একা একা, ঘুরেঘারে, হীরাবন্দরে

তপন পাল

-১-
যার কেউ নেই তার কে আছে? উত্তরটা সম্ভবত উপরওয়ালা, কিন্তু আমি আবার ওই পথের পথিক নই, তদুপরি তিনি যে আছেন এমনতর কোন প্রমাণ যখন অদ্যাবধি আমার হাতে নেই, তখন নিঃসংশয়ে বলি কি করে যে তিনি আছেন! তবে প্রশ্নকর্তা যদি ভ্রমণার্থী হন, তাহলে নিঃসংশয়ে নিঃসংকোচে বলতে পারি যে যার কেউ নেই তার ডায়মন্ডহারবার আছে। পয়সা নেই তো কী হয়েছে, সময় নেই তো কী হয়েছে, শারীরিক সামর্থ্য নেই তো কী হয়েছে, ডায়মন্ডহারবারের দরজা সবার জন্যে খোলা। গিয়ে গঙ্গার ধারে বসো, ভেবে নাও এটাই হরিদ্বার কি বারাণসী, গঙ্গা তো সেই একই, চা ঘুগনি খাও; সূর্য পাটে গেলে ঘরের ছেলে ঘরে যাও। মিটে গেলো। আমার যখন অনেকদিন বেরোনো হয়না, ঘরে বসে প্রাণ হাঁপিয়ে ওঠে, তখন রবিবার দুপুরে খেয়ে উঠে ডায়মন্ডহারবার; আমার সমুদ্রবিলাসী মন জল দেখলে ভারি খুশি হয়। তারপর রাতে খাওয়ার সময় হওয়ার আগেই বাড়িতে।
এই বর্ষায় সারাদিনের জন্যে ডায়মন্ডহারবার! কেমন হবে? তবে আমার আবার সিধে যাওয়ার চেয়ে ঘুরে যেতে ভাল লাগে। দিল্লি থেকে ফেরার সময় উড়োজাহাজ যদি পানিহাটির হুগলি পেরিয়ে, বি টি রোড আর রেললাইন পেরিয়ে, কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে পেরিয়ে, ফের রেললাইন পেরিয়ে ঝুপ করে নেমে পড়ে, আমার ভারি কষ্ট হয়। তার চেয়ে এই দেখলাম কলকাতা, তারপরে বোঁ করে উড়ে গাঢ় অন্ধকারে, নিচে শোনা যাচ্ছে সুন্দরবনের বাঘের গর্জন, এরকমভাবে মিনিট পনেরো ওড়াউড়ির পরে ফের কলকাতা – এমনটি আমার ভারি পছন্দের।

