কাকাবাবু হেরে গেলেন?
দময়ন্তী দাশগুপ্ত
~ তথ্য- আন্দামান || আন্দামানের আরো ছবি ~
মনটা বেশ খারাপ - সকালবেলাতেই খবরটা পেলাম – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় চলে গেলেন – আর সেইসঙ্গে আমার অনেকটা ছেলেবেলা...।
দিকশূন্যপুরের নীলু নয়, বরং কাকাবাবু নেই এটা ভাবলেই মনে হচ্ছিল কী যেন একটা হারিয়ে ফেললাম। ভাবতে ভাবতেই ফিরে যাচ্ছিলাম ছেলেবেলায় – দুই ভাই-বোনে কাড়াকাড়ি করে পূজাবার্ষিকী পড়া, ছোট আনন্দমেলায় ‘পাহাড় চূড়ার আতঙ্ক’-র টানটান উত্তেজনা – পরের সংখ্যায় সন্তু-কাকাবাবুর কী হবে সেই উৎকন্ঠা, আর টিভি-কম্পিউটার এমনকী ইলেকট্রিসিটিহীন সেই অন্য শৈশবে বড় পর্দায় ‘সবুজ দ্বীপের রাজা’ – প্রথম সমুদ্র দেখা – আন্দামান – সেলুলার জেল। শেষ দৃশ্যে ‘বন্দে মাতরম’ সঙ্গীতের অদ্ভুত রোমাঞ্চ অনুভূতি...।
মনে পড়ছিল কয়েকবছর আগের আন্দামান ভ্রমণের টুকরো স্মৃতি।
অনেকবছর পর এক বৃষ্টিভেজা দুপুর-বিকেলে সেলুলার জেলের সামনে দাঁড়িয়ে শৈশবের সেই অনুভূতিই যেন ফিরে এসেছিল। শেষ বিকেলে এক পশলা বৃষ্টির পর চারপাশটা কেমন থমথমে হয়েছিল। জেলের নিস্তব্ধ করিডরে শুধু নিজেদের পায়ের শব্দ। পরপর অন্ধকার কুঠুরি - লোহার গারদ দেওয়া। কত মানুষের জীবনই হয়তো কেটে গিয়েছে এই অন্ধকারে। ‘সবুজ দ্বীপের রাজা’-র প্রথম দৃশ্যে দেখা সেলুলার জেল, বিপ্লবী গুণদা তালুকদারের কাহিনি মনের মধ্যে ফিরে ফিরে আসছিল।
১৯০৬ সালে সুবিশাল এই জেলটির নির্মাণকার্য শেষ হয় অসংখ্য কয়েদীর ঘাম ঝরানো পরিশ্রমে। সাতটি শাখায় মোট ৬৯৬টি সেল বা খুপরি ঘর ছিল। এর থেকেই নাম হয় সেলুলার জেল। মাঝের গম্বুজের মাথায় ছিল অবজার্ভেশন টাওয়ার। একেকটা ব্লকের সামনে অন্য ব্লকের নিরেট দেওয়াল। যাতে বিভিন্ন ব্লকের কয়েদিরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ না করতে পারে। দুটো ব্লকের মাঝে বেশ কিছুটা খোলা জমি। সামনেই ফ্লগিং ট্র্যাংগেল – কয়েদিদের বেত মারা হত এখানে। বাঁদিকে এখন তৈরি করা হয়েছে শহিদ বেদী। ডানদিকে চালাঘরে ছিল ওয়ার্কশপ আর ঘানি – সারাদিন সেখানে অমানুষিক পরিশ্রম করে দিন কাটত কয়েদিদের। উঠোনের একপাশে রান্নাঘর, আরেকদিকে ফাঁসির কড়িকাঠ।
১৯৭৯ সালে সেলুলার জেলকে ‘জাতীয় স্মারক’-এর সম্মান দেয় ভারত সরকার। ভূমিকম্প আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের আক্রমণে এই জেলের চারটি উইং ধ্বংস হয়ে গেছে বহুদিন আগেই। ভেঙ্গে যাওয়া অংশে গড়ে উঠেছে সরকারি গোবিন্দবল্লভ পন্থ হাসপাতাল।
নির্মাণের একশো বছর পর ঐতিহাসিক সেই তীর্থক্ষেত্রে আমি দাঁড়িয়ে। সত্যি,তীর্থক্ষেত্র বলেই মনে হয়েছিল আমার। ভারতবর্ষের কোন মন্দির-মসজিদের সামনে দাঁড়িয়ে কখনো এই অনুভূতি হয়নি। মনে হয়েছিল,সেলুলার জেলে দর্শনার্থীরা জুতো খুলে ঢোকেনা কেন? কত মানুষ তাঁদের জীবন দিয়ে দিয়েছেন ভারতবর্ষের স্বাধীনতার জন্য। আর আমরা, সেই স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়ে তাঁদের কি এইটুকু শ্রদ্ধাও জানাতে পারিনা?
