কবিতায় চড়ে
বান্ধবগড়ে


অভিষেক চট্টোপাধ্যায়

~ তথ্য- বান্ধবগড় ~ || ~ বান্ধবগড়ের ছবি ~

তখন সবে ভোর হয়েছে বিছানার পাশে জানলায়
আলগা চালে নরম আলো পড়ছে সবুজ পাল্লায়।
ঘুমঘুম চোখ শীত-শিহরণ শরীরে আলতো চাদর
আড়মোড়া ভাঙা সকালের ঠোঁটে চায়ের উষ্ণ আদর।
ঘড়িতে তখন ছ’টা বাজে সবে ডাক শুনি দয়া ভাইয়ার
‘চলিয়ে দাদা, রেডি হ্যায় সব, গাড়ি ভি হ্যায় তৈয়ার’
কালকে রাতেই এসেছি এখানে বান্ধবগড় জঙ্গলে
একে একে সব জিপসি ছাড়ে হইচইরই দঙ্গলে।
আট থেকে আশি গাড়ি ভরা হাসি আনন্দে মাতোয়ারা
সারাবছরই জঙ্গল খোলা, বর্ষার দিন ছাড়া।
রিসর্ট থেকে বেরিয়ে যে পথ সে পথে পাগলা ঝোরা
ছপাৎ জলে ভিজল চাকা উড়ল পাগলপারা।
খানিক যেতেই অরণ্যপথ সবুজ সিংহদ্বার
ওটা পেরোলেই সবুজের ডাক, সাধ্যি কী এড়াবার?
তবে তার আগে টাকা জমা দিয়ে পারমিট নিতে হয়
যদিও এখন ইন্টারনেটে কিছু অলভ্য নয়।
শুধু তাই নয়, পথে ভাগ আছে, ‘এ’ ‘বি’ ‘সি’ ‘ডি’ কতশত
ছুটবে না গাড়ি জঙ্গলপথে নিজের ইচ্ছেমতো।
দয়া ফিরে এলো হাতে নিয়ে তার গাড়িটির অনুমতি
আমাদের গাড়ি ছুটবে ‘বি’ পথে, বেঁধে দেওয়া তার গতি।
এমন সময় কোথা থেকে এল বীরপুঙ্গব দল
মাথাখোলা জিপে লম্ফঝম্প যাত্রীরা চঞ্চল।
বিদেশিনী যেই আপ্লুত মুখে ক্যামেরা করেছে তাক
ল্যাজ উঁচিয়ে দাঁত খিঁচিয়ে তেড়ে গেল খ্যাঁকখ্যাঁক।
‘বাবা রে মাগো রে’, থুড়ি থুড়ি থুড়ি  ‘হোয়্যার ইজ মম -ড্যাড?’
পালিয়ে বাঁচবে সে পথও নেই যে কী কাণ্ড রে বাবা, ধ্যাৎ!
কপাল ভালো, ঠিক সে সময় দরজাটি খুলে দিল
যত গাড়ি সব দে ছুট ছুট এযাত্রা বাঁচা গেল।
বুকের ভেতর চড়ছে পারদ থমথমে রোমাঞ্চ
ছুটল গাড়ি যে যার পথে, ‘ও দয়াভাই শুনছ?’
‘কহিয়ে দাদা’, বলল দয়া, ‘এ যে কিছু দেখা যায় না-
ধুলোয় ঢেকেছে চারিপাশ’- ‘ইঁহা জোর জোর মাত কহনা’।
‘ও হো সরি সরি’, মুশকিল ভারি ভুলে গেছিলাম আমি
জঙ্গলে জোরে কথা বলা মানা, এই কথাটাই দামি।
খানিকবাদেই চোখ হল সাফ গায়ে শীত কনকনে
পাতার ফাঁকে ভোরের সূর্য উঁকিঝুকি বনে বনে।
জঙ্গল চিরে সবুজ এ পথ এঁকেবেঁকে ছুটে যায়
আনমনা মন ইতিউতি চোখ কী যেন দেখতে পায়।
গাইড বলল, ‘রুকো রুকো ভাই, উও দেখো এক চিতল’
হলদে শরীরে সকালের আলো কি দারুণ উচ্ছ্বল!
মুখে হাসি মনে খুশি জেগে ওঠে ক্যামেরায় ছবি চাই
ওমা! একী! গেলটা কোথায়? এই ছিল এই নাই?
লুকিয়ে পড়েছে ঘন সবুজের গভীর অন্তরালে
‘রাস্তে মে উও ফির মিলেগা’-গাড়িটা আবার চলে।

