বারাণসী ও এলাহাবাদ

তপন পাল

পূর্বপ্রকাশিতের পর -

~ বারাণসীর আরও ছবি ~

তৃতীয় দিন
এদিন সকাল হল খুব তাড়াতাড়ি। যখন চাকরি করতাম, বড়সাহেবের দাঁতখিঁচুনির ভয়ে ভোর না হতেই উঠতে হত, সঙ্গে অফিসের ভাত দিতে শ্রীমতী পালকেও। গৃহীতাবসর জীবনেও অভ্যাসটা রয়ে গেছে। আমরা যখন বেরোলাম, কলকাতায় সকাল হয়েছে, বারাণসীতে তদবধি আলো-আঁধারি।

বারাণসী থেকে ৩৫ কিমি দুরে চুনার। পথ রেললাইন আর গঙ্গার ধার দিয়ে, পাহাড়ের পথ ধরে। গঙ্গার ধারে বিন্ধ্য পর্বতমালার ২৮০ ফুট উঁচু এক টিলার উপরে সুবিশাল দুর্গ। এবং লোকবিশ্বাসে ভুতের আবাস। সূর্যাস্তের পর দুর্গচত্বরে থাকা নিষেধ। হঠাৎ হঠাৎ নাকি আলো জ্বলে ওঠে, তাপমাত্রা নেমে যায়, গঙ্গায় ভেসে থাকা ডিঙি নৌকার মাঝি শুনতে পান দূরাগত ফিসফিসানি। অতৃপ্ত কামনা কি এমনি করেই তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায় মানুষকে, মৃত্যুর পরেও? আমিও কি তবে মরে ভূত হবো? ঢোকার মুখেই গাইড বলে দেন দুর্গচত্বরে ভ্রমণকালে কোন স্বর শুনলে উত্তর না দিতে, অন্ধকার আনাচে কানাচে উঁকি না মারতে, বিগতযুগের পোশাক পরা কাউকে এখানে ওখানে দেখলে সরে যেতে, দুর্গচত্বরে একা না হতে। গ্যাংস অফ ওয়াসেপুর সিনেমার এক সহপরিচালক এখানে অজ্ঞাত কারণে মারা গিয়েছিলেন - গাইড বলেন তিনি নাকি বারবার এই নির্দেশিকাগুলি লঙ্ঘন করেছিলেন। আমার এক ভূতে অবিশ্বাসী ভাইপো মধুচন্দ্রিমায় মির্জাপুর গিয়েছিলেন ঝরনা দেখতে। ফিরে এসে বিয়ে প্রায় ভাঙে ভাঙে। চুনার দুর্গচত্বরে এক গাইড তাদের ভূগর্ভস্থ বন্দীশালার কুঠরিগুলি (dungeon) ঘুরিয়ে দেখাচ্ছিলেন; পাশেই বধ্যভূমি। আচমকা দুজনেই ফিসফিসানি শোনেন; এবং অলীকশ্রবণ বিবেচনায় ভীত না হয়ে, পিছন ফিরে গাইডকে সেকথা বলতে গিয়ে দেখেন গাইড আক্ষরিক অর্থেই হাওয়া। বেলেপাথরের এই দুর্গের নির্মাতা কে, কেউ জানে না; আর সেইজন্যেই গল্পের গরু বারবার গাছে ওঠে।

