স্বর্গীয় দেওরিয়াতাল
অরিন্দম পাত্র
"পৃথিবীর থেকে ভারী কে?... মাতা
আকাশের থেকে উঁচু কি?... পিতা
পবনের থেকেও তীব্র গতি কার?... মনের
সংখ্যায় তৃণের থেকে অধিক কি?... চিন্তা
সবচেয়ে বড় আশ্চর্য কি?... সবাই জানে মৃত্যু অন্তিম সত্য কিন্তু সবাই ভাবে বোধহয় তার সেই গতি হবে না।"
অনেক ছোটবেলায় বাবা মহাভারত কিনে দিয়েছিলেন। ছোটদের সংস্করণ, তবে একেবারে ছোট্ট বা সংক্ষিপ্ত ভার্সন নয়। মন দিয়ে পড়েছিলাম। অনে্ককিছুই এখন অবশ্য আর মনে নেই। কিন্তু বনপর্বে বকরূপী যক্ষ ও যুধিষ্ঠিরের এই প্রশ্নোত্তর পর্বের অধ্যায়টা বেশ মনে আছে! উল্লিখিত প্রশ্নগুলি ছাড়াও আরও অনেক প্রশ্ন যুধিষ্ঠিরকে করেন যক্ষ। যার সবক'টির সঠিক উত্তর দিয়ে বাকি পান্ডব ভ্রাতাদের প্রাণ ফিরিয়ে আনতে সমর্থ হন ধর্মপুত্র!
এই গোটা ঘটনাটা ঘটে যে জলাশয়ের পাশে, যেখান থেকে জল আনতে গিয়ে এক এক করে যক্ষের রোষানলে ভস্মীভূত হয়ে প্রাণ হারান ভীম, অর্জুন, নকুল আর সহদেব, সেই জায়গাটাই যে দেওরিয়াতাল অর্থাৎ আমার আজকের গন্তব্যস্থল সেটা বেশ কিছুদিন আগে পর্যন্তও জানা ছিল না! দেওরিয়াতাল" অর্থাৎ দেবতাদের স্নান করার পবিত্র জলাশয়! আজ সেখানেই যাব, অনভিজ্ঞের প্রথম ট্রেকিং সফরের শেষতম লক্ষ্যপূরণ করার দিন!
ভোর পাঁচটায় অ্যালার্ম বেজে উঠে ঘুম ভাঙিয়ে দিল। বেরোব আধ ঘন্টা বাদেই। ব্রাশ করে, ফ্রেশ হয়ে নিয়ে পিঠের ব্যাগ গুছিয়ে নিলাম। বাকিরা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। বাইরে ভোরের আলো ফোটেনি। কেদারনাথ শৃঙ্গ এখনও ঘুমে অচেতন। চাঁদ আকাশে জ্বলজ্বল করছে। গাড়ি চলতে শুরু করল সারি গ্রামের পথে। অল্প তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়লাম। পর পর বেশ কয়েকদিন ভোরে ওঠার ফল! ঠিক সকাল সোয়া ছটায় গাড়ি সারি গ্রামে এসে পৌঁছল।
ছোট্ট একটা গ্রাম। বেশ ভাল ঠাণ্ডাই অনুভূত হচ্ছে এখন। একটা ছোট দোকান খোলা রয়েছে যেখানে একজন চা বানাতে ব্যস্ত। বাকি গ্রাম এখনো ঘুম থেকে ওঠেনি। আশেপাশে বেশ কয়েকটা হোম স্টে আর একটু দূরে বেশ বড়সড় তিনতলা একটা হোটেল চোখে পড়ল। গাড়ি থেকে নেমে চা দোকানিকে জিজ্ঞেস করলাম যে গাইড পাওয়া যাবে কিনা দেওরিয়াতাল এর জন্য। উনি বললেন, হ্যাঁ পাবেন। একজনকে ফোন করলেন আমার সামনেই। তারপর বললেন, একটু দাঁড়ান চলে আসবে খানিক বাদেই। অপেক্ষা করতে লাগলাম গাড়িতে বসেই কারণ বাইরে বেশ ঠাণ্ডা। ভোর প্রায় সাড়ে ছটা বাজে এখন।
বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হল না। বছর বত্রিশ-তেত্রিশের এক সুবেশ, সুদর্শন যুবক এসে দাঁড়ালেন। আমি ভেবেছিলাম হয়ত গ্রাম্য কোন এক যুবা হয়ত আসবেন। ইনি রীতিমতো কেতাদুরস্ত পোশাকআশাক পরিহিত। মিলিটারি রং-এর জ্যাকেট গায়ে। আলাপ হল – আদতে হরিয়ানার বাসিন্দা, নাম সন্দীপ চাহাল। দক্ষিণামূল্য ধার্য্য হল হাজার টাকা। দরাদরির কোনো জায়গা নেই, যেহেতু আমি একাই টুরিস্ট। আর দু-তিনজন থাকলে হয়তো কমত। যাইহোক আমি সম্মত হয়ে ওনার সঙ্গেই জুটে গেলাম। ওই দোকান থেকে একটি শক্তপোক্ত লাঠিও যোগাড় হল। পাশ দিয়েই উঠে গেছে দেওরিয়াতাল এর সিঁড়ি। উঠতে শুরু করলাম দুজনে। ঘড়িতে ঠিক পৌনে সাতটা।
এই পথে ঘোড়াও যায়, সিঁড়ির প্রতি ধাপে ধাপে সেই চিহ্ন বিদ্যমান। নিজের পদযুগলের ওপর ভরসা করেই দুগ্গা দুগ্গা বলে যাত্রা শুরু করলাম। শুরুর চড়াই উঠতে প্রথম দিকে সেই তুঙ্গনাথের মতই কষ্ট বোধ হতে লাগল। অন্যদিকে সন্দীপ তরতরিয়ে উঠতে শুরু করেছেন। ওনাকে একটু আস্তে আস্তে উঠতে রিকোয়েস্ট করলাম। সেই ছোট ছোট স্টেপে লাঠি ভর করে চলতে শুরু করলাম। রাস্তা বেশ খাড়াই, আর এবড়োখেবড়ো পাথুরে প্রথম কিছুটা অংশ। তারপর হাঁটা গেলেও তুঙ্গনাথের মত চওড়া ঢালাই রাস্তা নয়! সন্দীপের সঙ্গে এ কথা সে কথা বলা শুরু করলাম। জানা গেল ওনার আসল বাড়ি চণ্ডীগড়। বাবা আর্মি ম্যান ছিলেন, এখন অবসরপ্রাপ্ত। উনি ঘর ছেড়ে এতদূর আছেন, পাহাড়কে ভালবেসে আর অবশ্যই রোজগারের তাগিদে। এখানেই ছোট ট্রাভেল বিজনেস চালান। মূলত বিভিন্ন ট্রেক অ্যারেঞ্জ করেন সারিকে বেস করে। এছাড়া একটা নিজস্ব হোম স্টে খোলারও পরিকল্পনা নিচ্ছেন খুব শিগগিরই। এই গাইডের কাজ রেগুলার করেন না, তবে লোকজন রিকোয়েস্ট করলে ফিরিয়েও দিতে পারেন না।
মোট রাস্তা আমাদের উঠতে হবে আড়াই কিলোমিটার। ছোট্ট সরু খাড়াই রাস্তা জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে চলে গেছে এঁকেবেঁকে। এক একটা বাঁক পিছনে ফেলে ওপরে উঠছি যত, তত নিচে দেখা সারি গ্রামের দৃশ্য ছোট হয়ে আসছে। জিজ্ঞেস করলাম এই জঙ্গলে হিংস্র বন্য জন্তু থাকে না? উত্তর এল হ্যাঁ স্যার, তা তো থাকেই। মূলত লেপার্ড আর বুনো ভাল্লুক। কিছুদিন আগেই একটা দল নিয়ে এসেছিলেন, রাস্তায় দূর থেকে বুনো ভাল্লুক নজরে আসায় রুট একটু পাল্টে অন্যদিক দিয়ে উঠেছিলেন। কারণ বুনো ভাল্লুক সবচেয়ে ভয়ঙ্কর!! আর একটি ভয়ঙ্কর প্রাণী হল বুনো শুয়োর। তবে আমার সৌভাগ্য এই যাত্রাপথে তেনাদের কারুরই দর্শনলাভ করতে হয়নি।