-২-
তাই দিন শুরু হল ভোরবেলায়। প্রথম গন্তব্য মহেশতলায়, নঙ্গী রেলষ্টেশনের অনধিক দুই কিলোমিটার পূর্বে বরকনতলায় বড়াখান গাজিসাহেবের মাজার; মতান্তরে তিনি কুমিরের রক্ষাকর্তা, বনবিবি আর দক্ষিণ রায়ের মধ্যে সন্ধিপ্রণেতা। মস্ত এক মাঠ, ঢুকতে বাঁয়ে কবরখানা বাঁশঝাড়ে ঢাকা, তার পরেই শানবাঁধানো ঈদগাহ, নমাজ পড়ার জায়গা। একটু যে খটকা লাগল না তা নয়, কারণ যতদূর জানা আছে কবরে নমাজ পড়া নিষিদ্ধ। ডাইনে ফাঁকা মাঠ। কিছুটা এগিয়ে মস্ত এক শিরিষ গাছ (woman's tongue tree. Albizia lebbeck), মোটা মোটা ডালগুলি কেটে গাছটিকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে, সম্ভবত ছত্রাক সংক্রমণের জন্য। যেটুকু ডাল আছে তা পরজীবী উদ্ভিদে পূর্ণ; গোড়ায় বাবার মাজার, দূরে পুকুর আর পাশে এক বকুল গাছ (Spanish cherry/Mimusops elengi)।
সেখান থেকে বজবজ ট্রাঙ্ক রোডে উঠে আবার ডাইনে, রেললাইন পেরিয়ে বাবা বুড়োশিবের থানে। লোকবিশ্বাসে ইনি নাকি তারকেশ্বরের তারকনাথের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা, তাই তারকনাথ কারো কথা না শুনলে এনার কাছে নালিশ জানাতে হয়। ইনি নাকি দুধ খেতে ভালোবাসেন, তাই সন্নিহিত অঞ্চলে একদা রেওয়াজ ছিল গাই বিয়োলে প্রথম কুড়ি দিনের দুধ ফেলে দিয়ে একুশতম দিনের দুধ বাবা বুড়োশিবকে দেওয়া। এখন গেরস্থবাড়িতে কেউ আর গোরু রাখে না, বাবার তাই সুখের দিন গিয়েছে। শুধু পালাপার্বণে মা জননীরা মাদার ডেয়ারির প্যাকেট কেটে বাবার মাথায় ঢালেন। গম্বুজধাঁচের মন্দিরটি অধুনানির্মিত, পিছনে বাবার পুকুর, কিন্তু থানটি ও সন্নিকটস্থ লোকালয় অতি প্রাচীন। স্বাধীনতার পর থেকে ভারতে অনেক রেল লেভেলক্রশিং বন্ধ হয়ে গেছে, কিন্তু নতুন করে লেভেলক্রশিং চালু হয়েছে খুবই কম, আমার জ্ঞানের মধ্যে মাত্র একটি, নিউ আলিপুরের বেইলি ব্রিজ; তাও সে এক ব্যতিক্রমী প্রেক্ষাপটে। এই মন্দিরে আসার জন্য একটি লেভেলক্রশিং আছে এবং এই শাখায় রেল চালু হয়েছে ১৮৯০ সালে (বৈদ্যুতিকরণ ১৯৬৫–৬৬ সালে ২৫ কেভি এসি ওভারহেড সিস্টেমে); তাই অনুমান করা যেতে পারে যে লেভেলক্রশিংটি সেই সময় থেকেই আছে। নিকটবর্তী জনবসতি না থাকলে সাহেবরা শুধু শুধু তো আর লেভেলক্রশিং বানাত না!
সেখান থেকে এঁকাবেঁকা রাস্তা ধরে অনেকখানি গিয়ে নঙ্গী শ্মশানকালী মন্দির। উৎকীর্ণ ফলক থেকে জানা গেল বছর কুড়ি আগে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের আগ্রহাতিশয্যে চাঁদা তুলে জমি কিনে মন্দিরটি নির্মিত হয়েছে এবং মাতা শ্মশানকালী তথায় স্থানান্তরিতা হয়েছেন। তাঁর পুরাতন মন্দিরটি ঘাটের ওপরেই। চালের গোডাউন, কলকাতা বন্দরের পরিত্যক্ত লাইটহাউস, অনেকগুলি ছোটবড় মন্দির, তার মধ্যে মকরবাহিনী জাহ্নবীর ও হনুমানের মন্দিরদুটি নবনির্মিত; শ্মশান, একটু দূরে বাজার... একটু খুঁটিয়ে দেখলে জায়গাটির প্রাচীনত্ব সম্বন্ধে ধারণা পাওয়া যায়। কেওড়াতলা শ্মশানের প্রতিষ্ঠা ১৮৬২তে, তার আগে মৃতদেহ দাহ করার কোন নির্দিষ্ট জায়গা খোদ কলকাতা শহরেই ছিল না, লোক যেখানে ফাঁকা জায়গা পেত সেখানেই কাঠকুটো দিয়ে জ্বেলে দিত। এই শ্মশানের প্রতিষ্ঠা তার নিকটবর্তী সময়ে বলেই ধারণা, কারণ নঙ্গী বাজারে দেখলাম একটি ব্যানার ঝুলছে, চকচান্দুল গ্রামের জগদ্ধাত্রী পূজার এইবার একশ সাতষট্টিতম বর্ষ। অঞ্চলের জনবসতি তাহলে আরও প্রাচীন; আর জনবসতি থাকলে শ্মশান থাকবে, আর শ্মশান থাকলে কালী থাকবে না তা হয় নাকি!
পাশে ফেরিঘাট, যুগপৎ সারেঙ্গা ও হিরাপুরের খেয়া ছাড়ছে। তার পাশেই গগনচুম্বী ইমারত, এক আবাসন প্রকল্পের। আজ থেকে পঞ্চাশ-ষাট বছর আগে অবধি, যখন পণ্য পরিবহনের প্রধানতম মাধ্যম ছিল নদীপথ, জায়গাটির গুরুত্ব ছিল। তারপর সড়ক যোগাযোগ উন্নত হয়েছে, নিকটবর্তী বাটা জুতোর কারখানারও আর সেই রমরমা নেই; স্বাভাবিক ভাবেই জনপদের অর্থনৈতিক ভরকেন্দ্র সরে গেছে, জায়গাটি গুরুত্ব হারিয়েছে। একটু দূরে বাটা জুতোর কারখানার ঠিক বিপরীতে ১৯৬৫তে ডুবে গিয়েছিল রত্নাশোভনা জাহাজ, সম্ভবত ডুগং-এর সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে। তার অপরপারে মানিকপুর, মানিকপিরের থান। গঙ্গার বান সেখানে গিয়ে বাধ্য ছেলের মত মাথা নামিয়ে নেয়, মানিকপির আছেন না!
মুশকিল আসান করো দয়াল মানিকপির। মানিকপির গবাদি পশুরক্ষার দেবতা, সেদিক দিয়ে তিনি বনবিবির ভ্রাতা শাহ জঙ্গলির দোসর। চেহারাটিও ওইরকমই – পরনে নীল লুঙি, চেককাটা ফতুয়া, মাথায় বাবরি চুল, তার ওপর তাজ পাগড়ি। অথবা কালো রঙের আলখাল্লা ও টুপি। তাঁকে নিয়ে মিথের অন্ত নেই। মাঝিদের কাছে তিনি বিশেষ মান্য দেবতা; নৌকা ভাসানোর সময়ে স্মর্তব্য। যেখানে তাঁর মূর্তি নেই, সেখানে প্রতীকি সমাধি বা ছোটো স্তূপেই তাঁর আবাস। সুফিদের স্বীকৃত পির এই লোকদেবতাটি দ্বিতীয় বা তৃতীয় শতাব্দীতে জরাথ্রুষ্ট ও খ্রিস্টধর্মের সংমিশ্রণে এক নতুন ধর্ম প্রচার করেন। মানিক শব্দটি 'মানিকী' (manichee, গ্রীক manikhaios) থেকে এসেছে। তাঁকে যিশুর সমগোত্রের ভাবা হয়। 'মানিকের নামে তোমরা হেলা করো না। মানিকের নাম রাখলে বিপদ হবে না'।