ফাঁকা প্রান্তর মেঠো রাস্তা লালচে পাতার ঝাঁক
বনের হাওয়ায় আজকে ওরা সঙ্গী হয়েই থাক।
বনবনানীর কোটর ফুঁড়ে রোদের ইচ্ছেচলা
এই অরণ্যে চুপটি থেকেও আমার কথা বলা।
বহেড়া, কেন্দু, আমলকী আর শাল-মহুয়ার দল
পাতাবাহারে হাত বাড়িয়ে মন চল, ছুটে চল।
চলতে চলতে তালাও তীরে একদল মৃগখেলা
জলপান চলে আপনমনে কোথায় শকুন্তলা?
রোদের গায়ে গা এলিয়ে শম্বর থাকে বসে
ডালে-আবডালে লুটোপুটি মন নাম না জানার শিসে।
এ অরণ্য ভারি অদ্ভুত পাহাড় দিয়ে ঘেরা
ছেলেপাহাড় আর মেয়েপাহাড়ে কী দারুণ বোঝাপড়া।
পাহাড়মাথায় রাজার প্রাসাদ, মন্দির, গুহা পাব
এখন সে সব থাকুক সেখানে পরেই বরং যাব।
সকাল থেকে হরিণ ছাড়া মিলল না তো কিছু
খালি মনে হয়, আসছে কী সে, আমাদের পিছু পিছু!
ভাবতে ভাবতে থামল গাড়ি, দয়া দেখাল রাস্তায়-
একটু আগেই সে গেছে এ পথে দেখলেই বোঝা যায়।
টাটকা বিরাট থাবার চিহ্ন ধুলোরাস্তার বুকে
গাইড জানাল, কাছেপিঠে আছে আজই দেখা যাবে তাকে।
বুকে চাপা খুশি, চোখে অপেক্ষা, মনে জাগে সংশয়
দেখা সে কী দেবে এতই সহজে! কী জানি, কী হয়?
পেরোল সময়, দিক শুনশান চোখ চলে যতদূর
ঝরা পাতা বুকে শুয়ে থাকে সুখে মর্মরধ্বনি সুমধুর।
পেছনে যে কটা গাড়ি এসেছিল সকলেই ফিরে গেছে
মুখ ফেরাতেই চোখের উপর ময়ূর এসে নাচে।
ময়ূর নাচে চোখের সামনে! একী জাগে বিষ্ময়!
মনের জোরে বাঁধলে আশা এমনই বুঝি হয়।
বনের পথে রোদের আলাপে রঙের কলাপ মেলে
ময়ূর ডাকছে ময়ূরীকে আজ মিলনখেলার ছলে।
নাচে ঘিরিঘিরি নীলাম্বরী কন্ঠে সাজে ওই
এমন দিনে মেঘমহারাজ তোমার কবিরা কই?
কোথায় তাদের কাব্যকবিতা, কোথায় গানের ধারা?
মন বলে দ্যাখ দুচোখ ভরে ভুবন দিশেহারা।
ছন্দে-বোলে নাচের তালে ময়ূর-ময়ূরী হারায়
সব্‌জে পাতায় নূপুর বাজে মনহারা ঠিকানায়।