মাঝেমধ্যেই কপ্ কপ্ করে ক্ষুরের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। মালপত্র পিঠে বেঁধে ঘোড়া নামছে আর উঠছে বেশ কিছু। শুনলাম ওপরে তালের কাছাকাছি টেন্ট বা হোম স্টেগুলোর দরকারি জিনিসপত্র এমনকি গ্যাস সিলিন্ডারও ঘোড়ার পিঠে বেঁধে নিচ থেকে ওপরে নিয়ে আসা যাওয়া করা হয়।
বেশ খানিকটা ওপরে উঠে এসেছি। একটা চায়ের দোকান পড়ল। একটু বিশ্রাম নিতে বসলাম। এখানে সবাই সন্দীপের চেনা। উনি দোকান মালিকের সঙ্গে আড্ডা দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। আমি একটা স্প্রাইট কিনে একটু গলা ভিজিয়ে নিলাম। অনেকটা নিচে সারি গ্রাম দেখা যাচ্ছে। রোদ উঠে গেছে। বেশ গরম লাগছে। সোয়েটার আর জ্যাকেটগুলো ওই দোকানে রেখেই আবার ওপরে উঠতে শুরু করলাম। সন্দীপ বললেন যে চেষ্টা করতে হবে সকাল সাড়ে আট'টার মধ্যে পৌঁছে যেতে, নটা পেরিয়ে গেলে তালের চারিদিকের হিমালয়ের শৃঙ্গগুলিকে সুস্পষ্টভাবে দেখতে পাওয়া যাবেনা। মেঘে ঢেকে যেতে পারে। অতএব পা চালাতে হল যতটা সম্ভব দ্রুত। উঠতে উঠতে নানান গল্প শুনতে থাকলাম। এই রাস্তা নাকি পাণ্ডবদের বানানো সেই কতকাল আগে!! তারপর সেরকম সংস্কার হয়নি। আমি কৌতূহলী হয়ে সন্দীপকে জিজ্ঞেস করলাম যে উনি যক্ষ ও যুধিষ্ঠিরের গপ্পটা জানেন কিনা! দেখলাম যে জানেন না। আমি তখন ভাঙা ভাঙা হিন্দিতে পুরো ঘটনাটা খুলে বললাম। আরও বললাম আপনি পরে টুরিস্টদের এই গল্পটা বলতে পারেন, সবার শুনে নিশ্চয়ই ভাল লাগবে!
পথেই পড়ল শিব মন্দির, এই মন্দিরের নামও ওমকারেশ্বর মন্দির। সেই এক ধাঁচের, সেই এক গড়ন, তুঙ্গনাথ বা কেদারনাথের স্টাইলের। তবে আপাতত শুধুই ওঠা, নামার সময় এখানে পূজা দিয়ে যাব। আর বেশিদূর নেই, বেশ খানিকটা ওঠার পরে রাস্তার খাড়াই ভাবটা কমে এল। এবারে রাস্তা বেশ সমতল। আশেপাশে বেশ কিছু ছোট ছোট ঘরবাড়ি, দোকানপাট নজরে পড়তে থাকল। সন্দীপ বললেন যে, এখানে যেরকম টেন্টে থাকার ব্যবস্থা আছে সেরকমই ইদানীং বেশ কিছু হোম স্টে'ও খুলেছে। পাকা ঘরবাড়ি, টিনের চাল, ভেতরে খাট, বিছানা, লেপ, কম্বল সমেত। টেন্টে থাকতে বরাবরই অপছন্দ আমার। ইচ্ছা রইল পরে কখনো ফিরে এলে এইসব হোম স্টে'তে এক রাত থাকার!! সন্দীপকে বলাতে উনি বললেন যে সেরকম হলে ওনাকে বললে উনি বন্দোবস্ত করে দেবেন।