লোকবিশ্বাসে ভ্রাতা ভর্তৃহরির জন্য দুর্গটি বানিয়েছিলেন মহারাজা বিক্রমাদিত্য। দুর্গটি নদীর পাশে, দুর্গের দক্ষিণ পূর্বের অনেকখানি অংশ নদীর ভিতরে ঢুকে এসেছে; সেই অংশ অত্যন্ত খাড়াই। এবং সেই কালে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ছিল জলপথ। শত্রু এলে তাকে ওই নদী দিয়েই আসতে হবে, টিলার উপরের দুর্গ থেকে আমি সবদিক দেখতে পাব ও তোপ দাগবো, খাড়াই বেয়ে গড়িয়ে দেবো পাথর। এই অবস্থানগত সুবিধার কারণে পূর্ব গাঙ্গেয় অববাহিকার দখলদারির চাবিকাঠি ছিল এই দুর্গ। দুর্গচত্বরের দেওয়াললিপি জানাচ্ছে সেই দখলদারির সালতামামিঃ
উজ্জয়নীর মহারাজা বিক্রমাদিত্য – খ্রিস্টপূর্ব ৫৬। পৃথ্বীরাজ চৌহান ১১৪১ – ১১৯১। মহম্মদ ঘোরি ১১৯৪। স্বামী রাজা ১৩৪৪। জৌনপুরের মাহামুদ শাহ শারকি ১৪৪৫। দ্বিতীয় সিকন্দর লোদি ১৫১২। বাবর ১৫২৯। শের শাহ সুরি ১৫৩০, হুমায়ুন ১৫৩৬। শের শাহ সুরি পুনরায় ১৫৩৮। ইসলাম শাহ সুরি ১৫৪৫ – ১৫৫২। আকবর ১৫৭৫। মিরজা মুকিম ১৭৫০। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৭৫০, সুজা উদ দৌলা ১৭৬৫। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি পুনরায় ১৭৭৫। পরিশেষে ওয়ারেন হেস্টিংস ১৭৬৫। ১৮৯০ অবধি ছিল কোম্পানির ফৌজের সেনাছাউনি। তারপর দুর্গ আসে নাগরিক প্রশাসনের হাতে। প্রসঙ্গত, শের শাহ সুরি দুর্গ জয় করেছিলেন যুদ্ধ করে নয়, ভালোবেসে - ইব্রাহিম লোদি নিযুক্ত জায়গিরদার তাজ খানের বিধবা পত্নী সারঙ খানিকে বিবাহ করে। দুর্গ থেকে এক গোপন সুড়ঙ্গ গঙ্গায়; বিপদকালের এসকেপ রুট, মতান্তরে রাজকন্যা সোনওয়ার গঙ্গাস্নানের পথ। বর্তমানে দুর্গটি প্রভিনশিয়াল আমর্ড কোর-এর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, তাই কেবলমাত্র সোনহা মন্ডপ ও ভর্তৃহরির সমাধি ছাড়া দুর্গের অভ্যন্তরে সাধারন পর্যটকদের প্রবেশাধিকার নেই। প্রবেশমূল্য নেই, কিন্তু সরকারি খাতায় নাম ঠিকানা সময় লিখে ঢুকতে হয়, বেরোবার সময়েও তাই। লাল সুড়কির পথ বেয়ে দুর্গের শীর্ষে পৌঁছলে ধীরপ্রবাহিণী গঙ্গা ও চুনার শহরের ছবি প্রোজ্জ্বল হয়ে ওঠে।

এর আগে কয়েকবার আসার সূত্রে আমার গাইড লাগে না, বরং বেশ মাতব্বরি করে যারা গাইড নেননি তাঁদের জ্ঞান দিই। মস্ত এক পাথরের কুয়ো, তার অনেক নীচে জল; পাশ দিয়ে জলের কাছে যাওয়ার রাস্তা নেমে গেছে, কিছুটা অংশে সিঁড়ি। নামা যায়, আগে নেমেওছি, তবে উত্তরষাটে সেই উৎসাহ পেলাম না। পাশে কয়েদখানা, ফাঁসির মঞ্চ, পাতালঘর। পুরাণমতে বামন অবতারে ভগবান বিষ্ণু এখানেই তাঁর প্রথম চরণ স্থাপন করেন; তাই এর নাম হয় চরণাদ্রি। উজ্জয়িনীর মহারাজা বিক্রমাদিত্যের ভ্রাতা ভর্তৃহরি এখানে কঠিন তপস্যান্তে জীবন্তসমাধি নিয়েছিলেন। এখনও নাকি তিনি সূক্ষ্ম দেহে এই দুর্গেই অবস্থান করেন। মতান্তরে রাজা সহদেব ১০২৯ সালে বর্তমান দুর্গটি নির্মান করেন। রাজা সহদেবের সাহসী কন্যা সোনহা বা সোনওয়ার সঙ্গে তৎকালীন মাহবার মহারাজা আলহাখন্দের বিবাহস্থল হিসাবে নির্মিত 'সোনহা-মন্ডপ' আঠাশটি স্তম্ভের উপর চন্দ্রাতপের হিন্দু স্থাপত্য, সঙ্গে খিলান, এককালে সেগুলি নাকি সোনায় মোড়া ছিল। সোনহা-মন্ডপের আর এক নাম কুঁয়ারা মন্ডপ। সোনহা কনের সাজে অপেক্ষা করেছিলেন, কিন্তু শুভলগন গেল চলে, প্রেমের অভিষেক ... হল না ... নয়নজলে। বিরহে তাপের দিনে ফুল গেল শুকায়ে- মালা পরানো হল না তব গলে। পাশে সাত মিটার ব্যাসের বাওলি - জল ভরার চৌবাচ্চা – গঙ্গার সঙ্গে যুক্ত। বিষ্টি বাদলা হলে রাজকন্যা সোনওয়া এখানেই নাইতেন। চৌবাচ্চাটি অদ্যাবধি জলপূর্ণ। আরনেস্ট হেমিংওয়ের (জুলাই ১৮৯৯ – জুলাই ১৯৬১) হাভানার ভিলার সুইমিং পুলে এক নিশুতি রাতে দিগবসনা আভা গার্ডনার (ডিসেম্বর ১৯২২ – জানুয়ারি ১৯৯০) নাকি সাঁতার কেটেছিলেন। পাপা হেমিংওয়ে তাই দেখে পুলের জল আর বদলান নি। এখানেও সে রকম কোন গল্প আছে কি না কে জানে!