-৩-
নদীপার্শ্ববর্তী রাস্তা ধরে, অনেক ইটভাটা আর বনস্পতি দেখতে দেখতে, চকচান্দুল আর হেঁতালখালি গ্রাম। হঠাৎ একটা ভারি বেয়াড়া কথা মনে পড়ল। হুগলী নদী ব্রিটিশ শাসনের ভিত্তিমূল, এই নদীপথ ধরেই তাদের যাওয়া আসা স্রোতে ভাসা। তবে হুগলী নদীর খামখেয়ালি চরিত্র সাহেবদের, শুধু ব্রিটিশদের নয়, সঙ্গে ফরাসি পোর্তুগিজ দিনেমারদের ভারি ভোগাচ্ছিল। প্রতি বছরেই বর্ষায় নদী গতিপথ বদলায়, খাত বদলায়; বর্ষার শেষে যেখানে সেখানে জেগে ওঠে চর, জাহাজ চালানোই এক ঝকমারি, সপ্তদশ দশক থেকেই চেষ্টা চলছিল হুগলী নদীর navigational ও topographical মানচিত্র তৈরি করার - কোম্পানি বাহাদুরের আমলে তা অপরিহার্য হয়ে উঠল। রেনেল সাহেব (Major James Rennell, 3 December 1742 – 29 March 1830, সমুদ্রবিদ্যাচর্চার জনক) Memoir of a map of Hindoostan প্রকাশ করলেন ১৭৮৮ তে। ড্যালরিম্পল সাহেব (Alexander Dalrymple 24 July 1737 – 19 June 1808। কোম্পানি বাহাদুরের হাইড্রোগ্রাফার) ভারতের প্রধান প্রধান নদনদী ও সৈকতরেখার মানচিত্র প্রকাশ করলেন – কিন্তু হুগলী নদী কর্তৃপক্ষের কাছে নিঃসপত্ন মনযোগ দাবি করছিল। এই নদীই সুবা বাংলার যোগাযোগের প্রধান, এবং বর্ষায় একমাত্র মাধ্যম। এইসব সাতপাঁচ ভেবে ১৮৩০এ একটি পদ সৃষ্টি করা হল, Hooghly Surveyor। নবসৃষ্ট পদে যোগ দিয়ে লয়েড সাহেব (Captain Richard Lloyd, ১৭৯৮ – ১৮৭৭) প্রকাশ করলেন BAY OF BENGAL, APPROACHES TO THE HOOGHLY RIVER: A Survey of the Sands and Channels forming the Entrance into The River Hoogly। এতদিন লোকে অভিজ্ঞতায় যা জানত, লয়েড সাহেবের লেখা তাকেই মান্যতা দিল; জানাল যে নাবিকদের কাছে হুগলী নদী পৃথিবীর অন্যতম আগ্রহ-উদ্দীপক ও বিপজ্জনক নদী। বিশেষত রূপনারায়ণ যেখানে হুগলীতে মিশেছে, আজকের সেই গাদিয়াড়ার কাছে তিন মাইল দীর্ঘ ও আধ মাইল প্রস্থের নদীখাতের বালুচর ও মগ্নচড়া – যার পোশাকি নাম James and Mary Sands (22° 14' N. and 88° 5' E) । THE IMPERIAL GAZETTEER OF INDIA, 1908, (OXFORD, AT THE CLARENDON PRESS) জানাচ্ছে যে ১৬৯৪ সালে ডুবে যাওয়া Royal James and Mary জাহাজের নামেই এই মগ্নচড়ার নামকরণ। মগ্নচড়াটি নদীখাতের মাঝবরাবর, তার দুইদিক দিয়ে জলধারা প্রবাহিতা। ১৮৬৫তে, এবং আবার ১৮৯৫তে, বিশেষজ্ঞরা নদীখাতের পশ্চিম জলধারা বরাবর দেওয়াল তুলে দেওয়ার কথা বলেন, কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষ তা মানেননি।
বস্তুত, হুগলী নদীর মন্দভাগ্যের শুরু অষ্টাদশ শতকের শেষ বরাবর, দামোদর যখন তার গতিপথ পরিবর্তন করে। আগে দামোদর হুগলীতে মিশত এখনকার চাকদহ – শিমুরালির কাছে। ভূতাত্ত্বিক কারণে (কাঠমান্ডু উপত্যকার ভূকম্প ১৬৬৮?) অষ্টাদশ শতকে দামোদর এখনকার মশাগ্রাম-চাঁচাই-এর কাছে প্রায় সমকোণে তীব্র বাঁক নিয়ে দক্ষিণগামিনী হয়ে জামালপুর উদয়নারায়ণপুর হয়ে বালিচাতুরি আইমা হয়ে ফলতার কাছে হুগলীতে পড়ে। গতিপথ প্রলম্বিত হওয়ার কারনে দামোদর স্রোত হারায়, জায়গায় জায়গায় শুকিয়ে যায়; আর রূপনারায়ণ ও দামোদরের এই প্রায় যৌথ সম্মিলনে হুগলীতে আরও বেশি পলি জমে, কারণ দামোদরের জল কমায় সামগ্রিকভাবে হুগলী নদীর জলের প্রবাহ কমে, সে পলিকে আর সমুদ্রে ঠেলে দিতে পারে না; পলি জমতে থাকে, পরিণামে James and Mary Sands আরও বিপদজনক হয়ে ওঠে। ১৮৬৫তে Superintendent Engineer for the Department of Public Works in Bengal, Hugh Leonard মেটিয়াবুরুজের কাছে আকরা থেকে মোহনা অবধি হুগলী নদীর পূর্বপাড় বরাবর পাঁচিল তোলেন – উদ্দেশ্য হুগলীতে জলপ্রবাহ বাড়ানো। ভুমির স্বাভাবিক ঢাল পূর্বে হওয়ায় হুগলী নদী থেকে প্রচুর জল ছোট ছোট জলধারাবাহিত হয়ে এখন আমরা যাকে East Calcutta Wetlands বলি, সেখানে গিয়ে পড়ছিল। ভাবতে রোমাঞ্চ হল যে আমি এখন সেই ঐতিহাসিক পাঁচিল বরাবর চলেছি।
রাস্তায় এক জায়গায় চা খেতে থেমেছিলাম, দোকানদার কৌতূহলী হয়ে অনেক প্রশ্ন করলেন। তারপর আমি পাল শুনে জানালেন এই যে দেখছেন পাশাপাশি বট অশ্বত্থ – একশো বছর এখানকার পালবাড়ির গিন্নিমা এদের বিয়ে দিয়েছিলেন। ওনাদের তো গঙ্গায় নিজস্ব ঘাট ছিল; সেখানে নেয়ে ফেরার পথে গিন্নিমা ওই গাছের গোড়ায় গঙ্গা জল ঢালতেন। আপনি ওনাদের কেউ হন নাকি?
পথ পেরিয়ে, চটকলের মধ্য দিয়ে, বজবজ কালীবাড়ি। ঐতিহাসিক ও দৃষ্টিনন্দন। হুগলী নদীর পূর্বপারে অনেকখানি জায়গা নিয়ে মন্দির, শ্মশান ও ফেরিঘাট। ঘাটটি হাওড়া জিলা পরিষদের। লঞ্চ চালান হুগলী নদী জলপথ পরিবহন। হুগলিতে অনেক জাহাজ, পরপারে বাউড়িয়া। মন্দির প্রাঙ্গণটি বিস্তৃত ও নানাবিধমন্দিরসঙ্কুল হলেও দেবীমূর্তিটি ছোট, তাই লোকমুখে খুকি কালী। আর কালী এখানে খুকি বলেই অম্বুবাচীতেও পূজার্চনা বন্ধ হয় না।
বজবজ অতি প্রাচীন জনপদ, এবং বজবজ পৌরসভা অবিভক্ত বাংলার প্রাচীনতম পৌরসভাগুলির অন্যতম। বজবজের এক বাসিন্দা রেলগাড়িতে আমার প্রাত্যহিক সহযাত্রী ছিলেন। তিনি বলতেন বজবজ মানে খুকি মা, বজবজ মানে কোমাগাতামারু, বজবজ মানে ধনিয়ার ডালপুরি। খুকি মা দেখা হল, এবার গন্তব্য কোমাগাতামারু।

