-->
পায়ে পায়ে পাহাড়ে
বিশ্বনাথ মিত্র
~ তথ্য- সান্দাকফু ~ || ~ সান্দাকফুর ছবি ~ || ~ সান্দাকফু ট্রেক রুট ম্যাপ ~
লেডিস ট্রেক? ফুঃ!! যারা কোনদিন ট্রেক করেনি যাক না একবার গুরুদুম-এর রাস্তায় স্যাক ঘাড়ে করে।
NJP থেকে বাইশে মে’র সকালে ঝকঝকে একটা ইন্ডিকা ভিস্তা মিরিক হয়ে আমাদের নিয়ে চলল মানেভঞ্জন। একটু দাঁড়ানো গেল মিরিক লেকে। দেখলাম - ছবি তুললাম - পাইন ঘেরা ছোট্ট এক অপরূপ নৈসর্গের। বেলা হয়ে আসছে, তাড়াহুড়োয় মোমো কিন্তু খাওয়া হোলো না আমাদের কারোরই - সৌমেনদা, রত্নদীপ, অভিজিৎ, মৃত্যুঞ্জয় বা আমার।
প্রকৃতি অবশ্য সে শখ একটু হলেও মিটিয়ে দিল রাস্তায়। ঘন মেঘের ব্যারিকেড রাস্তায় দাঁড় করিয়ে দিল আমাদের। মেঘ সরতেই দেখি মিস্টি একটা রেস্টুরেন্ট আমাদের অপেক্ষায়। বোনাস -মিস্টি হাতে সুস্বাদু মোমো।
অবশেষে চা বাগান আর ওক-পাইন দিয়ে সাজানো দার্জিলিং পাহাড় পেরিয়ে পৌঁছলাম মানেভঞ্জন। মেঘলা বিকেলে বেশ ঠান্ডায় মনের মধ্যে উড়ু-উড়ু টেনশন নিয়ে ‘মানে’র একটা কেঠো হোটেলে গুছিয়ে বসা। ক্যাপ্টেন সৌমেনদার হালকা-পলকা বিধিনিষেধের মধ্যেই একটু একটু নিয়মভাঙ্গা। সন্ধেবেলা সুমনের সাথে আলাপ - সুমন সুব্বা - আমাদের আগামী কয়েক দিনের পথপ্রদর্শক।
অন্যরা কি ভাবছিল জানি না। একটু টেনশন আমার ছিলই ঐ বদভ্যাসটার জন্য - কলেজ জীবনের বন্ধুত্বের স্মৃতি। ছাড়তে পারিনি বা আসলে ছাড়তে চাইও নি। বাকিদের ডোবাবো না তো? খাওয়া দাওয়া কমপ্লিট রাত দশটার মধ্যে। চারদিক ভয়ঙ্কর মেঘের ঘোমটায় ঢেকে নিয়ে মানেভঞ্জন বেশ রহস্যময়ী। কে তার মানভঞ্জন করবে? আমাদের ঘর এয়ারটাইট। তাই বাইরের মেঘের মধ্যে দাঁড়িয়ে রাতের ধোঁয়াশা বাড়িয়ে এলাম একটু। এর অ্যাকশন খুব শিগ্গির। সারারাত কাশি। পরদিন সকাল সাতটায় বেরোনো।
উঠে তো পড়লাম। হাল্কা খাওয়া। প্রথম পর্বে দু’কিলোমিটার দূরের ‘চিত্রে’। পিঠে বোঝা নিয়ে এগিয়ে চলল আমাদের পঞ্চপান্ডব -এক এক জন আলাদা আলাদা ভাবে নিজের মতো করে। চিত্রে যাওয়ার রাস্তাটা বেশ চড়াই - তবে গাড়ি চলার মত চওড়া। মাঝে মাঝেই গর্বিত মাথা উঁচু গাছের সারি। আর একটু জায়গা পেলেই সবুজ ঘাস যেন বসতে বলছে। টানা দু কিলোমিটার ফুসফুসের হাপর টানার শব্দ শুনতে শুনতে এগিয়ে চললাম।
অবশেষে ‘চিত্রে’। ছোট্ট একটা বাড়ী-কাম-রেস্টুরেন্টে ইনস্ট্যান্ট স্যুপ। পনেরো-কুড়ি মিনিট পরে নিজেদের পলিথিনে মুড়ে নিয়ে অল্প বৃষ্টি আর মেঘের মধ্যে দিয়ে আবার চলা শুরু। গন্তব্য নয় কিলোমিটার দুরের টুমলিং। বৃষ্টিধোয়া পাহাড় যে এত সুন্দর হতে পারে - এত অপরূপ হতে পারে মেঘাচ্ছন্ন পাইন ওকের বন বা রাস্তার অলঙ্কার রডোডেনড্রন, তা কোনদিন ভাবিনি। পথের সাথী লোমওয়ালা দুটো বিশালাকৃতির কুকুর। মৃত্যুঞ্জয়ের অল্প বয়স, তারপরে আবার নিয়মিত জগিং-টগিং করে। ও-তো লাফিয়ে লাফিয়ে যাচ্ছে সুমনের সাথে। ক্যাপ্টেনের সাথে আমি পিছনে - ছবি তুলতে তুলতে আর মাঝেমাঝে দেখা হওয়া S.S.B.-এর জওয়ানদের সাথে কথা বলতে বলতে। ইউরিক অ্যাসিডিক অভিজিৎ-ও যেন হঠাৎ কোত্থেকে বেশ এনার্জি পেয়ে গেছে।