বাওয়ন খাম্বো কি ছত্রি রাজামশায়ের বাহান্নজন শাসককে পরাভূত করার স্মারক। রাজস্থানের মত এই দুর্গ কোন রাজারাজড়ার বাসস্থান রূপে গড়ে ওঠে নি। প্রথম থেকেই এটি সামরিক সেনাছাউনি। তাই গ্ল্যামারের কিঞ্চিৎ ঘাটতি।
চুনারের অপরাপর দ্রষ্টব্য - ওয়ারেন হেস্টিংস-এর বাড়ি এখন জাদুঘর। পাশে ১৭৮৪ তে নির্মিত সূর্য ঘড়ি।
ভালোবাসার কুয়া তৈরি করেছিলেন মহারাজা বিক্রমাদিত্য তাঁর রানীর অপরাহ্নিক গা ধোয়ার জন্য।
হজরত সুলেমানের দরগা, আকবরের দিন-ই-ইলাহির বিরোধিতা করায় এখানেই বন্দী হয়ে ছিলেন। পাথরখোদাই শিল্পীদের কাজ, ২ কিমি দূরে দুর্গামন্দির ও কালীমন্দির। রেলস্টেশনের কাছে দুর্গা কুণ্ড, কামাক্ষী দেবীর মন্দির ও আরও কিছু মন্দির।

আমার চাকরিজীবনের দ্বিতীয় ঠাঁই ছিল বহরমপুর। অনেকদিন (১৯৮৫ – ১৯৯২) সেখানে ছিলাম, কাজের সূত্রে পুরো জেলা চষে বেড়াতে হত। চুনারের সঙ্গে আমার ভালোবাসার প্রধান কারণ সেই বহরমপুর। এখানেও সেই ওয়ারেন হেস্টিংস, সেই ব্যারাক, দুর্গ থেকে ঢালু পথ বেয়ে নিচে ইউরোপিয়ান সিমেটারি, তার গড়ন স্থাপত্য সময়কাল সবকিছুই বহরমপুরের বাবুলবোনা রেসিডেন্সি কবরখানার মত। লালদিঘি আবাসনের কাছে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণের ডিপো পার হয়ে জাতীয় সড়কে পড়লেই রাস্তার দুধারে মস্ত মস্ত বনস্পতি, তার ছায়া, ডাইনে উঁচু জমি মধুপুর ছাড়িয়ে চলে গেছে পঞ্চাননতলা রেলগেট অবধি। যতবার চুনার আসি, মনে হয় ফেলে আসা সেই দিনগুলির বহরমপুরে আবার ফিরে এসেছি।

সেখান থেকে একান্নপীঠের অন্যতম বিন্ধ্যাচল; বারাণসী থেকে ৭০ কিমি। সেখানকার বিন্ধ্যবাসিনী মন্দিরে নাকি সতীর বামপায়ের আঙুল পড়েছিল। শহরে ঢোকার মুখেই বসে আছেন লাল ভৈরব – অনেকটা আমাদের পঞ্চানন্দের মত। দুর্গা বিন্ধ্যাচলে জনপ্রিয় বিন্ধ্যবাসিনী নামে। মহিষাসুর বধের জন্য দেবতাদের তেজে তিনি আবির্ভূতা হয়েছিলেন এখানে; মহিষাসুরকে সংহারের পর দুর্গা নামে দশভুজারূপে তিনি এখানেই চিরস্থিতা। পরবর্তীকালে দেবী এখানেই শুম্ভ নিশুম্ভকে বধ করেছিলেন।

বিন্ধ্যবাসিনী মন্দির থেকে তিন কিমি রে বিরাজমানা দেবী অষ্টভুজা। পুরাণমতে যশোদার গর্ভজাত মহামায়াকে কংস দেবকীর অষ্টমগর্ভের সন্তান ভেবে আছাড় মারতে উদ্যত হলে, মহামায়া কংসকে কে বধ করবে তা শুনিয়ে বর্তমান মন্দিরস্থলে বিরাজ করতে থাকেন। সংকীর্ণ গুহাপথে ভেতরে গিয়ে মূর্তি দর্শন করতে হয়।
বিন্ধ্যপবর্তের ওপরে একটা গুহার মধ্যে মাকালীর জাগ্রত মুখ কালীখোহ। শুম্ভ-নিশুম্ভ বধের সময় দেবী কৌষিকীর ভ্রূকুটি থেকে আবির্ভূতা হয়েছিলেন কালী। চণ্ড-মুণ্ড বধের জন্য যিনি চামুণ্ডা, যিনি রক্তবীজ বধের সময়ে তার রক্ত পান করে তাকে বধযোগ্য করেছিলেন! সেই চামুণ্ডাদেবীও সশরীরে বিরাজ করেন বিন্ধ্যাচলে। পূজা পান মহাকালী রূপে। কালীখোহতে দেবী হাঁ করে আছেন! রক্তবীজের পাপরক্ত পানে তাঁর সর্বাঙ্গে এত জ্বালা ধরে গিয়েছিল যে শরীর ঠাণ্ডা করতে তিনি হাঁ করে আছেন। ভক্তরা ডাবের জল দেবীর মুখগহ্বরে দিয়ে তাকে ঠাণ্ডা করেন। লোকবিশ্বাস, এই তিন মন্দির দর্শন করলেই (মহাত্রিকোশ পরিক্রমা) ত্রিলোকপরিক্রমা সম্পন্ন হয়। সীতাকুণ্ড, বনবাসকালে সীতা এখানে স্নান করেছিলেন, ভিন্নমতে সীতার জলতৃষ্ণা মেটাতে লক্ষ্মণ বাণ মেরে এই কুণ্ড সৃষ্টি করেন। দেবী অষ্টভুজা ও কালীখোহ দুটি মন্দিরই জঙ্গলাকীর্ণ পাহাড়ের উপর। তবে মানুষের লোভের মুখে পড়ে জঙ্গল ও পাহাড় দুইই যাচ্ছে – জমি সমতল করে গড়ে উঠছে নব নব মন্দির, আশ্রম, গেস্ট হাউস।