১৯১৩য় ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রতিষ্ঠিত হয় 'গদর পার্টি'; উদ্দেশ্য ছিল আমেরিকার প্রবাসী ভারতীয়দের দেশের মুক্তি সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করা। ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দের ২৯ শে সেপ্টেম্বর বাবা গুরদিৎ সিং নামে এক পাঞ্জাবি তিনশ বাহাত্তর জন ভাগ্যান্বেষী শিখ যুবককে নিয়ে যাত্রীবোঝাই জাপানি জাহাজ 'কোমাগাতামারু' করে কানাডার ভ্যাঙ্কুভার বন্দরে পৌঁছায়। ব্রিটিশের গোপন নির্দেশে কানাডা সরকার বাবা গুরদিৎ সিংকে আশ্রয় না দিলে জাহাজটি কলকাতায় ফিরে আসে। জাহাজের যুবকরা বজবজে অবতরণ করলে শিখযাত্রীদের নানা ভাবে হেনস্তা করা হয়। ব্রিটিশ সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে কুড়িজন শিখ ও ছজন পুলিশ নিহত হন। তার স্মারক হয়েছে, রক্ষণাবেক্ষণ অত্যুত্তম। শিখদের কাছে এটি ধর্মীয় স্থানের মর্যাদা পেয়েছে; জুতো খুলে ঢুকতে হয়, ধূপ মোমবাতি জ্বলছে। বজবজ রেলস্টেশনও আজ নাম বদলে কোমাগাতামারু বজবজ।
স্মারকস্তম্ভটির পাশেই পুরানো ও অধুনা পরিত্যক্ত বজবজ রেলস্টেশন। পরিত্যক্ত রেলস্টেশনটি দেখে বুকের মধ্য থেকে এক পুকুর আবেগ উঠে এল যেন। কাঠামোটুকু আছে, রেললাইনও আছে, তবে এখন এ লাইন দিয়ে রেকের সামনে ও পিছনে দুটি ডিজেল শানটার লোকো লাগিয়ে শুধু পুজালি তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের কয়লাবাহী রেলগাড়ি যায়; কারণ প্রকল্পে গাড়ি ঘোরাবার ব্যবস্থা নেই। সিংগল লাইন, অবৈদ্যুতায়িত; তবে এই জায়গাটি ইয়ার্ডসদৃশ। স্টেশন হওয়ার সুবাদে অনেকগুলি রেললাইন ছিল, সেগুলিই এখন শান্টিং লাইনের কাজ করছে।