যখন সবে মনে হতে শুরু করেছে - আর কত দূর? তখনই দূর থেকে চেনা একটা হাসি –এক মুখ দাড়ি দেখে বুঝলাম রত্নদীপ -সাথে মৃত্যুঞ্জয়। বুঝলাম পৌঁছে গিয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে রিচার্জড হয়ে গেলাম। ঘুরে ফেললাম ছোট্ট পাহাড়ি গ্রামটা। ছোট ছোট তিন চারটে হোটেল আর ট্রেকার্স হাটে প্রকৃতির একদম নিজস্ব টুমলিং। রাস্তাটা বড্ড অদ্ভুত। একবার তা নেপালের একবার ভারতের। এখানে একটা ছেলের সাথে আলাপ হোলো। মনোজ -পুরো ফ্যামিলি নিয়ে এসেছে কলকাতা থেকে। ভালো লাগল হাঁটুর মারাত্মক অস্ত্রোপাচারের পরেও ওর পাহাড়ে চড়ার আগ্রহ আর পাহাড়ের প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা দেখে। ওরাও সান্দাকফু যাচ্ছে।
পরদিন সকালে আমরা বেড়িয়ে পড়লাম সাত কিলোমিটার দূরের গৈরিবাস হয়ে কালপোখরি যাবো বলে। ঝলমলে দিন। গৈরিবাস পর্যন্ত রাস্তা-ও চমৎকার। তবে শেষ এক কিলোমিটার বেশ একটু যেন কষ্ট হয় - বিশেষ করে নামার সময়। আসলে ঘোড়ার ক্ষুরে রাস্তার বোল্ডার না পড়া অংশগুলো বেশ ক্ষতিগ্রস্ত।
গৈরিবাসে সকালের জলখাবার হোলো। সুমন গিয়ে আমাদের আর ক্যামেরার পাস্ নিয়ে এল। পেটভর্তি। মনোজরা আগে চলে গেল। আমরাও চললাম কালপোখরি –আরো চার কিলোমিটার। রাস্তার একপাশে সিঙ্গালিলা ন্যাশনাল পার্কের সবুজ গাছগাছালি দেখতে দেখতে এগোচ্ছি। রাস্তাটা বেশ এবড়ো-খেবড়ো। মাঝে মাঝেই পকেট থেকে লজেন্স-কাজু-কিসমিস খাচ্ছি। আর হাঁটছি খুব চুপচাপ কারণ শুনেছি এই রাস্তায় মাঝে মাঝেই রেড পান্ডা দেখা যায়। যদিও পাইনি দেখা। দূর থেকে কিছু বাড়ীঘর দেখে ভাবলাম পৌঁছে গিয়েছি। কিন্তু কাছে গিয়ে বুঝলাম সেগুলো S.S.B. ক্যাম্প। ওখানে মোবাইল কানেকশন পাওয়া গেল। বাড়ির সঙ্গে হালকা কথা একটু। আবার চলা। এবার সামনে একটা ছোট পুকুর। জলটা একদম কালো। এটাই তাহলে ‘কালপোখরি’। পোখরি মানে পুকুর। আরও একটু এগিয়ে পৌঁছলাম আমাদের হোটেল সিঙ্গালিলায়। ড্রাগন আঁকা বড় বড় কাপে যিনি আমাদের চা পরিবেশন করলেন তাঁর নামটা বেশ - পসন্দ্। সদ্যযৌবনা পসন্দের হাতের চা -এক কথায় অপূর্ব। চা মানে তো শুধু চা নয়! চা পানের স্থান-কাল-পাত্র! স-ব। এ জীবনে ভুলব না। ওখান থেকেই মেঘ-বৃষ্টির মধ্যে দিয়ে দেখে ফেললাম সান্দাকাফুর হোটেল ‘শেরপা শ্যালে’র আবছা অবয়ব। আবার মন উড়ু-উড়ু-ঘুরু-ঘুরু।
রাতে কি খেলাম? আহা-দেশী-থুড়ি-নেপালি চিকেন আর ভাত – বাকিরা রুটি।