ফেরার পথে সারনাথ। সুজাতার পায়েস গ্রহণের ফলে বুদ্ধের প্রতি রুষ্ট হয়ে তাঁর পাঁচ সঙ্গী বুদ্ধকে ছেড়ে ধর্মচর্চার জন্য এখানে আসেন; পিছন পিছন তাদের খোঁজে আসেন বুদ্ধও। এই পাঁচজন শিষ্যের মধ্যেই সিদ্ধার্থ প্রথম মহাধর্মচক্র প্রবর্তন করেন; বলেন চার সারস্বত সত্যের কথা — দুঃখ আছে, সেই দুঃখের কারণ, দুঃখ থেকে মুক্তির উপায় এবং শান্তির জন্য অষ্টাঙ্গিক মার্গ। বৌদ্ধধর্মের উন্মেষ এই সারনাথেই; বৌদ্ধদের চারটি প্রধান তীর্থস্থানের মধ্যে একটি; বাকিগুলি লুম্বিনি, কুশিনগর আর বুদ্ধগয়া। মুসলিম হানায় হারিয়ে যায় সারনাথ। বারাণসীর রাজা চেত সিংহের দেওয়ান জগৎ সিং গৃহনির্মাণ সামগ্রী আহরণকল্পে ১৭৯৩-৯৪ সালে খনন শুরু করেন। পেয়ে যান শ্বেতপাথরের কৌটোর মধ্যে রাখা হাড়, সোনা-রুপোর গয়না, মুক্তো। অনেক পথ পেরিয়ে সেটি ঠাঁই পায় বেঙ্গল এশিয়াটিক সোসাইটিতে। ১৮৩৪ থেকে ১৯০৫-এ স্যার আলেকজান্ডার কানিংহামের নেতৃত্বে ব্রিটিশ প্রত্নতাত্ত্বিকদের খননে নবরূপে উদ্ভাসিত হয় সারনাথ। ফা হিয়েন এবং হিউয়েন সাঙ লিখছেন খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতক থেকে দ্বাদশ শতক পর্যন্ত সারনাথ ছিল শিক্ষাসত্র। বুদ্ধ-পরবর্তী যুগে এই অঞ্চলের নাম হয় সারনাথ; 'সারঙ্গ' অর্থাৎ মৃগ আর 'নাথ' অর্থাৎ প্রভু। জাতককাহিনী আমাদের জানাচ্ছে যে গৌতমবুদ্ধ একসময় এখানেই ছিলেন হরিণদের দলপতি।

পয়লা দ্রষ্টব্য দামেক বা ধামেক স্তূপ, সংস্কৃত ধর্মরাজিকার পালি অপভ্রংশ; খ্রিস্টপূর্ব ২৪৯ সালে সম্রাট অশোক কর্তৃক বুদ্ধের প্রথম শিক্ষাদানের স্থানটিকে স্মরণীয় করে রাখতে নির্মিত, পরবর্তীকালে ৫০০ খ্রিস্টাব্দে সংস্কারিত; ভারতের বৌদ্ধ স্মারকগুলির মধ্যে সম্ভবত সর্বাধিক গুরুত্ব প্রাপ্ত ২৮ মিটার ব্যাস ও ৪৩.৬ মিটার উচ্চতার ইট পাথরের এই সৌধ; সৌধের নিচের দিকের দেওয়ালে গুপ্তযুগের ফুল লতাপাতার চিত্রায়ন, আর ব্রাহ্মী লিপিতে কিছু লেখা। স্তুপের বিবর্তনের ইতিহাসটি ভারি মজার। বুদ্ধপূর্ব যুগে যোগী তপস্বী তাপসদের সমাধিস্থ করা হত বসা ভঙ্গিতে, সমাধিস্থলকে বলা হত চৈত্য। সুগতের মহাপরিনির্বাণের (খ্রিস্টপূর্ব ৪০০) পর তাঁর নশ্বর শরীর দাহ করে চিতাভস্ম আট জায়গায় রক্ষিত হয়; পরবর্তীকালে আরও দু জায়গায় স্মারক গড়ে ওঠে ভস্মাধার ও দেহাবশেষের নিঃশেষিতপ্রায় অঙ্গার ঘিরে। সম্রাট অশোক পরবর্তীকালে অকূর্চের ছোটখাট দেহাবশেষের উপর স্তূপ গড়ে তোলেন। প্রথমযুগের সেই দশ স্মারক তলিয়ে গেছে কালের অতলে, তবে পরবর্তীকালে সারনাথ বা সাঁচি স্তূপ দেখে পণ্ডিতদের মনে হয়েছে পূর্ববর্তী স্মারকের ওপরেই তারা পরবর্তীকালে রূপ পেয়েছে। গোল ঢিপি ঘিরে বড় বড় পাথর, স্তূপের মূল চরিত্র এইই।

