এক যুগ আগের সতপন্থ-তালের স্মৃতি

সুমন্ত মিশ্র


~ সতপন্থ তাল-এর প্রচলিত ট্রেক রুট ম্যাপ || সতপন্থ তাল ট্রেকের আরো ছবি ~

সেটা আমার দ্বিতীয়বার বদ্রীনাথ যাওয়া - ২০১০। বদ্রী ছাড়িয়ে আরও একটু ওপরে 'সতপন্থ-তাল', সেবার ওখানেই যাওয়া। '৯৮-এ দেখা ছোট্টো বদ্রী ততদিনে জড়সড় বিরাট বিরাট হোটেল, আশ্রম আর ধর্মশালার আড়ালে, - গেরুয়া-ব্যবসা আমাকেও দাঁড় করিয়েছিল এক মনখারাপের বারান্দায়। মনে পড়ছিল কাজী নজরুলের লেখা - "ভারত জুড়িয়া শুধু সন্ন্যাসী সাধু ও গুরুর ভিড়, / তবু এ ভারত হইয়াছে কেন ক্লীব মানুষের নীড়?" হয়ত আজও দেশের কোটি কোটি মানুষের মনে এই নিরুত্তর প্রশ্নই ঘুরপাক খায়! তবু এ যে হিমালয়, ক্ষুদ্রতা নীচে রেখে ওপরে ওঠার মন্ত্র এর পথে-প্রান্তরে! তাই উজিয়ে আসা দেশোয়ালির ভিড়ে 'ভালো কিছু'র খোঁজ মিলেছিল সেবারও। সেদিনের ছবি দেখে আজও তার কত কিছুই মনে পড়ে, -খুশি খুশি মন একা একাই কথা বলে। আজ সেই কথাচালাচালির মধ্যে আপনাদেরও সঙ্গী করি।
লোকগাথা হল, 'সতপন্থ-তাল'-এর রাস্তা পান্ডবদের স্বর্গে যাওয়ার পথ, যদিও উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষই এমন দাবি করে থাকেন যে, তাঁদের কাছাকাছি উত্তুরে পথটাই হল সেই আদি পথ! এতে অবশ্য বিস্ময়েরও কিছু দেখিনা, বাস্তবিকই জায়গাগুলো দেখলে মনে হতেই পারে এইটাই বুঝি স্বর্গের পথ। অন্তত আমার তো তেমনই মনে হয়। যাক, সেবার সেই পথেই গিয়েছিলাম শুধুমাত্র ওই তালটাকে দেখে আসব বলে, কোনও স্বর্গারোহণের জন্য কিন্তু নয়! মুখে যতই বিরক্তি দেখাই না কেন, আমাদের এ' 'নরক' এর প্রতি যে কী টান তা ঐ স্বর্গের পথে গেলেই বোধগম্য হয়।

এ পথের দৈর্ঘ্য মোট ২৫ কিমি। আমরা গিয়েছিলাম প্রচলিত পথ এড়িয়ে, অর্থাৎ 'মানা'র রাস্তায় না হেঁটে মন্দিরের পেছনের রাস্তা ধরে। এতে সুবিধে এই যে রাস্তাও কিলোমিটার খানেক কম পড়ল আর অলকানন্দার ওপর জমে থাকা শক্ত বরফও পেরোতে হল না। অলকানন্দাকে ডানদিকে রেখে আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ এসে বাঁক নেয় মানার উল্টোদিকে। পাহাড়ের আড়ালে হারিয়ে যায় বদ্রী, শুরু হয় ফুসা ঘাসে ভরা পথ, 'চামতোলি-বুগিয়াল'।