ঠিকানা এবার সেন্টার পয়েন্ট, ঘড়িতে সোয়া আট
কেক-পাঁউরুটি-ডিম-কলা-কোলা প্রাতরাশ ঝটাপট।
এখানেই মেলে খবর - বাঘ দেখা গেছে ঠিক কোথায়
ট্যুরিস্ট-গাইড-ড্রাইভার সব সেদিকেই গাড়ি ছোটায়।
এরপর আর কোনও বাধা নেই সব গাড়ি সব দিকে
আমরাও তাই মুক্ত এখন খুঁজছি শুধুই তাকে।
বাঘ, শম্বর, হায়না, ভালুক, নীলগাই, চিঙ্কারা
ঝোপেঝাড়ে আছে গাউরের দল, হঠাৎ কীসের সাড়া!
একটু যেতেই বনগহিনে প্রচুর গাড়ির ভিড়
বাতাসের কানে শুধু কানাকানি মানুষেরা অস্থির।
নেই কোনও কথা চারপাশ চুপ কিছু হবে মনে হয়
কাছে দূরে থেকে থেকে শুধু যেন পশুপাখি ডেকে যায়।
গাইড জানাল, অ্যালার্ম কলে জানান দিচ্ছে ওরা
এখানেই আছে শের মহারাজ নিশ্চয় দেবে ধরা।
‘ওই তো, ওই তো, দেখা গিয়েছে’, চাপাস্বরে চিৎকার
বিদেশিনী বলে বিদেশির কানে, ‘টাইগার-টাইগার’।
এ গাড়ি সে গাড়ি শুধু হুড়োহুড়ি ক্যামেরায় বাঘ ধর
গাছের ডালে না ওঠো যদি বাঘ দেখা দুষ্কর।
দয়াশঙ্কর জঙ্গল ঘেঁষে গাড়িটাকে দাঁড় করায়
হলে হবে কী এই পোড়া চোখ সকল কিছুই হারায়।
দুয়েকজনে দেখতে পেল, দাঁতের ফাঁকে আলো
শুনেই আমার হাড়-মাস আর পিত্তি জ্বলে গেল।
এরপরে ঠিক ঘটল যেটা কী ভাষায় যে বলি!
বনের ফাঁকে হঠাৎ দেখি ডোরাকাটা দাগগুলি।
ভাষাহীন মুখ নিশ্চুপ চোখ নিথর আমি তখন
গাড়িগুলো সব মুখ ঘোরাল বাঘ বেরোল যখন।
বাঘ দেখছি চোখের সামনে মাত্র ক’হাত দূরে!
বসল এসে রোদ বিছানো রাস্তারই উপরে।
রাজার চোখে চোখ রেখেছি নিশ্বাস আজ বন্ধ
দেখছি যা তা সত্যি নাকি অবচেতনের ধন্দ!?
এতকাল শুধু গল্পে শুনেছি, ‘বাঘ আছে সেই বনে’-
ভাবিনি গল্প সত্যি হবে আমার জীবনে।
ঠিক কতক্ষণ বসেছিল সে বলতে পারি না তা
অবশ ছিলাম, খেয়াল ছিল না ঘড়ি দেখবার কথা।
যখন সে এই রাস্তা ছেড়ে দুলকি চালে দাঁড়ায়
সিংহ-আসন ছাড়ল রাজা আমার চোখের তারায়।
স্নায়ু -মগজের ভয়-নির্ভয় অনুভূতি একাকার
ইতিউতি চেয়ে বুঝিয়ে দিল সময় হয়েছে যাবার।
রাজার ইচ্ছে ঠ্যাকায় কে আর মুখ লুকাল জঙ্গলে
আগাছার ফাঁকে হলুদ -কালো মিশল শালের দঙ্গলে।
খেয়াল হল বাঘ বসেছিল আমার দুচোখ জুড়ে
নেই তো খাঁচার আড়াল, দেখেছি প্রকৃতির কোলে চড়ে।
বেড়েছে বেলা উঠছে শরীর রোদের আঁচে তেতে
ফুরোল সময় জানাল গাইড, রিসর্টে ফেরার পথে।
পরের সাফারি দুপুর তিনটে - এখন স্নানের পালা
ঠিক বারোটায় লাঞ্চ টেবিলে, এমনি ফুরোয় বেলা।
লেগে আসা চোখ তন্দ্রায় ডুব, ডাকল কী দয়াভাই?
হাতের ঘড়িতে টিক টিক টিক ঠিক বাজে তিনটাই।
আবার ছোটা জঙ্গল পথে অচেনা উত্তেজনা
এখন চলেছি পাহাড়মাথায় রাজবাড়ি ঠিকানা।
রাস্তাটা আগে একটাই ছিল দুভাগ হয়েছে এখন
একটি গিয়েছে শেষশয্যায় অন্যটি রাজপ্রাঙ্গণ।
মেঘলা বিকেল তবুও রোদেলা - লুকোচুরি খেলা চলে
পাহাড়িপথে ময়ূর-ময়ূরী নেচে যায় কল্লোলে।
কার মুখ দেখে কে জানে আমার সকাল জেগেছিল
দয়া বলল, এতদিনে তারা ময়ূরীরও নাচ দেখল।
বনের বুকে লাগল কাঁপন কম্পিত কলাপে
মুখর বিহান দিকবিদিকে কেকার প্রলাপে।
বেশিক্ষণ আর দাঁড়ালাম না মেঘ করে আসে আকাশে
উঠতে হবে অনেকটা পথ পাহাড়িয়া ঝোড়ো বাতাসে।