ভিক্ষাপাত্র, উত্তরাসঙ্ঘ, সঙ্ঘাটি, অন্তর্বাস, কটিবন্ধনী, জলছাঁকনি, সূঁচ-সুতা(কাপড় সেলাইয়ের জন্য), ক্ষুর (মস্তক মুন্ডনের জন্য) ব্যতিরেকে ভিক্ষুর ব্যক্তিক সম্পত্তির অধিকার গর্হিত। প্রব্রজ্যাকালে চীবর পাট করে তার উপরে বাটিটি উপুড় করে তারা শিষ্যদের ক্লাস নিতেন, কিছু অর্বাচীনের মতে স্তূপের মূল গড়নটি তার থেকেই পাওয়া। স্তূপের ভিতরে কোনও ফাঁকা জায়গা রাখা হত না, ক্ষেত্রবিশেষে প্রকোষ্ঠ ব্যতিরেকে। অনেকানেক জাপানি ভিয়েতনামি তাইওয়ানি ফিলিপিনি নারীপুরুষকে দেখলাম ধূপ আর দীপ জ্বালিয়ে স্তূপ প্রদক্ষিণ করতে, ধ্যানমগ্ন হতে। আমি অবিশ্বাসী ধর্ম-উদাসীন মানুষ, তবু এই মানুষগুলির মুখে আনন্দের আভা দেখে ভাল লাগছিল।

বিস্তৃত প্রাঙ্গণ ঘিরে অনেক নির্মাণ, অনেক পুরাতাত্বিক নিদর্শন। ছবি তুলতে একটু ওদিকপানে গিয়েছিলাম, ফিরে দেখি শ্রীমতী পাল এক এস্তোনিয়ান দিদিমণির সাথে গল্প জুড়েছেন। গল্প কী করে হচ্ছে সেটাই আশ্চর্যের, কারণ দিদিমণির ইংরাজি শ্রীমতী পালের হিন্দির চেয়েও মর্মান্তিক। লুথেরান প্রটেস্টাণ্ট বাড়ির মেয়ে বৌদ্ধ হয়েছেন, সেই টানে এতদূর; তাও এই বয়সে। দিদিমণিকে আমার প্রণাম করতে ইচ্ছা হচ্ছিল; কলেজ জীবনে আমি যা করতে চেয়ে করতে পারিনি তিনি সেটাই করতে পেরেছেন বলে। খ্রিস্টান বা মুসলমানেরা যেমন নব্য ধর্মান্তরিতকে সস্নেহে ক্রোড়ে ঠাঁই দেন, হিন্দু বৌদ্ধ জৈন বা শিখরা ঠিক তেমনটি নন, নব্য ধর্মান্তরিত সেখানে কিছুটা অনাহূত বহিরাগত হয়েই রয়ে যায়; অন্তত এক প্রজন্ম। দিদিমণি এত ফরসা যে তার মুখের দিকে চেয়ে কথা বলতে গেলে চোখ ধাঁধিয়ে যায়, গালের ত্বকের নিচে নীল শিরা উপশিরা অবধি দেখা যায়।

প্রবেশপথের কাছে টিলার মতো অষ্টকোণবিশিষ্ট চৌখন্ডি স্তূপ - বুদ্ধকে তাঁর শিষ্যরা নাকি এখানে বরণ করেন। পিতা হুমায়ুনের সারনাথ ভ্রমণকে স্মরণীয় করে রাখতে বাদশাহ আকবর স্তূপটির সংস্কার করেন। স্তূপটির নিচের অংশ পাথরের, উপরের ছ'কোণা অংশ ইটের; মোগল আমলে তৈরি। ১৫৮৮ সালে শাহজাদা সেলিম এখানে এক দিনের জন্য এসেছিলেন, তাঁর আগমনকে স্মরণীয় করে রাখতে তদানীন্তন শাসক রাজা তোডরমলের ছেলে গোবর্ধন এই অংশ তৈরি করেছিলেন।