সকালে একটু একটু মন খারাপ। কালপোখরি জায়গাটাকে ভালোলাগা আর ভালোবাসা শুরু হয়ে গিয়েছিল। মেঘাচ্ছন্ন বিকেলে কালো পুকুরটার পাড়ে ছোট্ট চোর্তেনের সামনে বসে ইয়াকের ঘরে ফেরা দেখা বা কাজল-কালো মেঘের মধ্যে দিয়ে আরও কালো একা একটা পাখির সোলো ট্রেক -আমাদের চা খাওয়ার জায়গা – বেড়ায় ঘেরা ছোট্ট লনটা -যাঁর হাতে বানানো চা খেতাম তাঁকে -সবাইকে ফেলে রেখে আবার চলা শুরু হল আমাদের - মেঘলা চারদিক আর আরও মেঘলা মন সাথে নিয়ে। সকলে একসাথে রয়ে গেলাম শুধু ছেড়ে আসার ঠিক আগে তোলা গ্রুপ ফটোতে।
প্রথম গন্তব্য দু কিলোমিটার দূরের বিকেভঞ্জন। মেঘলা - ভিজে সবুজের মাঝে একটা চায়ের দোকান। বিকে’র সুন্দরী দোকানি আমাদের চা খাওয়ালেন। আর একগুচ্ছ রডোডেনড্রন চলল আমাদের সঙ্গে বোতল বন্দি হয়ে - নাম তার রকসি।
একটু বিশ্রামের পরই আবার হাঁটা শুরু। আর চার কিলোমিটার দূরেই সান্দাকফু। ঈশ্বরের অপার করুণা। সারা রাস্তায় আমরা অল্প-স্বল্প বৃষ্টি পেয়েছি। আর শেষ একঘন্টা একেবারে মুষলধারে। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়েছি আর বলেছি - প্রভু তোমার দয়ায় প্রকৃতির এই অসাধারণ রূপ দেখতে পেলাম। পলিথিন কভার ভেদ করে জামা-প্যান্ট-জুতো সব ভিজে একশা। পাহাড়ের রিজ গুলো দিয়ে যখন হাঁটছিলাম দুপাশে ম্যাপল আর ওক গাছের সারির স্যালুট নিতে নিতে মনে হচ্ছিল যেন এই তো সেই জীবন - এর জন্যেই তো মানুষ ছুটে বেড়ায় দেশ দেশান্তরে। মনে আর কিছুই থাকে না। শুধু প্রকৃতি - প্রকৃতি আর প্রকৃতি। তিনজন স্থানীয় ভদ্রলোককে নামতে দেখলাম ছাতা মাথায় দিয়ে। জিজ্ঞেস করায় বললেন আর মাত্র ১৫ মিনিট হাঁটলেই সান্দাকাফু। কিন্তু বিশ্বাস করুন তারপর কম করে দেড়ঘন্টা হেঁটেছি আমরা ভয়ঙ্কর পাহাড়ি বৃষ্টির মধ্যে। শেষটুকু শুধুই মনে হয়েছে আর একটু -আর একটু। আসলে বৃষ্টিভেজা অবসন্ন শরীর আর তখন সায় দিচ্ছিল না মনের সঙ্গে। পৌঁছলাম আমাদের হোটেল ‘সানরাইজ’-এ। অসাধারণ একটা পাঁচ বিছানার চিলেকোঠার ঘর আমাদের দেওয়া হয়েছে। মনোজরাও আগেই চলে এসে আমাদের হোটেলেই আছে।
কি যে তৃপ্তি পেয়েছিলাম দুপুরে ঘি দিয়ে খিচুড়ি আর ওমলেট খেয়ে! সে স্বাদ এ জীবনে ভুলব না। তারপর আবার সান্দাকফুর এদিকে সেদিকে ঘোরা। ফালুটের পথে খানিক দূর হেঁটে আসা – এযাত্রায় ফালুট যাওয়া হচ্ছেনা আমাদের। পরদিন সকালে মেঘের আবরণ খসে গিয়ে একদিকে খুলে গেল কাঞ্চনজঙ্ঘা – কুম্ভকর্ণ - অপরদিকে মাকালু আর একটুখানি তিনি - মাউন্ট এভারেস্ট! কিন্তু মন ভরল না।