এই স্টেশনটি নদীর ধারে; পরপারে বাউড়িয়া থেকে একটি শাখা লাইন এসেছিল নদীর ধারে ফোর্ট গ্লস্তারে, Fort Gloster Electric Limited এর কারখানার সুত্রে জায়গাটিরও ওই নাম। সাহেবদের স্বপ্ন ছিল এখানে একটি রেলসেতু করার; তারপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, ১৯৪৭... আর হয়ে ওঠেনি। ১৯৬৯ সালের আগস্টে রেলওয়ে বোর্ডের এক সভায় বাষ্পীয় লোকোশেডগুলি বন্ধ করে দেওয়ার যথার্থতা তথা কাম্যতা নিয়ে কিঞ্চিৎ আলোচনা হয়। তৎসংশ্লিষ্ট নথিতে দেখা যাচ্ছে বাউড়িয়া লোকোশেডের এইচ এস ক্লাস লোকো বাউড়িয়া থেকে ফোর্ট গ্লস্তারে দৈনিক পনেরোটি ওয়াগন শান্টিং করছে। ২০১৭ – ২০১৮ আর্থিক বছরের বাজেটে শুশুকের মত ঘাই মেরে হঠাৎ সে ভেসে উঠল, দেখা গেল পশ্চিমবঙ্গে ডবল লাইন পাতার জন্য ৯১ কোটি টাকা বরাদ্দ, তার মধ্যে আছে বজবজ-পুজালি ও পুজালি-উলুবেড়িয়া। তারপর আবার সব চুপচাপ। এ তো আর গঙ্গার শুশুক (Platanista gangetica gangetica) নয় যে ক্ষণকাল পরেই ভেসে উঠবে, সে ছিল মোহনার শুশুক (Orcaella brevirostris); একবার ডুব দিলে আর ভেসে ওঠার নাম নেই!
স্বামী বিবেকানন্দ শিকাগো থেকে ফেরার পথে ১৮৯৭-এর ১৯শে ফেব্রুয়ারি এখানেই জাহাজ থেকে নেমেছিলেন। ১৮ই ফেব্রুয়ারি এস এস মোম্বাসা জাহাজটি কলকাতার খিদিরপুর ডকে যাওয়ার পথে আকস্মিক কারণে বজবজে থেমে যায়। সারা রাত জাহাজে কাটিয়ে পরদিন সকালে এই স্টেশন থেকে শিয়ালদহগামী বজবজ লোকাল ধরে শ্যালদা হয়ে নরেন আলমবাজার মঠে। সেই স্মৃতিতে একটি স্মৃতিফলক আছে।

