে প্রতিনিধিরা ভিড় জমিয়েছেন। বাকিদের কাছে নিজেদের কাজের কদর কতটা তা দেখতে, বুঝতে, শুনতে। আমরা ছিলাম ভারতীয় প্যাভিলিয়নে। ভারতীয় সিনেমার জগৎ নিয়ে গরমা গরম আলোচনার জন্য সেখানে উপস্থিত ছিলেন অনুরাগ কাশ্যপ, সীমা বিশ্বাসের মতো ব্যক্তিত্ব।
অনুরাগ কাশ্যপের হাতে আমাদের সিনেমার ডিভিডি পৌঁছে যাওয়ায় আমরা বেশ খুশি হয়েছিলাম। কথা বলার সুযোগ হয়েছিল দ্য ডার্ক নাইট রিটার্নস, ইনসেপশন খ্যাত বিশিষ্ট ফরাসি চিত্র তারকা মরিয়ন কটিলার্ডের সঙ্গে। কুশল বিনিময় হল। সাক্ষাৎ–স্মৃতি সেলফি বন্দী করলাম। তিনি আমাদের সিনেমার সাফল্য কামনা করলেন। সেইসঙ্গে আমার প্রকাশিত হতে চলা বই 'ডিকোডিং লাক্স'–এর জন্যও। প্রান্তিক অঞ্চলের কথা তুলে ধরা হয়েছে আমাদের সিনেমায়। এবং এটি প্রথম প্রয়াস। দুটি বিষয়ের তারিফ করলেন তিনি। ক্যান এবং সমুদ্রের প্রতি নিজের টানের কথাও চলে এল তাঁর মুখে।
সময় খরচ করলাম অন্য দেশের প্যাভিলিয়ন ঘুরে। অন্য দেশের পরিচালকদের সঙ্গে কথা, সিনেমা নিয়ে বিস্তর চর্চা চলল। পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার কথা জানালাম। সেই ফাঁকে দেখে নিলাম বেশ কয়েকটি ছবিও।
সন্ধে নেমে এল। সমুদ্রের ধার, তারা দেখা, রেড কার্পেট। 'ডেড ম্যান' খ্যাত পরিচালক জিম জারমুশের সঙ্গে আলাপচারিতার সুযোগ পেয়েছিলাম। স্মৃতির কোটরে যা রাখা থাকবে চিরকাল।
লেখক, অভিনেতা, বিলাস ভাষ্যকার ও পুরস্কারজয়ী সংযোগকর্তা মহুল ব্রহ্ম টাটা গ্রুপের কোম্পানি 'এম জাংশন'-এর কর্পোরেট কমিউনিকেশন ও ব্র্যান্ডিং-এর মুখ্য আধিকারিক। তাঁর বই 'ডিকোডিং লাক্স' ভারতে বিলাসিতা ও প্রমোদের গাইড বুক। তাঁর অভিনীত প্রথম শর্ট ফিল্মটি প্রদর্শিত হয়েছিল ক্যান ফিল্ম ফেস্টিভালে। এমআইসিএ এবং সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের প্রাক্তনী মহুল সিনিয়ার এডিটর হিসেবে কাজ করেছেন ইকোনমিক টাইমস, সি এন বি সি, টিভি ১৮, নিউ ইয়র্ক টাইমসের ভারতীয় সংস্করণে, রয়টার্স ও এবিপি গ্রুপে। বর্তমানে অর্থনীতিতে পিএইচডি করছেন। অবসর সময়ে গলফ খেলতে ও বই পড়তে ভালোবাসেন।