বদ্রীনারায়ণের চরণ ধুতে নদীর যেখানে ঝেঁপে আত্মপ্রকাশ সেইখানটুকু সাবধানে পেরিয়ে এসেই 'লক্ষ্মীবন'। কথিত আছে এখানেই দেহ রাখেন দ্রৌপদী, পূর্ণিমা রাতে এখানেই নাকি বেড়াতে আসেন স্বয়ং লক্ষ্মী-নারায়ণও! আমরাও গলদঘর্ম হয়ে ঢুকলাম কিনা সেই ভূমে! তখন অবশ্য অত-শত ভাবার অবকাশ ছিল না, শুধুই হাঁফ ছেড়ে প্রথম দিনের তাঁবু ফেলা, প্রকৃতির শিশুদের নিশ্চিন্ত রাত্রিবাসের আয়োজন। কিন্তু 'নিশ্চিন্ত রাত্রিবাস' আর হল কই! সারারাতই চলল খেপে খেপে বৃষ্টি। বৃষ্টির জলে 'আউটার' ভিজে একশা! তাঁবুর ভিতরেও চুঁইয়ে ঢুকল জল। তাই বারেবারে নিজেদের স্যাকেরও অবস্থান বদলাতেই ঘুমের দফা রফা! সে রাতের ভোরও হল ঘোলাটে। আকাশ ফাটা ফাটা নীল, বাকিটা ছাই-কালো রঙে ছাওয়া। দুশ্চিন্তার ঝাঁপি নিয়েই সেদিনের পথ চলার প্রস্তুতি নিই, গন্তব্য চক্রতীর্থ।
সতপন্থ, অর্থাৎ সত্যের পথ, তবেই না সে পথের শেষে স্বর্গ-দ্বারের দেখা মেলে! আর সত্যের পথ, সে তো হবেই কিঞ্চিৎ কঠিন, তাই এ পথে কষ্টও কিছু আছে বটে। লক্ষ্মীবন থেকে চক্রতীর্থ ১১ কিমি পথ, ঘন্টা দেড়েক দুলকিচালে হেঁটেই পৌঁছে যাই অলকাপুরী, ডানদিকে বিস্তীর্ণ পাহাড়ের ঢালে অলকানন্দার উৎসমুখ।

সেই অলকানন্দা, একদা যার জলে হৃদি ভাসিয়েছিলেন জনৈক বাঙালি কবি! অলকাপুরী পর্বতের নীচে এগিয়ে আসা খাঁদু খড়ক্ থেকে জন্ম এই অলকানন্দার। 'খড়ক'-এর অর্থ হল হিমবাহ। খাঁদু খড়ক্ সতপন্থ শৃঙ্গের ঠিক পূর্বদিকে অবস্থিত। কিন্তু ওদিক দিয়ে শৃঙ্গ আরোহণের পথ না থাকায় সতপন্থের অভিযান হয় গঙ্গোত্রী-গোমুখ পেরিয়ে বাসুকিতালের পথ দিয়ে।

অলকাপুরী পৌঁছতেই বৃষ্টি নেমেছিল বেশ, চড়াই শুরুর মুখেই ভেজার ভয়ে সবাই যখন আড়াল খুঁজতে ব্যস্ত, তখনই ওপর থেকে নেমে আসতে দেখলাম একদল সুসজ্জিত ট্রেকারকে। পাহাড়ে অচেনা কোনো গন্তব্যে যাওয়ার পথে ফিরতি পথের পথিক দেখলেই মন উৎসুক হয়ে ওঠে খোঁজখবর নেওয়ায়। এখানেও তার ব্যতিক্রম হল না, কিছুটা গায়ে পড়েই জিজ্ঞেস করলাম, ওপরের আবহাওয়া কেমন, আরও কোনো টিম ওপরে আছে কিনা? যা বললেন তাতে মনটা একটু খারাপই হয়ে গেল! ওঁরা চক্রতীর্থে দুরাত্রি কাটিয়ে আজ বাধ্য হয়ে নীচে নেমে আসছেন, আবহাওয়া অত্যন্ত খারাপ এবং ওখানে এখনই প্রায় চার ফুট বরফ পড়ে গেছে। নেমে আসার সময় চক্রতীর্থের বেশ খানিকটা আগে আরও একটা দলকে দেখেছেন, তাঁরাও নাকি ফিরে আসার জন্য তৈরি হচ্ছেন! বেলচা এবারই প্রথম আমার সঙ্গে এসেছে, ওর মুখ দেখেই বুঝতে পারি একটু ভয়ও পেয়েছে, তাই ওঁদের বিদায় দিয়ে পরিবেশটা হালকা করতে বলি, আরে সঙ্গে তাঁবু আছে, খাবার আছে, চিন্তা কী! যেখানে গিয়ে মনে হবে আর যাওয়া যাবেনা, ফিরে আসব, সিম্পল! ততক্ষণে বৃষ্টি ধরে এসেছে, শুরু হল আমাদেরও নতুন করে চড়াইভাঙা। প্রায় ঘন্টাখানেক চড়াই চড়ে উঠে এলাম এক জল থইথই রাজ্যে - 'সহস্রধারা'।