গুপ্তরাজাদের গড়া মূলগন্ধকুঠি বিহার বৌদ্ধদের প্রথম সংঘ। ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে ৬১ মিটার উঁচু মূলগন্ধকুঠি গড়েছে মহাবোধি সোসাইটি। গর্ভগৃহে ভগবান তথাগতের লাইফ সাইজ সোনালি মূর্তি। শ্রীলঙ্কার অনুরাধাপুরা থেকে বোধিবৃক্ষের চারা এনে রোপণ করা হয়েছে। সেই গাছ আবার আমাদের গয়ার মূল বোধিবৃক্ষের বংশধর, যার তলে বসে শৌদ্ধধন বোধি লাভ করেছিলেন। সম্রাট অশোকের পুত্রকন্যা, মহেন্দ্র ও সঙ্ঘমিত্রা ওই গাছের চারা শ্রীলঙ্কায় নিয়ে গিয়েছিলেন। বৃক্ষতলে বেদির ওপর বুদ্ধ মূর্তির সামনে অস্মজি, মহানামা, ভদ্দিয়, ওয়াপ্পা, কোন্দানয় পাঁচ শিষ্যের মূর্তি। ফ্রেস্কোয় বুদ্ধের জীবন ও জাতকের উপাখ্যান বিম্বিত। বিহারে ঢোকার মুখেই মস্ত বড় এক ঘণ্টা।

বুদ্ধগয়ার বোধিবৃক্ষ, যার তলায় ধ্যান করে সিদ্ধার্থ গৌতম বোধিলাভ করে বুদ্ধ হয়েছিলেন, একটি অশ্বত্থ (Ficus religiosa) বৃক্ষ । বোধিবৃক্ষে জলসিঞ্চন ও বোধিবৃক্ষ বন্দনা বৌদ্ধদের এক পুণ্যকাজ। বৌদ্ধবিহারে বোধিবৃক্ষের উপস্থিতি অপরিহার্য। ধ্যানমগ্নকালে বোধিবৃক্ষ বুদ্ধকে ছায়া প্রদান করায় বুদ্ধ বোধিবৃক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।"যস্সমুলে নিসিন্নো বা সব্বারি বিজযং অকা, পত্তো সব্বঞ্ঞু তং সত্থা বন্দে তং বোধিপাদপং। ইমে এতে মহাবোধি লোকনাথেন পুজিতা, অহম্পি তে নমস্সামি বোধি রাজা নমত্থু তে" - অর্থাৎ- যাতে ভিত্তি করে শাস্তা সকল অরি(শত্রু) সমূহ পরাজিত করে সর্বজ্ঞতা জ্ঞান প্রাপ্ত হয়েছিলেন ,সেই পূজার্হ (ভক্তির পাত্র) বোধিদ্রুমকে বন্দনা। জ্ঞানলোকে আলোকিত করা এই মহাবোধি বুদ্ধ কর্তৃক পূজিত, আমিও বন্দনা করছি। হে মহাবোধিরাজ আপনাকে বন্দনা (নমস্কার) করছি।

পাশে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের জাদুঘর। তিব্বতি মন্দির, প্রার্থনা চক্র ঘোরালেই হাতে গরম কাগজের টুকরো বেরিয়ে আসছে, তাতে ওম মনিপদ্মে হুম লেখা। পাশেই কাম্বোডিয়ান মন্দির, বেলেপাথরের অভয়মুদ্রার বুদ্ধ অবাক চোখে চেয়ে আছেন, কারণ কর্তৃপক্ষ মন্দিরটিকে অবৈধ ঘোষণা করে ভেঙে ফেলতে উদ্যত। থাই মন্দিরে বুদ্ধ আশি ফুটের, আর টুরিস্ট লজের পিছনে প্যাগোডা ধাঁচের জাপানি মন্দিরের পরিবেশটি ভারি শান্ত। বার্মিজ মন্দিরটি অতিপুরাতন, ১৯০৮ এ নির্মিত। লাল হলুদ চিনা মন্দিরটি ১৯৩৯ সালের, চিনা লন্ঠনে আর পায়রায় ভরপুর। হিউয়েং সাং কোন পথ ধরে এসেছিলেন তার রুট ম্যাপ দেওয়ালে।