মন খারাপ করা মেঘলা বিকেলে গাইডের মুখে সেলুলার জেলের ইতিবৃত্ত শুনতে শুনতে কল্পনায় ভেসে উঠছিল ফেলে আসা দিনগুলোর অদেখা ছবি। আজও যেন চোখ বুজলেই শুনতে পাওয়া যায় শিকলের শব্দ, ঘানির আওয়াজ আর কয়েদিদের ওপর নৃশংস অত্যাচারের প্রতিধ্বনি। ডেভিড বেরির শূন্য চেয়ার,ঘানিঘর আর ফাঁসির দড়ি সেদিনের নীরব সাক্ষী হয়ে ওঠে।
রসদ্বীপ, ভাইপার আইল্যান্ড সর্বত্রই ছড়িয়ে রয়েছে ব্রিটিশ শাসনের ইতিহাসের ছবি। পোর্টব্লেয়ারের আবেরদিন জেটি থেকে চোখে পড়ে রস দ্বীপ। দ্বীপে ঢোকার পর খানিকটা হেঁটে গেলে নজরে পড়ে গভর্মেন্ট প্রেস-এর ভেঙ্গে পড়া বাড়িটা। বিশাল এক বটগাছের ঝুরি আর শেকড়বাকড়ের আলিঙ্গনে হারিয়ে গেছে ইঁটের গাঁথুনি। ক্লাব হাউসের বাঁধানো চাতাল, সুইমিং পুলের ভাঙ্গা চৌবাচ্চা, বরফকল ও বেকারির ভগ্নাবশেষ পেরিয়ে সুরকি বাঁধানো রাস্তা উঠে গেছে ওপরে। একদিন এই পথেই চলত কয়েদিদের টানা বাহারি পিতলের রিক্সা। টিলার একেবারে মাথায় বিশাল এক চার্চের ধ্বংসাবশেষ। এইখানেই কোথাও পাঞ্জা আর তার সঙ্গীরা শলাপরামর্শ করছিল। সেই ঘনসবুজ নারকেল গাছে ভরা দ্বীপের অপরূপ সৌন্দর্য ছেলেবেলার স্মৃতিকে আবারও ফিরিয়ে আনল। টিলার মাথায় বাঁয়ে অল্প এগোলে নিশ্চিহ্নপ্রায় কমিশনারের বাংলো আর ডানদিকে কিছুটা এগোলেই নারকেল গাছের ফাঁক দিয়ে চোখে ভেসে ওঠে নীল সমুদ্র আর নির্জন রুপোলি সৈকত।
আন্দামানে প্রথম জেল গড়ে উঠেছিল ভাইপার দ্বীপে, ১৮৬৪-৬৫ সালে। ১৮৭২ সালে তদানীন্তন ভাইসরয় লর্ড মেয়োকে হত্যা করার অপরাধে এই ভাইপার দ্বীপেই ফাঁসি হয় বিপ্লবী শের আলির। আজও ভাইপার দ্বীপের টিলার মাথায় কয়েদীদের স্মৃতি বুকে করে নীরবে দাঁড়িয়ে আছে লালরঙের বাড়িটা। শেষ বিকেলে নেমে আসছি টিলার ওপর থেকে, কানে ভেসে আসে গাইডের কথাগুলো – ভাইপার দ্বীপ ভারতীয়দের কাছে পীঠস্থান...শহীদদের স্মৃতি জড়ানো এর প্রতিটি ধূলিকণায়...। ফিরে তাকিয়ে দেখি লাল সূর্য অস্ত যাচ্ছে দেড়শো বছরের প্রাচীন ফাঁসিকাঠের পিছনে।
কিন্তু গুণদা তালুকদারকে নয়,আমিতো ‘সবুজ দ্বীপের রাজা’-কে খুঁজছিলাম। আর দুচোখ ভরে অপার বিস্ময়ে দেখছিলাম ঘন নীল সমুদ্র,রুপোলি বেলাভূমি,আর নারকেল গাছে ছাওয়া সবুজ দ্বীপের অপরূপ শোভা।