মন ভরল শেষ বিকেলে – সারা আকাশ রাঙিয়ে সূর্য যখন ডুবে যাচ্ছে। স্বচক্ষে দেখতে পেলাম - লোৎসে আর মাকালুর ফাঁক দিয়ে সেই তাকে – উত্তর-পশ্চিম কোণে নীরব প্রহরীর মত দাঁড়িয়ে। বর্ষা এসে যাচ্ছে বলে সান্দাকফু-ও প্রায় ফাঁকা। মনোজদের দলটাও ফিরে গেছে সকালে। সন্ধে হয়ে আসছে – কমলা-লাল আকাশের ফোরগ্রাউন্ডে এভারেস্টের সিল্যুয়েটের সামনে নিস্তব্ধ আমরা ক’জন। বাকী জীবনের অক্ষয় স্মৃতি হয়ে থাকল ছবিগুলো। রাত্তিরে গুছিয়ে খাওয়া দাওয়া।
পরদিন ২৫ -৫-১১ আমাদের ফেরা। ভোর হওয়ার আগেই সবাই হাজির ভিউ পয়েন্টে, অবশ্য সান্দাকফুর ছোট্ট চত্ত্বরটার যে কোন জায়গাই ভিউ পয়েন্ট ! একটু পরেই উপরের মেঘে রঙ ধরতে শুরু করল। তারপর সোনালি হতে লাগল একে একে তুষারশৃঙ্গ-গুলো। কাঞ্চনজঙ্ঘা রেঞ্জ থেকে এভারেস্ট পর্যন্ত সবাই জেগে উঠছে মেঘের কম্বল সরিয়ে আমাদের বিদায় জানাতে। সঙ্গের ম্যাপের সাথে মিলিয়ে দেখছি – ওই তো পান্ডিম, কাব্রু, কোকতাং, কুম্ভকর্ণ, থ্রি সিস্টার্স, মাকালু, চামলাং! ঘোর ভাঙ্গল ক্যাপ্টেনের ডাকে। গোছগাছ করে তৈরি হতে হবে।
নামব ১৬ কিলোমিটার নীচে - ‘গুরদুম’ আর তারপর ৪ কিলোমিটার দূরের শ্রীখোলায়। পুরো ট্রেকটায় এই পথটা আমার সবচেয়ে কষ্ট হয়েছে। প্রথম জানলাম পাহাড়ে চড়াই-এর চাইতে উতরাই-তে কষ্ট বেশি। অথচ প্রথম ৬-৭ কিলোমিটার বুঝতেই পারিনি কতটা কঠিন পথ আমাদের জন্য অপেক্ষা করে আছে। অসাধারণ সব ফুলের গাছের মধ্যে দিয়ে আসতে আসতে হঠাৎ বুঝলাম এই বারের জার্নি সত্যিকারের টাফ্। শেষ দশ কিলোমিটার রাস্তা একদম খাড়া নিচে নেমে গেছে।
গুরদুমে পেট ভরে খেলাম। ফুরিয়ে আসা জলের স্টক নতুন করে নিয়ে আবার হাঁটা শুরু করলাম। শ্রীখোলা নদীকে সাথে নিয়ে কখনও নীচে কখনও উপরে করতে পৌঁছে-ও গেলাম শেষ অব্দি শ্রীখোলা। শেষটায় একটু ভয় লাগছিল। পাহাড়ি জঙ্গলে ঝড় আর মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছিল শেষ বিকেলে। শ্রীখোলায় হোটেলের কাছে এসে কিন্তু আর ঢুকতে ইচ্ছে করছিল না - দুচোখ ভরে দেখছিলাম বর্ষাস্নাত পাহাড়ি নদীর চঞ্চল রূপ। শেষটায় বকা খেয়ে সম্বিত ফিরল। দৌড়ে ঢুকে গেলাম প্রায় নদীর উপরেই আমাদের ঘরে। আরিব্বাস্ - কি ঘর একখানা! নদীর দিকে লম্বা জানলা – শুধুই কাচের। পুরো ‘একঘর’!
পরদিন সকালে বাটার টোস্ট খেয়ে শ্রীখোলা ব্রীজ পেরিয়ে চললাম রিম্বিকের পথে। সুন্দর রৌদ্রোজ্জ্বল রাস্তা। পায়ের ব্যথাটা বেশ ভোগাচ্ছিল। তাই শেষটুকু কোনরকমে পাড়ি দিলাম। কতদিন পরে রসগোল্লা টাইপের মিষ্টি খেতে পেলাম রিম্বিক বাজারে। তারপর ফুলে ঘেরা হোটেল গ্রীন হিল –পাইন কাঠের ঘর –সামনে ছোট্ট এক চিলতে লন – রাতে ওপারের পাহাড়ে আলো ঝলমলে দার্জিলিং। দুর্দান্ত ঘরোয়া খাওয়া আর দাওয়া।
তারপর রাত পোয়ালে ঘুম-এর পথে সেই NJP জিপে করে। সে অবশ্য অন্য গল্প।
~ তথ্য- সান্দাকফু ~ || ~ সান্দাকফুর ছবি ~ || ~ সান্দাকফু ট্রেক রুট ম্যাপ ~
ভারত সরকারের মহাগাণনিক দপ্তরে কর্মরত বিশ্বনাথের নেশা ভিডিও এডিটিং ও ক্যারম খেলা।