বারাণসীতে ফিরে কিঞ্চিৎ বিশ্রাম, ও মন্দির গমন।

বছর সাতেক আগে যখন আমরা প্রথমবার এই হোটেলে উঠি, হোটেলমালিক বলেছিলেন আমাদের কোনও অফার নেই, রিবেট নেই, অফ সিজন ছাড় নেই, তবু লোকে আমাদের হোটেলে ওঠে কেন জানেন; আমরা বাবার সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান দেখা করিয়ে দিই। মিথ্যা বললে অধর্ম হবে, তা তারা দেনও। লোকটি কতকটা আমার টাইপের, মন্দিরে যাওয়ার জন্য পোশাক পরিবর্তনের কথা তুললেই বলেন আরে বাপের কাছে ছেলে তো হেগেমুতেই যায়; খালি পেটে যাওয়ার কথা তুললেই বলেন সন্তান না খেয়ে থাকলে বাবা কষ্ট পাবেন, ভরপেট খেয়ে নাও আগে।
বিশ্বনাথ গলির খাবারদাবার পেরিয়ে, কঠোর নিরাপত্তাবেষ্টনী পেরিয়ে, কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরে। ঢোকার মুখেই ধুন্দরাজ গণেশের ছোট মন্দির, কিন্তু পুত্র স্নেহান্ধ মহাদেব নাকি নিয়ম করে দিয়েছেন যে ধুন্দরাজ গণেশের পূজা না করে কেউ তার পূজা করতে পারবে না। আরতি শেষ হয়ে গেছে, আমরা বাবার সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান। রুপোর বেদির উপর ৬০ সেন্টিমিটার উঁচু ও ৯০ সেন্টিমিটার পরিধির শিবলিঙ্গ। তার মাথায় ঘি দুধ দই চন্দন কর্পূর আতপ চাল ফুল বেলপাতা ধূপ দীপ দেওয়ার পর এক ঘড়া করে গঙ্গাজল। মন্দিরটি মোটেও বড় নয়, ১১৯৪ এ কুতুবুদ্দিন আইবককে দিয়ে শুরু, তারপর মন্দিরটি এতবার ভাঙা হয়েছে যে বড় করে আর বানানো হয়ে ওঠে নি। আমারও একবার বাবার সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা ছিল। অবসর নিয়েছি, ১৯৮০র যে দিনটিতে কাজে ঢুকেছি সেই দিন থেকে এই দিনটির প্রতীক্ষায় ছিলাম। রোজ সকালে গাইতাম 'ভালোয় ভালোয় বিদেয় দে মা আলোয় আলোয় চলে যাই'। অবশেষে শ্রাবণের বৃষ্টিধারার মত ঈশ্বরের অপার দাক্ষিণ্য নেমে এল আকাশ হতে, পাপমুক্তি ঘটাতে। ঘটনাবিহীনভাবে অবসর নিতে পারার জন্য বাবার তো একটা ধন্যবাদ প্রাপ্য হয়।

পাশেই অন্নপূর্ণার মন্দির; নারায়ণ সান্যালের ভাষ্য অনুযায়ী প্রতিষ্ঠাতা নদীয়া রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা ভবানন্দ মজুমদার। আকবরের সেনাপতি মানসিংহ যখন যশোরাধিপতি প্রতাপাদিত্যকে ঢিট করতে বঙ্গভূমে, তার সেনাবাহিনীকে রসদ সরবরাহ করে ভবানন্দের উত্থান। পরিবারটি তাদের স্বজাতির প্রতি বিশ্বাসঘাতকতার চরিত্র বজায় রেখেছিল দেড়শো বছর, ১৬০৬ – ১৭৫৭। পলাশীর যুদ্ধে এনারা ক্লাইভের খোঁয়াড়ে শোভা পাচ্ছিলেন, তাদের তৈলনিষেকে অভিভূত ক্লাইভ এনাদের নাকি কামান উপহার দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে বিধবাবিবাহের বিরুদ্ধবাদীদের নেতৃত্ব দেন এনারাই।