আশপাশের পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসছে কুলুকুলু জলস্রোত, কতকটা ঝরনার মতো আবার কতকটা না। ওই জোলো রাজ্যে দূর আকাশের বুকে সেঁটে থাকা পার্বতীর সাদা মুকুট আর মাথার ওপর মেঘ-ফাটা আসমানি-নীল মিলে যে সুন্দর জলছবি তৈরি করল, তা দেখেই সবাই বসে পড়লাম ছড়িয়ে ছিটিয়ে, আমাদের জলপানের বিরতি। বিরতি দীর্ঘস্থায়ী হল না, দেখতে দেখতে চারপাশ ছেয়ে গেল সাদা মেঘে, শুরু হল সাবুদানার মত বরফবৃষ্টি। আমাদের সহযোগীরা তাড়া লাগালেন, "উঠো সাব, বহুত চলনা বাকি, জলদি জলদি ভাগো।" শুনেছি, 'ভাগ্যবানের বোঝা ভগবান বয়', পাহাড়ে আমাদের মত ভাগ্যবান পথিকদের বোঝা এঁদেরই তো বরাবর বইতে দেখেছি! তাই আজ জোর গলায় বলি, আমি হিমালয়ের পথে ভগবানের সাহচর্য পেয়েছি।

জল-রাজত্ব পেরিয়ে এসে ধানো গ্লেসিয়ারের মাথায় চড়তেই সবাই সবাইয়ের দৃষ্টির আড়ালে চলে গেল, মেঘরাজ্যে পায়ের সামনেটুকু দেখেই চলল পথ চলা। নিস্তব্ধ প্রান্তরে নিজেদের শ্বাস-প্রশ্বাসের শব্দ শুনেই এগিয়ে যাচ্ছি আমরা, বেশ কিছুক্ষণ চলে কিছু কথাবার্তার শব্দ যেন শোনা যেতে লাগল! সেই শুভ্র অন্ধরাজ্যে একে একে সবাই গিয়ে মিলিত হলাম সেই দলটারই সঙ্গে, যাঁদের কথা শুনিয়েছিলেন আগের যাত্রীরা। এঁরাও শোনালেন রোমহর্ষক বর্ণনা, কী প্রচণ্ড দুর্যোগ, কী বরফের স্তুপ! এঁরা একধাপ এগিয়ে পাঁচ ফুট বরফের কথা বলামাত্র বুঝতে অসুবিধা হল না, গোচালা থেকে হেমকুণ্ড প্রায় সব চলার পথেই যেমন একদল করে অতিরঞ্জনকারী বাঙালির দেখা পেয়েছি, এঁরাও ওই গোত্রেরই, অন্যকে মানসিক দুর্বল করাতেই যাঁদের পরিতৃপ্তি। ওঁদের সঙ্গে 'খেজুরে আলাপ' সেরে নিশ্চিন্ত মনে আবার এগিয়ে চলা। বেলা যখন প্রায় দুটো, খিদেয় পেট চুঁইচুঁই, পিঠের স্যাকটাকে ইচ্ছে করছে ছুঁড়ে খাদে ফেলে দিতে, তখনই শুরু হল পেঁজা-তুলোর মত বরফ পড়া। আমরা আশ্রয় নিলাম এক প্রকাণ্ড পার্বত্য গুহাতে, মধ্যাহ্নভোজের বিরতি। টানা প্রায় ঘন্টাখানেক চলল সেই বরফবৃষ্টি, গুহার ভেতর ঘামে ভেজা কাপড় পাল্টে, হালকা জগিং করে নিজেদের উষ্ণ রাখার প্রাণপণ চেষ্টা জারি থাকল আমাদের। বরফ পড়া থামতেই আবার নতুন করে পথ চলা। আধঘন্টা চলেই মুখোমুখি চক্রতীর্থের পথে শেষ চড়াই-এর, শরীর যেন আর চলে না! তবু পাহাড়ে আসা মানেই যে উচ্চতাকে ডিঙ্গিয়ে চলা! এমনই উঠতে উঠতে ওপরে, অনেক ওপরে একটা মানব শরীরকে উচ্ছ্ল হরিণের মত নিচে নেমে আসতে দেখলাম, কাছে আসতে দেখি, ঝাড়া হাত-পা, পেরিয়ে যাবার সময় একটু 'হাই-হ্যালো' পর্ব যা সারা হল! বিচ্ছিরি আবহাওয়াকে সঙ্গী করে টানা প্রায় আট ঘন্টা পথ চলছি, বিদেশিনীর সঙ্গে দু-দন্ড আলাপচারিতার ইচ্ছেও তখন আর অবশিষ্ট নেই। চক্রতীর্থের সবুজে পা দিয়েই প্রথম চোখে পড়েছিল ওঁদের তাঁবু।