পোর্টব্লেয়ার থেকে হ্যাভলক যাওয়াই আমার প্রথম জাহাজে চড়ার অভিজ্ঞতা। আন্দামানে পৌঁছেছিলাম সন্তুদের মতোই প্লেনে। আকাশ থেকে সন্তুর মতোই মনে হচ্ছিল,সমুদ্রের জলটা এতটাই নীল যেন কলম ডোবালে লিখেও ফেলা যাবে তাই দিয়েই। আর সেই ঘন নীলের বুকে পান্নার মালার মতো দ্বীপগুলোকে দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম। এবারে জাহাজে চড়ে আবার মনে পড়ছিল চলচ্চিত্রে নীল সমুদ্রের বুক চিরে জাহাজের এগিয়ে চলার সেই দৃশ্য। জেটির কাছাকাছি সবুজ জল ক্রমশ সমুদ্রের গভীরে কালচে নীল হয়ে উঠছে আর সেই ‘কালাপানি’র বুকে সাদা ফেনা ছড়িয়ে এগিয়ে চলেছে আমাদের জাহাজ। সাদা ফেনার মাথায় ঝিকমিক করছে রোদ্দুর। জলের বুকে লাফ দিচ্ছে উড়ুক্কু মাছের দল। চোখে পড়ছে কালো সমুদ্রের বুকে জেগে ওঠা আদিম জঙ্গলে ঘেরা সবুজ দ্বীপ আর সোনালি বালুকাবেলা।
পোর্টব্লেয়ার থেকে মিডল আর নর্থ আন্দামানের ভেতর দিয়ে যে চওড়া গাড়ির রাস্তা একেবারে মায়াবন্দর হয়ে দিগলিপুর পর্যন্ত চলে গেছে তার নাম আন্দামান ট্রাঙ্ক রোড। এই পথেই পোর্টব্লেয়ার আর রঙ্গতের মাঝে জারোয়া রিজার্ভ। মায়াবন্দর থেকে শেষ রাতে রওনা দিয়ে বারাটাং পৌঁছেছি বেলা সাড়ে এগারটা নাগাদ। বার্জে করে সাগর পেরোবে গাড়ি, তার লম্বা লাইন পড়েছে। সেই অবকাশে আমরা আবার নৌকায় উঠে পড়ি – গন্তব্য লাইমস্টোন কেভ। নীল-সবুজ জলে ভেসে যেতে যেতে ঢুকে পড়ি ম্যানগ্রোভ অরণ্যের গভীরে। নৌকো কখন সমুদ্র ছেড়ে খাঁড়ি দিয়ে চলেছে – দুপাশের জঙ্গল নিবিড় হয়ে ছুঁতে চাইছে আমাদের। নৌকো থেকে নেমে কাঠের ব্রিজ পেরিয়ে ধানক্ষেত, পাহাড়ি উঁচুনিচু পথে এগিয়ে চলা – জঙ্গল ক্রমশ গভীর হতে থাকে। আবছা অন্ধকার গুহার ভেতরে ঢুকে মুগ্ধ হই – প্রকৃতি তার আপন খেয়ালেই পাহাড়ের গায়ে সাদা আর হলুদ চুনাপাথরে গড়েছে অপূর্ব সব ভাস্কর্য। এ যেন আদিম অরণ্যের এক রূপকথা।
লাইমস্টোন কেভ ঘুরে আমরা যখন গাড়িসমেত বার্জে চেপে জিরকাটাং পৌঁছালাম তখন প্রায় বেলা তিনটে বাজে। এখান থেকেই জারোয়া রিজার্ভে ঢুকতে হয়। গাড়ি যাবে পুলিশ প্রহরায় – একা নয়, পুরো একটা গাড়ির দল অর্থাৎ কনভয়ের সঙ্গে। পথে কোথাও গাড়ি থামানো বা ছবি তোলা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। চেকপোস্টের সামনে গাড়ির সারি। জেটির একপাশে ছোট একটা হোটেলে দুপুরের খাওয়া সারছি, হঠাৎ চোখে পড়ল