স্টেশনটিতে একটিই প্ল্যাটফর্ম; প্ল্যাটফর্মসন্নিহিত লাইন পার হয়ে আরও অনেকগুলি লাইন। এখনকার বজবজ স্টেশনের বিন্যাস এইরকমই। প্ল্যাটফর্মটি হ্রস্ব; সেটিই স্বাভাবিক কারণ এখন বারো কামরার গাড়ি চললেও ২০০২ অবধি এই লাইনে গাড়ি ছিল আট কামরার, তখন হয়তো আরও ছোট গাড়ি চলত। স্টেশনটি ঠিক কবে পরিত্যক্ত হয়েছিল জানি না, তবে অনুমান করি বিগত শতকের ত্রিশের দশকে; কারণ এখনকার বজবজ স্টেশনের সম্প্রতিলুপ্ত রুট কেবিনটির দেওয়ালে লেখা ছিল 1932।
বাকি রইল ধনিয়ার ডালপুরি। আজ থেকে বছর পঞ্চাশ আগে, চটকলের সেই রমরমার যুগে, ধনিয়া নামের এক হিন্দুস্তানি যুবক বজবজ প্লাস্টার (আসলে Pilaster) মোড়ে ডালপুরি বিক্রি করতেন। 'কালস্রোতে ভেসে যায় জীবন যৌবন ধন মান' ধনিয়াও ভেসে গেছে, রয়ে গেছে 'তব অন্তরবেদনা, ধনিয়ার ডালপুরি; চিরন্তন হয়ে'। আজও বজবজে রোল চাও বিরিয়ানি সদৃশ ত্বরিৎ-আহার্যকে টেক্কা দিচ্ছে কোমল ধবল বর্তুলাকার ডালপুরি, সঙ্গে খোসাসুদ্ধ আলুর মাখোমাখো তরকারি, দোকানবিশেষে আম বা তেঁতুলের চাটনি। মহালয়া হোক বা না হোক, এই আনন্দযজ্ঞে সবার মধুর আমন্ত্রণ।।
বজবজের পরে পুজালি। সেখানকার তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প পেরিয়ে ছোটবটতলার গা দিয়ে ডানহাতে বেঁকে রাস্তা, ডাইনে তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের পাঁচিল, বাঁয়ে বাঁশঝাড়, ঝোপঝাড়, পুকুর, জলাভূমি, বড় বড় গাছ, দিনের বেলাতেও আলো-আঁধারি। কিছুটা গিয়ে গঙ্গার পাড়ে অনেকখানি জায়গা নিয়ে ইন্দিরা উদ্যান; গাছগাছালি, রঙ্গিন মাছ, সে এক জমজমাট ব্যাপার। সামনেই গঙ্গা, আর সেখানে কুড়ি-পঁচিশটা ছোট জাহাজ প্রতীক্ষারতা, বাংলাদেশ থেকে তারা এসেছে তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের মিহি ছাই নিয়ে যেতে। ভারি চমৎকার দৃশ্য।
কাছেই অতীতের চিনা উপনিবেশ আচিপুর, ১৭৭৮ সালে এখানেই নোঙর করেছিল মি: টং আছুর বাণিজ্যতরী। লোককথা আজও বলে কিভাবে তিনি স্থানীয় জমিদারমশাইয়ের বিরাগভাজন হয়েছিলেন, আর কিভাবে চা খাইয়ে তিনি তাঁর ও তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গদের মন জয় করেছিলেন। আছু সাহেবকে চিনিকল তৈরির জন্য গঙ্গার ধারে বার্ষিক পঁয়তাল্লিশ টাকায় ৬৫০ একর জমি দেয়া হল। সাহেবও দেশে ফিরে চিনি তৈরির যন্ত্রপাতি ও লোকলস্কর নিয়ে এলেন। গঙ্গার ধারে চিনিকল চালু হল। তার আগে বাঙালি চিনি কাকে বলে জানতো না; গুড় খেয়েই সন্তুষ্ট ছিল। চিনা লোকের সংস্পর্শেই চিনির নাম চিনি, শক্কর (সংস্কৃত শর্করা) নয়; ঠিক যেমনি মিছরির (পুরাতন বাংলা মিশ্রি) মধ্যে মিশে থাকে ইজিপ্ট (মিশর; ইজিপ্টের আরবি নাম), বাতাবি লেবুর মধ্যে বাতাভিয়া; বা বন্দুকের মধ্যে ভেনিস (Banadique; ভেনিসের বাইজেনটাইন নাম)। আছু সাহেবের আর এক অবদান টানা রিকশার প্রচলন।
সেই সময় এই জায়গায় বাদাবন, ম্যানগ্রোভ, আর বাঘের উপদ্রব; সাহেব তাই দক্ষিণরায়ের মন্দির স্থাপন করেন। ভেতরে কোনো মূর্তি নেই, ঘটেই পুজো। পরবর্তীকালে সাহেব দক্ষিণরায়ের মন্দিরের সামনে চৈনিক দেবদেবী 'পাকুমপাহ' (খোদাখুদি)-র মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন।