এরপর ডান দিকে বেঁকে গাছের ছায়ায় ছায়ায় পথ চলা শুরু করলাম। সামনেই দেওরিয়াতাল। এসে গেছি কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে! ঘড়িতে বাজে সোয়া আট'টা অর্থাৎ ঠিক দেড় ঘন্টায় পৌঁছে গেছি। বাঁদিক ঘেঁষে ছোট্ট টিকিট ঘর, দেড়শো টাকার টিকিট কাটতে হল। উত্তরাখণ্ড গভর্ণমেন্ট অল্প ক'দিন আগেই এই টিকিট সিস্টেম চালু করেছেন শুনলাম। আর তালের একদম পাশে টেন্টিং বা ক্যাম্পিং নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
টিকিট কেটে মাথা ঘুরিয়েই মাথাটা ঘুরে গেল!!! একি দেখছি?!! এ তো যেন স্বর্গে এসে পড়েছি! রীতিমতো স্বর্গীয় পরিবেশ!! বিস্তীর্ণ মখমলের মত সবুজ ঘাসে মোড়া বুগিয়াল, দূরে হিমালয়ের শ্বেতশুভ্র শৃঙ্গরাজি আর ছোট্ট সুন্দর স্বপ্নের মত টলটলে জলের একটা জলাশয়!!! এই তো সত্যিকারের দেবতাদের স্নান করার জলাশয়! সার্থকনামা "দেওরিয়াতাল"! আশেপাশে টুরিস্ট আজ সেরকম নেই। আমি, সন্দীপ আর আমাদের সঙ্গে জুটেছে এক সারমেয়! ও এখানেই থাকে। সন্দীপ খুব একচোট আদর করল তাকে। তালের দিকে এগিয়ে চললাম দুজনে। হঠাৎ বাঁ দিকে চোখ পড়তেই সন্দীপ আমায় দাঁড় করিয়ে দিল ইশারায়। ওর চোখ অনুসরণ করে দেখি একটা লাল মাথা কাঠঠোকরা পাখি অপেক্ষাকৃত সামান্য উঁচু একটা জায়গায় নিজের খেয়ালে বসে। পথে আসতে আসতে আগেই সন্দীপ বলেছিলেন যে এখানে প্রচুর পাখিও পাওয়া যায় দেখতে, উনি যতটা পারবেন পেলে দেখিয়ে দেবেন!
আমরা দাঁড়িয়ে আছি একটু নিচু ঢালু জায়গায়। এখান থেকে কাঠঠোকরা মশাই আমাদের চোখের লেভেলেই বিরাজমান। পা টিপে টিপে অল্প এগিয়ে কয়েকটা শট নিলাম। এর আগে এত কাছ থেকে আমি কখনো পাখির ছবি তুলিনি। ল্যান্ডস্কেপ ছবিই আমার মূল ভালো লাগার জায়গা, আর পাখির ছবি তোলার মত স্কিল বা প্রয়োজনীয় লেন্সও আমার নেই। তাই আজ খুব ভাল লাগল এই স্কেলি বেলিড উডপেকারকে লেন্সবন্দী করতে পেরে। অবশ্য এর একশো শতাংশ কৃতিত্ব প্রাপ্য সন্দীপেরই।
যাই হোক, এরপর এগিয়ে গেলাম আমার স্বপ্নের দেওরিয়াতাল-এর দিকে। জল মোটামুটি স্বচ্ছ, শুনলাম আশেপাশের গ্রামের অল্পকিছু বাসিন্দা এই জলই ব্যবহার করে থাকেন। তালের পাশে টেন্টিং করার জন্য জল নোংরা হচ্ছিল। তাই সরকারের তরফে আইন করে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সন্দীপ বললেন তাল-এর চারিদিকে পুরোটা প্রদক্ষিণ করাবেন। তার আগে একটু চড়াই উঠে একটা ভিউ পয়েন্টে নিয়ে