পাশের জঙ্গল থেকে এক জারোয়া রমণী তার ছোট ছেলেকে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে এগিয়ে গেল পুলিশ চৌকির পাশে একটা অস্থায়ী চালাঘরের দিকে। আশপাশ থেকে আরও কয়েকজন জারোয়া অর্ধনগ্ন নারী-পুরুষ জড়ো হল সেখানে। চালাঘরের বাইরে তখন ক্যামেরা হাতে ট্যুরিস্টদের ঠেলাঠেলি। আর দরজা আটকে দাঁড়িয়ে তাদের কাছে হাত পাতছে হাফপ্যান্ট-গেঞ্জি-মাথায় টুপি পরা এক জারোয়া তরুণ। সভ্যতার বিষাক্ত ছোঁয়া সত্যি মানুষকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে! মনে পড়ল বন্য জারোয়াদের সম্বন্ধে 'সবুজ দ্বীপের রাজা'-র সেই উক্তি –"তোমাকে কে বলেছে, এই জারোয়ারা অসভ্য? আর এই সাহেবরা কিংবা তোমরা সভ্য?"
বেলা চারটেয় দিনের শেষ কনভয়ের যাত্রী আমরা। জারোয়া রিজার্ভের গভীরে যত ঢুকছি ততই বদলে যাচ্ছে প্রকৃতি – অরণ্যের চরিত্র – আদিম ঘন জঙ্গল মাথা ঠেলে তুলেছে আকাশে। পাতার ফাঁক দিয়ে অন্ধকার সরিয়ে তেরছাভাবে এসে পড়েছে শেষ বিকেলের সোনাঝরা রোদ্দুর। শহুরে পোর্ট ব্লেয়ার,সবুজে সাজানো নীল-হ্যাভলক -এভিস দ্বীপ, এমনকী লাইমস্টোন কেভের পথের থেকে একেবারে অন্য রকম জারোয়া রিজার্ভের আদিম নিবিড় জঙ্গল। অচেনা গাছের ভিড়ে চিনতে পারি বড় বড় বাঁশঝাড়, জংলি পাম আর বুনো কলাগাছ। দ্রুত বেগমান গাড়ির জানলা দিয়ে দুচোখে ছুঁয়ে মনে হচ্ছে যেন ফিরে গেছি হাজার হাজার বছর আগে। এখানে সময় যেন থমকে আছে এখনও। দুপাশের ঘন আদিম জঙ্গলের মাঝে এই মসৃণ কালো পিচের রাস্তা বড় বেমানান লাগে। কনভয়ের গাড়িগুলো সব এখন আলাদা আলাদা হয়ে গেছে। আমাদের আগে-পিছে আর কোন গাড়ি চোখে পড়ছেনা। হঠাৎ-ই সবাই কেমন চুপ হয়ে গেছে – এমনকি সঙ্গের দুই শিশু-ও। আমরা যেন অনধিকার প্রবেশ করেছি এই অরণ্যে। পথে বেশ কয়েকবারই দেখা হয় জারোয়াদের দলের সঙ্গে। সভ্য মানুষ দেখে ওরা এখন অভ্যস্ত। বরং কৌতূহলী চোখে তাকায়। কোমরে-মাথায় লাল ফেট্টি বাঁধা প্রায়নগ্ন নারী-পুরুষ সন্ধ্যেবেলায় ঘরে ফিরছে শিকার আর ফলমূল সংগ্রহ করে। পথের পাশে হঠাৎ দেখি মুখে সাদা রঙের আঁকিবুকি কাটা হাসিমুখ বালকের দল। সবাই যেন কালো পাথর কুঁদে তৈরি করা ভাস্কর্য – বনের আদিম গাছ-লতার মতই সুন্দর।