গাড়িটা যেখানে থামল সেখানে আরও কয়েকটা সিঁড়ি
শায়িত বিষ্ণুচরণে চরণগঙ্গা তিরিতিরি।
পঁয়ত্রিশ ফুট মনোলিথ সেই কবে থেকে আছে শুয়ে
তবে থেকে এই গঙ্গার ধারা দিচ্ছে চরণধুয়ে।
সামনে বাঁধানো জলাশয়তেই চরণগঙ্গা মেশে
লোকে বলে, রাজঘর রয়েছে জলতলের শেষে।
উপর থেকে দেখা যায় কটা সিঁড়ি গিয়েছে নেমে
সাধ হয় বড়ো দেখি গিয়ে এই সিঁড়িটা কোথায় থামে।
অবাক লাগে, গায়ে কাঁটা দেয়, অনুভূতি দিশেহারা
ইচ্ছেগুলো আজকে যেন হঠাৎ সৃষ্টিছাড়া।
বিষ্ণুদেবের মাথার কাছে শিবলিঙ্গ বিশাল
পায়ের দিকে প্রাচীন ব্রহ্মা ঢেকেছে তরুর ছাল।

এবার চলা অন্যপথে দুর্গ-প্রাসাদ-মন্দিরে
পাকদণ্ডী পেরিয়ে সে এক ইতিহাসের অন্দরে।
ইতিহাস আজ চুরি করেছে কালচুরিদের কাল
বিষন্ন এই খন্ডহরে স্তম্ভিত মহাকাল।
শলমাজরির আব্রু ছেঁড়া নাচমহলের ঘুঙরু
বাউরি বাতাস শূন্য পেয়ালা ইতিকথা আজ পুরু।
পাশেই সাদা মন্দিরেতে মদনমোহন রাজে
নিত্যপুজো নিয়ম আচার ঘন্টাধ্বনি বাজে।
গাইড বলল, মন্দির ঘিরে রয়েছে বারোটি তালাও
একটি চোখে পড়ল যদিও বাকিগুলো যেন উধাও।
পায়ে পায়ে চলা প্রাচীন দুর্গ উঁচুনিচু পথ সাবধান
দরজা ঠেলে চামসে গন্ধ বাকি চোখে অনুমান-
এইটা বোধহয় এমন ছিল, ওইটা আজ কই?
সবটুকু আজ কালের অতল তেমন কিছুই নাই।
ইচ্ছে হতেই প্রশ্ন করি, ‘এখানে কী বাঘ আসে?’
বড়ো বড়ো চোখে জানাল গাইড, বাঘ নির্জন ভালোবাসে -
লোকে বলে শুনি, মাঝে মাঝে আসে এইটা তাদের ডেরা।
কী সব্বোনাশ! একটাও যদি এসে বলে, ‘কী হে ছোকরা-
সকালে তো খুব ছবি তুললি; এবার তোর ছবি তুলি, দাঁড়া’।
শোনামাত্রই ছুটিয়ে গাড়ি পাহাড় বেয়ে নামা
এদিক-ওদিক কোনওদিক নয় বড়াগুহাতেই থামা।
পাহাড়ের মাঝে জং ধরা গেট ভিতরেতে ঘনকালো
মাথার চালে ছোটো গহ্বর ঢুকছে চিলতে আলো।
চারিধার ভরা সারি সারি ঘর রাজ আমলের দরবার
চামচিকে আর বাদুড়ের বাস জমাট অন্ধকার।
মন্ত্রী-সান্ত্রী, উজির-রাজা, সভাসদ, আমলারা
সময়ের বিষে হারিয়ে গিয়েছে ইতিহাস আজ তারা।
বাইরে আকাশে মেঘ করেছে বিকেলটা তাই ফ্যাকাসে
দেরি না করে ছুটল গাড়ি বৃষ্টিধোয়া বাতাসে।
বৃষ্টি এল ঝিরঝিরঝির খানিক পরে অঝোর
ঘিরে থাকা ঘোর অরণ্যে আমি একলা বৃষ্টিবিভোর।
আধভেজা মন আধো অচেতন ভেজা ভেজা বুনো গন্ধ
সবুজের দলে জলের মিছিলে বাজছে আদিম ছন্দ।
উড়ে আসা মেঘ হঠাৎই উধাও বৃষ্টি সঙ্গে নিয়ে