লোককথা বলে, আগে এই দেবদেবীর মূর্তি সোনার ছিল। স্বপ্নাদেশ পেয়ে সাহেব সোনার মূর্তি গঙ্গায় ছুঁড়ে ফেলে এই চন্দনকাঠের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। সেই সোনার মূর্তি আজও নাকি শুয়ে আছে গঙ্গার অতলে; কত লোক আজও গঙ্গায় ডুব দিয়ে তাকে খোঁজে। মন্দিরের গর্ভগৃহ ছোটো, যত্নে সাজানো; মূল মন্দিরের সামনে প্রার্থনাকক্ষ। সেখানে লম্বা একটি টেবিলে সারি সারি মোমবাতি ও ধুপকাঠি জ্বালানোর ব্যবস্থা, মন্দিরের ডানদিকে বিশ্রামকক্ষ। সেখানে একপাশের দেওয়ালে মন্দির সংস্কারে সাহায্যদাতাদের নাম চিনা হরফে শ্বেতপাথরে লেখা। মন্দিরের বাঁকোণে কনফুসিয়াসের মন্দিরকক্ষ। কক্ষের সামনে ইতিহাস হাজির, আছু সাহেবের বাণিজ্যতরীর ভাঙা অংশ। পুরো মন্দিরচত্বর পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। মূল দরজাটি বেশ সুন্দর। সামনে বড়ো মাঠের মতো ফাঁকা জায়গা। মাঠের পাঁচিলের ওপাশে ছিল সাহেবের চিনির কল, আজ সেই জায়গায় গড়ে উঠেছে ঘনবসতি। আর মন্দিরের পেছনে যে পুকুরপাড়, সেখানেই ছিল আছু সাহেবের নীলচাষের খেত। পুরো মন্দিরচত্বর গাছগাছালিতে ছাওয়া, মধ্যমণি এক অতিকায় অশ্বত্থ, চেহারা দেখে মনে হয় আছু সাহেবের স্বহস্তরোপিত। সুন্দর পরিবেশ।
মন্দিরের মূল গেট দিয়ে বেরিয়ে ডানহাতে কিছুটা পথ গিয়ে গঙ্গা, অপর পাড়ে উলুবেড়িয়া। পাড় ধরে ডাইনে গঙ্গার তীরে নির্জনে শুয়ে আছেন টঙ অছু; বাঁধানো লাল সমাধিবেদি। জোয়ারের ছলাৎ ছলাৎ, জাহাজের ভোঁ - আজও হয়তো তাঁর জন্মভূমির কথা মনে পড়ে।

আছুর নামে জায়গাটির নামও হয় আচিপুর; চিনাদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। আছু সাহেবের মৃত্যুর পর চিনিকল বন্ধ হয়ে যায়; বাধ্য হয়ে চিনারা কলকাতায় ছড়িয়ে পড়েন। এখন আচিপুরে আর কোনো চিনা নেই। ফেব্রুয়ারি মাসের ১২-২৪ চিনা নববর্ষ উপলক্ষে এখানে উৎসব হয়। সেইসময় দেশের নানা প্রান্ত, এমনকি বিদেশ থেকেও চিনারা এখানে আসেন।
সমাধি থেকে দক্ষিণমুখী বিড়লাপুর যাওয়ার রাস্তায় গঙ্গার পাড় বরাবর উঁচু বাঁধ ধরে মিনিট পনের হাঁটলে বাঁহাতে নবাবি আমলে নির্মিত বারুদকল, ডাইনে অতি প্রশস্তা গঙ্গা। রাস্তাটি অতিশয় শুনশান, নৈঃশব্দ্য প্রায় কর্ণবিদারক, দিনের বেলায় ঝিঁঝিঁ ডাকে, রাস্তার ওপর চেরা জিভ বার করে রাজকীয়তায় চরে বেড়ায় দোয়ারকেল (Bengal monitor/Varanus bengalensis)। আগে এই সব জায়গায় আসতে হলে সাইকেল ছাড়া গতি ছিল না, গঙ্গা বাঁধ খাচ্ছিল। স্থানীয় সাংসদ মহোদয়ের দাক্ষিণ্যে রাস্তাটি অধুনা সুসংস্কৃত, স্থানীয়রা আশা করছেন শীত পড়লেই চড়ুইভাতিকারীরা দলে দলে আসবেন ও তাতে তাঁদের জীবিকার দিগন্ত প্রসারিত হবে।
বারুদকল ময়দান গঙ্গার বাঁধের অনেকখানি নিচে এক বিশাল মাঠ, তার মধ্যে ইতিউতি মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে পরিত্যক্ত বৃক্ষশোভিত অতিকায় একটি ও ছোটখাটো অনেকগুলি নির্মাণ। নির্মাণগুলি দেখলে বোঝা যায় এগুলি বাসস্থানরূপে নির্মিত হয়নি, বরং প্রধান ইমারতটির সঙ্গে কারখানারই মিল। তাকে ঘিরে ছোটখাটো একতলা ইমারতগুলি সম্ভবত কর্মীদের বাসস্থান ছিল। মৌখিক ইতিহাস বলছে এটি নবাব আলিবর্দির (১৬৭১ – ১৭৫৬) বারুদকল, এখানকার তৈরি হওয়া বারুদ জলপথে মুর্শিদাবাদ যেত। কিন্তু বিশ্বাস হল না। তখন বর্গি হামলার (১৭৪৫–১৭৪৯) যুগ, বারুদের মত লোভনীয় পদার্থ প্রেরণের পক্ষে জলপথ কতখানি নিরাপদ ছিল কে জানে! দ্বিতীয়ত আছুসাহেব বা তাঁর চিনা কর্মীদল – বারুদ তৈরিতে যাদের দক্ষতা প্রশ্নাতীত – তদবধি এসে পৌঁছননি। তৃতীয়ত, নির্মাণগুলির ইট বা প্রকৌশল দেখে তাদের কোনোভাবেই নবাব আলিবর্দির আমলের বলে মনে হল না। ছোটখাটো নির্মাণগুলির স্থাপত্যে ইসলামি ছাপ থাকলেও অতিকায় নির্মাণগুলি ব্রিটিশ জমানার বলেই মনে হল। তবে স্থানীয় বয়োজ্যেষ্ঠরা বললেন তাঁরা জ্ঞান হওয়া থেকে ইমারতগুলিকে অমনই দেখে আসছেন, তাঁদের বাপ-জ্যাঠারাও অমনটিই দেখেছেন।

কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের সৌজন্যে জানা গেছে, সেই যুগে সমুদ্রে দস্যুদের উৎপাত এত বেশি ছিল যে আত্মরক্ষার্থে প্রায় সব জাহাজই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার অঙ্গ হিসাবে বারুদ রাখত। কিন্তু কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ চাননি যে কলকাতার মত ঘনবসতিপূর্ণ শহরে জাহাজরা বারুদ নিয়ে ঢুকুক। একটি স্ফুলিঙ্গ কী করতে পারে সেটা সাহেবরা জানতেন। তাই নিয়ম হল, কলকাতা বন্দরে ঢোকার মুখে এক নিরাপদ জায়গায় জাহাজরা তাদের বারুদ নামিয়ে রেখে কলকাতা বন্দরে ঢুকবে, আবার ফেরার সময় সেখান থেকে নিজের বারুদ তুলে নিয়ে ভেসে যাবে দূরসমুদ্রে। সেইজন্যেই এই নির্মাণ, আদতে এটি বারুদের গুদামঘর, ১৮০১ সালে লর্ড অয়েলেসলির (Richard Colley Wellesley. 20 June 1760 - 26 September 1842। বড়লাট, ১৭৯৮ – ১৮০৫) আদেশে এই বারুদঘরের স্থাপনা, ১৮৫১ সালে লর্ড ডালহৌসির (James Andrew Broun-Ramsay, 22 April 1812 - 19 December 1860, বড়লাট, ১৮৪৮ – ১৮৫৬) নির্দেশে তার সশক্তকরণ – 'তৎকালীন ক্যালকাটা গেজেটে তো তারই উল্লেখ আছে।

- ক্রমশ -

হিসাবশাস্ত্রের স্নাতকোত্তর শ্রী তপন পাল West Bengal Audit & Accounts Service থেকে অবসর নিয়েছেন সম্প্রতি। তাঁর উৎসাহের মূলক্ষেত্র রেল - বিশেষত রেলের ইতিহাস ও রেলের অর্থনীতি। সেবিষয়ে লেখালেখি সবই ইংরাজিতে। পাশাপাশি সাপ নিয়েও তাঁর উৎসাহ ও চর্চা। বোম্বে ন্যাচারাল হিস্ট্রি সোসাইটি এবং ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ফ্যান ক্লাবের সদস্য শ্রী পালের বাংলায় ভ্রমণকাহিনি লেখালেখির প্রেরণা 'আমাদের ছুটি'। স্বল্পদূরত্বের দিনান্তভ্রমণ শ্রী পালের শখ; কারণ 'একলা লোককে হোটেল ঘর দেয় না।'

 

HTML Comment Box is loading comments...

To view this site correctly, please click here to download the Bangla Font and copy it to your c:\windows\Fonts directory.

For any queries/complaints, please contact admin@amaderchhuti.com
Best viewed in FF or IE at a resolution of 1024x768 or higher