কিন্তু তখন যে প্রকৃতি প্রলয়ঙ্কর! বরফঝড় সঙ্গী করে বড় একটা পাথরের আড়ালে 'টেন্ট পিচ্' করতেই আমাদের লেগে গেল ঝাড়া চল্লিশ মিনিট। প্রকৃতি যখন শান্ত হল, দু'চোখ ভরে দেখলাম তাকে। আনন্দযজ্ঞের নেমন্তন্ন-কার্ড হাতে না পেলে যে এই দৃশ্য দুর্লভই থেকে যায় অনুভব করলাম আবার। দু'দিন, দু'রাত্রি অপেক্ষার পরও যাঁরা এ'দৃশ্য না দেখেই ফিরে গেছেন, পথেই যে মিলিত হয়েছি তাঁদের সঙ্গেও। বিভূতিভূষণের ভাষায় বললে বলা যায় -"দুর্বল-চিত্ত মানুষের পক্ষে সে রূপ না দেখাই ভাল, সর্বনাশী রূপ সে, সকলের পক্ষে তার টাল সামলানো বড় কঠিন"। আমি ভাবছিলাম, সতপন্থের পথেও যাঁদের সর্বাঙ্গে লেপ্টে থাকে ঝুড়ি ঝুড়ি মিথ্যের বোঝা, তাঁরা হয়ত স্বাভাবিক নিয়মেই এ' দৃশ্য দেখা থেকে বঞ্চিত থেকে যান!

চক্রতীর্থ আসলে দেবতার পারমাণবিক অস্ত্রাগার। কেন বললাম এ'কথা? কথিত আছে, নারায়ণ তাঁর অস্ত্রাগারের সেরা অস্ত্র, অর্থাৎ সুদর্শন চক্র এখানেই লুকিয়ে রাখতেন, তাই এঁর নাম চক্রতীর্থ। আমার আবার মনে হল চক্রাকারে এখান থেকে বহু তীর্থ দর্শন হয়, তাই এর নাম হয়তো চক্রতীর্থ! পার্বতী, বালাকুন, চৌখাম্বা, কুবের হিমালয়ের এই রথী-মহারথীরা ঘিরে রেখেছে এঁকে।

আমরা যাঁরা নেহাতই পর্যটক, তাদের কাছে এই শিখরগুলোই তো এক একটা তীর্থ! অশান্ত প্রকৃতির আড়ালে লুকিয়ে থাকা বিস্ময় চাক্ষুষে যখন সবাই আত্মহারা তখনই আরও চমৎকৃত হওয়ার পালা, নেমন্তন্ন এল ওই বিদেশি দলের সঙ্গে কফি খাওয়ার। ওঁরা, অর্থাৎ ঐ বিদেশিনী ও তাঁর স্বামী, এসেছিলেন পর্তুগাল থেকে, সদ্য বিবাহিত এবং বিয়ের এক সপ্তাহের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, মধুচন্দ্রিমাটা সারবেন ভারতবর্ষের পার্বতী শৃঙ্গ জয় করে! সেদিন আমার তাঁবুর জানলায় পার্বতীর দিকে চোখ রেখে শুধু ভেবেছি, এভাবেও ভাবা যায়! নতুন করে ধরা দিয়েছে ভালোবাসার আরেক রূপ, দেখেছি ভালোবাসায় জন্ম নেওয়া নতুন উচ্চতা ছুঁয়ে দেখার স্বপ্ন ও আত্মবিশ্বাস! হিমালয়ের আপন দেশের এক নাগরিক শ্রদ্ধায় কুর্নিশ জানিয়েছে ঐ নবদম্পতিকে। অনেক, অনেক বছর পর আই.এম.এফ.-এর এক জার্নালে পড়েছিলাম ওঁদের সফল অভিযানের কথা, আনন্দে উদ্বেল হয়েছিল মন।
ইচ্ছে ছিল সতপন্থ তালে রাত্রিবাসের, কিন্তু ওঁদের লিয়াজঁ অফিসার জানালেন, আবহাওয়া আগামী তিনদিন আরও খারাপ হতে পারে, তাই তাঁবু এখানে রেখে ঘুরে আসাই ভালো। সেইমতই পরদিন সকালে হাঁটা দিয়েছিলাম দেবতার বৈঠকখানা ছেড়ে অন্তঃপুরের দিকে। চক্রতীর্থের পাঁচিল টপকে ওদিকে নামতেই শুরু হয়েছিল বোল্ডার জোন, সে তো পথ নয়, হিম মিশ্রিত শিলাসমুদ্র! পথ চলতেই দেখেছি বালাকুনের গায়ে হিমপ্রপাতের রোমহর্ষক রূপ, শুনেছি হাড় হিমকরা তার গর্জন! ঐ বিস্তীর্ণ শিলাসমুদ্রে আছড়ে-পিছড়ে শরীর যখন সতপন্থ তাল-এ পৌঁছল, সব ভুলে মনে তখন শুধুই লক্ষ্যপূরণের স্বস্তি।