যেটুকু জল গাছের শাখায় সেটুকু ঝরছে গায়ে।
চিকন চিকন রোদ হেসে যায় ভেজাপাতার ফাঁকে
চলতে চলতে আবার থামি অচিন সুরের ডাকে।
ছোটো থেকে এক কথা মানি মনে, কোনও কিছু ভালো হলে
সবার আগে ঝড় বয়ে যায় জীবনের চলাচলে।
খানিক আগের বৃষ্টি-ঝড়ে তেমনই কি ইশারা?
কেমন যেন থমথমে এই ঘাসজমিটার কিনারা।
সামনে বিরাট বিস্তৃতি তার দূরে বনের রেখা
এপাশে -ওপাশে চোখ চারপাশে কেউতো দেয় না দেখা।
একটা -দুটো, পাঁচটা -ছ’টা গাড়িগুলো একে একে
হাজির হয়ে বনের ধারে চুপটি দাঁড়িয়ে থাকে।
ছোটো -বড়ো কত ক্যামেরার ঝাঁক শিকারির ওত পাতে
হে ঈশ্বর, কৃপা কর ফের তার দেখা পাই যাতে।
ঠিক তখনই ওই দেখা যায় হলুদ ঘাসের আড়াল
এক পা -দু’পা চোখের উপর, নয়তো হাতের নাগাল।
তবুও স্পষ্ট হলুদ -কালোয় আহ্লাদে আটখানা
গাইড জানাল, বাঘিনি এটা, বাঘ কিন্তু না।
ভালোই হল সকালে মামা বিকেলে মামির দেখা
কিন্তু এ কী! খোঁড়ায় কেন? শেষ পা -টা কী ব্যাঁকা?
না না ব্যাঁকা নয়, মাস তিন আগে ফুটেছে সজারু কাঁটা
বনের পথ্য মিথ্যে সবই চিকিৎসাতে ভাটা।
আহা! কতই কষ্ট কত যে ব্যথা চলার গতি রোধে
ওর পায়ের কাঁটা কীভাবে আমার বুকেতে এসে বেঁধে!
দুপাশে ঘাসের বাদাড় ঠেলে মাঝের শূন্য বনে
একলা অবলা বাঘিনি এবার বসল আপন মনে।
প্রতি মুহূর্তে শুষি আনন্দ মানুষ ভিন্ন ভিন্ন
সভ্য সমাজে বাঘিনি রাখল বিরাট প্রশ্নচিহ্ন।
“জঙ্গলে আস জন্তু দেখতে পয়সা উশুল চাও,
জঙ্গল মানে ফেলে যাওয়া ঘর তোমরা কী টের পাও?
অবহেলা কর, যন্ত্রণা দাও তবু দিয়ে যাই ধরা
আমরা না হয় জানোয়ার সব, কিন্তু তোমরা কারা??”

প্রশ্নগুলো উত্তরহীন, দিন শুধু নিভে আসে
আদুল শরীর ধীরে মিশে যায় হলুদরঙা ঘাসে।
রঙে মিলে যায় অনাঘ্রাত প্রকৃতির সান্ত্বনা
আকাশে -মেঘে রক্তিম চিঠি বিপন্ন চেতনা।

~ তথ্য- বান্ধবগড় ~ || ~ বান্ধবগড়ের ছবি ~

 

ট্র্যাভেল ছুটি পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং একটি বাংলা টি.ভি. চ্যানেলের স্ক্রিপ্ট লেখক অভিষেক ভালোবাসেন বেড়ানোর কথা লিখতে।

 

SocialTwist Tell-a-Friend

To view this site correctly, please click here to download the Bangla Font and copy it to your c:\windows\Fonts directory.

For any queries/complaints, please contact admin@amaderchhuti.com
Best viewed in FF or IE at a resolution of 1024x768 or higher