কবি কালিদাস বলেছেন 'অন্নচিন্তা চমৎকারা কাতরে কবিতা কুতঃ'। নাগারা স্থাপত্যের বর্তমান মন্দিরটি অষ্টাদশ শতকে পেশোয়া বাজিরাও কর্তৃক নির্মিত। এখানে একবার দেখা করে যেতে পারলে তার নাকি সারাজীবন খাওয়ার চিন্তা থাকে না। শিব ও পার্বতীর সংসারের ঘোর দারিদ্র্য। পার্বতী তখনো অন্নপূর্ণা হয়ে ওঠেননি। পার্বতী একদিন শিবকে কথায় কথায় বললেন মনের কথা; দারিদ্র্য তাঁর আর সহ্য হয়না। মাথার চুল ও সর্বাঙ্গে তেল না পড়ে রুক্ষ, নিত্য সিদ্ধিপাতা বেটে হাতে কড়া। এক পুত্র গজানন চারহাতে খায়; অপরপুত্র ষড়ানন ময়ূর নিয়ে খেলে বেড়ায়। সংসারে অন্ন নেই। পার্বতীর হাহুতাশ শুনে মহাদেব ভিক্ষায় বেরোলেন। পার্বতী আর কি করেন, বাপের বাড়ি যাবেন তার উপায় নেই, কারণ স্বামী ধনহীন হলে বাপের বাড়িতে মেয়েদের কোনো সম্মান নেই। পরিশেষে তিনি অন্নপূর্ণা রূপ ধারণ করে বিশ্বের সমস্ত অন্ন একত্র করে নিজের সংগ্রহে রাখলেন। এদিকে মহাদেব আর ভিক্ষা পান না। অবশেষে তিনি লক্ষ্মীর কাছে গেলেন অন্নের জন্য। লক্ষ্মী তাঁকে বললেন 'অন্ন তুমি কোথায় পাবে? সব অন্ন তো তোমার ঘরণীর কাছে'। বিস্মিত মহাদেব ঘরে ফিরে দেবীর কাছে ভিক্ষা চাইলেন।
অন্নপূর্ণা মন্দিরের প্রসাদ একমুঠো চাল। বাড়ি ফিরে ওই চাল তোমার চালের ভাঁড়ারে মিশিয়ে দেবে, মা অন্নপূর্ণার অনুগ্রহে তোমার জীবনভর ভাতের অভাব হবে না। আখ্যানটিতে কি ভারতীয়দের দুবেলা আহারপ্রাপ্তি বিষয়ক প্রগাঢ় নিরাপত্তাহীনতা সূচিত? আমরাই তো ছিয়াত্তরের মন্বন্তর আর পঞ্চাশের আকাল পেরিয়ে এসেছি, ইহজীবনেই দেখেছি ষাটের সত্তরের দশকের কর্ডনিং, পাঁচ টাকা কিলো চাল – বাঙালির গম যব মাইলো ভক্ষণ। সম্ভবত সেই জনইতিহাসই বিধৃত এই প্রথায়। আমাদের মাতৃস্থানীয়েরা যে বলেন 'বাবা এলি কিছু মুখে না দিয়ে যাস না' – তার পিছনেও সম্ভবত এই একই অনিশ্চয়তা বোধ কাজ করে। কে জানে বেচারার সকাল থেকে কিছু জুটেছে কি না – তার চেয়ে বাবা এক গাল খেয়ে যা। একদা এক মেক্সিকান প্রৌঢ়ার সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল। তাঁর মধ্যে এই অভ্যাসটি দেখেছিলাম - দেখা হলে কিছু না খাইয়ে ছাড়তেন না। হতে পারে সেই একই মানসিকতা – দুটোই গরিব দেশ, গরমের দেশ!

পাশেই সাক্ষী বিনায়ক খোলা আকাশের নিচে বসে আছেন। ইনি আপনার কাশী বিশ্বনাথ দর্শনের সাক্ষী। চত্বরের মধ্যেই জ্ঞানবাপি মসজিদ বা আলমগিরি মসজিদ, মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব কাশী বিশ্বনাথ মন্দির ধ্বংস করে মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ দিয়ে এই মসজিদ নির্মাণ করিয়েছিলেন। ১৭৮০ সালে হিন্দু মারাঠা রানি অহল্যাবাই হোলকার কাশী বিশ্বনাথ মন্দির পুনর্নির্মাণ করেন। নবনির্মিত মন্দিরটি মসজিদের পাশেই নির্মিত হয়। দুইয়ের মাঝে কাঁটাতারের বেড়া; মধ্যিখানে জ্ঞানবাপি কূপ; আক্রমণের সময় প্রধান পুরোহিত স্বয়ং জ্যোতির্লিঙ্গটি রক্ষা করার উদ্দেশ্যে সেটি নিয়ে এই কুয়োয় ঝাঁপ দিয়েছিলেন বলে বিশ্বাস। মন্দিরচত্বরে ছোটো ছোটো অনেকগুলি মন্দির - কালভৈরব, দণ্ডপাণি, অবিমুক্তেশ্বর, বিষ্ণু, বিনায়ক, শনীশ্বর, বিরূপাক্ষ ও বিরূপাক্ষ গৌরীর।

- ক্রমশঃ -

~ বারাণসীর আরও ছবি ~

হিসাবশাস্ত্রের স্নাতকোত্তর শ্রী তপন পাল West Bengal Audit & Accounts Service থেকে অবসর নিয়েছেন সম্প্রতি। তাঁর উৎসাহের মূলক্ষেত্র রেল - বিশেষত রেলের ইতিহাস ও রেলের অর্থনীতি। সেবিষয়ে লেখালেখি সবই ইংরাজিতে। পাশাপাশি সাপ নিয়েও তাঁর উৎসাহ ও চর্চা। বোম্বে ন্যাচারাল হিস্ট্রি সোসাইটি এবং ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ফ্যান ক্লাবের সদস্য শ্রী পালকে বাংলা লিখতে শিখিয়েছে 'আমাদের ছুটি'। স্বল্পদূরত্বের দিনান্তভ্রমণ শ্রী পালের শখ; কারণ 'একলা লোককে হোটেল ঘর দেয় না।'

 

SocialTwist Tell-a-Friend
 

To view this site correctly, please click here to download the Bangla Font and copy it to your c:\windows\Fonts directory.

For any queries/complaints, please contact admin@amaderchhuti.com
Best viewed in FF or IE at a resolution of 1024x768 or higher