এখানের প্রচলিত লোকগাথা, এই ত্রিকোণাকৃতি সরোবরের তিন কোণে প্রতি একাদশী তিথিতে স্নান সারেন স্বয়ং ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর। ভাবতে ভালো লাগে মানুষ তার সুখ-দুঃখে কী অসীম মমতায় বেঁধে রেখেছে তার ইষ্টদেবতাকে! প্রকৃতির রূপে মুগ্ধ হতে আসা মনে তাতে এতটুকু বিরোধ জন্মায় না। রবি ঠাকুরের গান মনে পড়ে, "গোপনে প্রেম রয় না ঘরে, আলোর মতো ছড়িয়ে পড়ে / সবার তুমি আনন্দধন হে প্রিয়, আনন্দ সেই আমারও।" আজ প্রায় একযুগ পরেও যখন সবাইকে সতপন্থের গল্প শোনাচ্ছি, তার বরফগলা পান্না-সবুজ জলে শুধুই হৃদয়ের উষ্ণতা।

সতপন্থ তাল-এর উচ্চতা ১৪২৫৮ ফুট। বদ্রীনাথ থেকে মোট ২৫ কিমি পথ। বদ্রী থেকে লক্ষ্মীবন ৯কিমি-উচ্চতা ১২০০০ ফুট। লক্ষ্মীবন থেকে চক্রতীর্থ ১১ কিমি - উচ্চতা ১৩৬৫৮ ফুট। চক্রতীর্থ থেকে সতপন্থ তাল ৫ কিমি। মোট পাঁচ দিনের চলা পথ (তিন দিনে যাওয়া, দুদিনে ফেরা)। যাওয়ার আগে জোশীমঠ-এ ইনার লাইন পারমিট করিয়ে নিতে হয়।

~ সতপন্থ তাল-এর প্রচলিত ট্রেক রুট ম্যাপ || সতপন্থ তাল ট্রেকের আরো ছবি ~

'হরফ' নামে একটি প্রিপ্রেস ইউনিট চালান সুমন্ত মিশ্র। হিমালয়ের আতিথ্যগ্রহণ ও ফুটবল খেলার দৃষ্টিসুখ তাঁকে অসীম তৃপ্তি দেয়। ভালোবাসেন রবিঠাকুরের গান শুনতে, প্রবন্ধ পড়তে, ছোটগাছকে বড় করতে, বেড়াতে আর নানারকমের মানুষের সাহচর্য পেতে। ইন্টারনেটের দুনিয়ায় 'আমাদের ছুটি' কিছু সমমনস্ক মানুষের সঙ্গে মেলামেশার সুযোগ করে দেওয়ায় আনন্দিত।

 

SocialTwist Tell-a-Friend

To view this site correctly, please click here to download the Bangla Font and copy it to your c:\windows\Fonts directory.

For any queries/complaints, please contact admin@amaderchhuti.com
Best viewed in FF or IE at a resolution of 1024x768 or higher