চললেন। ভিউ পয়েন্ট থেকে দুধ সাদা শিখরগুলিকে প্রাণভরে দেখলাম। সবার মধ্যে ঝকমক করছে মাউন্ট চৌখাম্বা। ঠিক যেন হাত বাড়িয়ে ছোঁয়া যাবে!! পাশেই প্রায় সাত- আট ফুট উঁচু একটা ওয়াচ টাওয়ার। দুজনে মিলে দস্যি ছেলেদের মত সিঁড়ি বেয়ে উঠে পড়লাম সেই টাওয়ারে। উঁচু থেকে আরও পরিষ্কার ভাবে চারিদিক দেখতে পাওয়া যায়। তারপর নেমে এসে তাল প্রদক্ষিণ করতে শুরু করলাম। আশেপাশে প্রচুর ছোটখাটো ওষধির গাছ দেখালেন সন্দীপ যা থেকে আয়ুর্বেদিক ঔষধ তৈরি হয়। ছোট ছোট লাল বেরি ফলও দেখলাম। একটু হেঁটে দেওরিয়াতাল-এর আরেকদিকে চলে এলাম। এখান থেকে একদম সুস্পষ্টভাবে মাউন্ট চৌখাম্বার প্রতিবিম্ব জলে পড়তে দেখলাম। যে ছবি ক্যামেরাবন্দী করতে এতদূর আসা!! তবে আরও সকালে এলে বিশেষ করে শীতকালে এই দৃশ্য আরও ভাল ভাবে দেখতে পাওয়া যায়, যখন তালের জল একদম স্থির থাকে! নির্মেঘ নীল আকাশের বুক চিরে ফটফট করে কেদারনাথ এর কপ্টার উড়ে গেল দু-একটা। প্রায় সাড়ে নটা বাজে। অর্থাৎ এক ঘন্টার ওপর সময় পেরিয়ে গেছে। এরপর নামার পালা। সেই সারমেয়টির সঙ্গে আবার দেখা হয়ে গেল। ফেরার সময়েও ফের পিছু নিয়েছে ধর্মরাজের মত! এক প্যাকেট 'পার্লে জি' খাইয়ে আর বেশ আদর করে তবে নিচে নামা শুরু করলাম।
ওমকারেশ্বর মন্দিরে পুজো দিতে ভুললাম না! পূজারীজি সন্দীপের বেশ পরিচিত। মন্দির চত্বরে দুজন বাঙালি যুবকের সঙ্গেও আলাপ হল, ওনারা কেদারনাথ সেরে এসেছেন এখানে। পাশেই ভাঙ বা আফিমের গাছ দেখালেন সন্দীপ বেশ ক'টি। এখানকার মানুষ এই ভাঙ-এর চাটনি খুব ভাল বানান আর খেতেও নাকি সুস্বাদু খুব। সন্দীপ বললেন যে ওনার অ্যারেঞ্জ করা ট্রেকিং ট্রিপে যেমন মদমহেশ্বর বা অন্যান্য ট্রিপে খাদ্যতালিকায় এই ভাঙের চাটনি ইজ এ মাস্ট। সারাদিনের হাঁটার ক্লান্তি ভুলে ঝপ করে ঘুমিয়ে পড়তে খুব সাহায্যকারী।
এসব শুনে খিদে পেয়ে গেল। মনে পড়ল, আজ উখিমঠের হোম স্টে'তে বীর সিং কথা দিয়েছেন চিকেনের বন্দোবস্ত করবেন। যেটা রান্না করবেন আমার অর্ধাঙ্গিনী। শেষ পাতে অবশ্য ভাঙের চাটনি থাকছেনা!
পা চালালাম দ্রুত। নিচে নেমে সন্দীপের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ফিরে চললাম উখিমঠ। আগামীকাল এখানকার পাততাড়ি গুটিয়ে চলে যাব দেবপ্রয়াগ!
পেশায় চিকিৎসক (নাক কান ও গলা বিশেষজ্ঞ) অরিন্দম পাত্রের নেশা ছবি তোলা। এছাড়াও দেশের মধ্যে নানা জায়গায় ভ্রমণ করা তাঁর আর এক শখ।