পথ চলতে চলতেই গল্প বলে আমাদের ড্রাইভার শঙ্কর – আগে সভ্য মানুষ দেখলেই জারোয়ারা হয় আক্রমণ করত, নয় পালিয়ে যেত। জারোয়া রিজার্ভের মধ্যে দিয়ে রাস্তা তৈরির সময়ও দুপাশে ইলেকট্রিক তার দিয়ে বেড়া করে রাখা হয়েছিল। বেশ কয়েকবছর আগে জারোয়াদের একটি বাচ্চা ছেলে গাছ থেকে পড়ে আহত হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে এসে সারিয়ে তুলে আবার জঙ্গলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। জারোয়াদের সঙ্গে সভ্যতার মূল স্রোতের বন্ধুত্বের শুরু হয়তো এই ঘটনাই। তবে এখনো জারোয়াদের প্রধান অংশ সভ্যতার থেকে দূরে জঙ্গলের গভীরে থাকতেই পছন্দ করে – এমনকী পথে আমাদের দেখা জারোয়ারা আধুনিক সভ্যতার সংস্পর্শে আসায় তাদের কাছে ব্রাত্য! কে জানে সেখানে আজও কোন সত্যিকারের 'রাজা' হয়তো বেঁচে আছেন, তাদের রক্ষা করছেন সভ্যতার বিষবাষ্প থেকে।
সভ্যতার শহরে পৌঁছে যাওয়ার আগে আদিম অরণ্যের নিবিড় গন্ধে ফুসফুস ভরে নিতে নিতে ছেলেবেলার মতোই অবাক বিষ্ময়ে ভাবি,সত্যি,একবিংশ শতাব্দীতেও ভারতবর্ষের এক দ্বীপে, পৃথিবীর আদিমতম এক অরণ্যে এমন মানুষ আজও আছে যারা আগুন জ্বালাতেও শেখেনি – স্বার্থপর,আত্মকেন্দ্রিক এই নগরসভ্যতাকে অস্বীকার করে আজও তারা আদিম গোষ্ঠীজীবনে বাঁচার প্রয়াসে রত!
এবছরও মেয়ের কাছ থেকে টেনে নিয়ে আনন্দমেলার পাতা উল্টে সন্তু-কাকাবাবুর অভিযান পড়েছি। স্বাভাবিকই, এখন আর আগের মতো লাগে না, তবু জীবনের মধ্যাহ্নে এসে হয়তো এখন খুঁজে বেড়াই ছেলেবেলার সেইসব ভালোলাগার অনুভূতিগুলো – বইয়ের পাতায়, প্রকৃতির মাঝে...। মনে হয়, আমরা যারা সন্তুর সঙ্গে বড় হয়েছি তাদের মনে যে অন্য পৃথিবীর স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন কাকাবাবু, সেই ভাবনাগুলোকে আজ আর ছুঁতে পারি না কেন? কেন পারিনা আমার মেয়েকে সেই পৃথিবীটা ফিরিয়ে দিতে?
~ তথ্য- আন্দামান || আন্দামানের আরো ছবি ~
‘আমাদের ছুটি’-র সম্পাদক দময়ন্তী কর্মসূত্রে যুক্ত ছিলেন দৈনিক ‘কালান্তর’, ‘স্বর্ণাক্ষর’ ও ‘আজকাল’ প্রকাশনার সঙ্গে। পাশাপাশি দীর্ঘ দিন ধরে মুক্ত সাংবাদিকতা করছেন বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়। ভালোবাসেন রবীন্দ্রসঙ্গীত, বই পড়তে, ভ্রমণকাহিনি ও ছোটগল্প লিখতে, বেড়াতে আর ‘আমাদের ছুটি’ কে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে।