শিলং (Shillong)- সবুজে ছাওয়া শৈল শহর মেঘের দেশ শিলং, মেঘালয়ের রাজধানী। ১,৪৯৬ মিটার উচ্চতায় ব্রিটিশদের গড়ে তোলা সাজানো গোছানো স্কট্ল্যান্ড অব দ্য ইস্ট উত্তর-পূর্ব ভারতের পর্যটকদের প্রিয় স্থান। এই শিলং পাহাড়কে কেন্দ্র করেই রবীন্দ্রনাথ রচনা করেছিলেন তাঁর ‘শেষের কবিতা’। রবীন্দ্রনাথের বসত বাড়ি ‘মালঞ্চ’ এখন সরকারি আর্ট ও ক্র্যাফ্ট্ সেন্টার। ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের স্মৃতি বিজরিত বাড়িটি এখন সার্কিট হাউস। এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম গলফ ক্লাবটিও এখানেই অবস্থিত। শহরের প্রাণকেন্দ্রে কৃত্রিম হ্রদ সবুজের ছাওয়া ওয়ার্ড লেক। আর রয়েছে বটানিকাল গার্ডেন, রাজভবন, প্রজাপতি মিউজিয়াম, উইলিয়মসন সংমা স্টেট মিউজিয়াম, মেঘালয় কটেজ ইন্ডাস্ট্রিজ ও সেন্ট্রাল লাইব্রেরি, ডন বসকো ক্যাথিড্রাল। তবে শিলং-এর অন্যতম আর্কষণ শহরের কাছেপিঠে অজস্র ঝর্ণা। এরমধ্যে শিলং-চেরাপুঞ্জি পথে এলিফ্যান্ট ফলস, শহর থেকে ৫কিমি দূরে বিডন ও বিশপ জলপ্রপাত, দেড় কিমি দূরে ক্রিনোলাইন ফলস প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। শিলং থেকে গুয়াহাটির পথে ১৬কিমি দূরে বিশালাকার হ্রদ উমিয়াম। স্থানীয়দের কাছে বড়াপানি নামেও পরিচিত। শহর থেকে ২২কিমি দূরে বিরল প্রজাতির অর্কিডের রাজ্য।
কেনাকাটার ভালো জায়গা শহরের পশ্চিম প্রান্তে বড়বাজার ও বাসস্ট্যান্ডকে ঘিরে গড়ে ওঠা পুলিশ বাজার। মিজো শাল, মধু, বাঁশের তৈরি নানান সম্ভার মিলবে এখানে। সাপ্তাহিক হাটটিও আকর্ষণীয়।
যাওয়াঃ- নিকটতম রেলস্টেশন ও বিমানবন্দর গুয়াহাটি। গুয়াহাটি রেলস্টেশনের উল্টোদিকে বাসস্ট্যান্ড থেকে মেঘালয় ও অসম রাজ্য পরিবহনের বাস ছাড়ে। সড়কপথে শিলং-এর দূরত্ব ১০৩কিমি । শিলং-এর সঙ্গে শিলচর, আইজল, শিলিগুড়ি, আগরতলা প্রভৃতি শহরের সঙ্গে বাস যোগাযোগ রয়েছে। শহর ও তার আশপাশ সিটি বাস, ট্যাক্সি, শেয়ারের গাড়ি বা ভাড়া গাড়িতে বেড়িয়ে নেওয়া যায়। মেঘালয় ট্যুরিজমের কন্ডাকটেড ট্যুরেও শহরের আশপাশ বা চেরাপুঞ্জি সহ অন্যান্য দ্রষ্টব্য বেড়িয়ে নেওয়া যায়।
থাকাঃ- শিলং-এ মেঘালয় ট্যুরিজমের হোটেল পাইনউড, অর্কিড হোটেল ও অর্কিড লেক রিসর্ট। এছাড়াও শহর জুড়ে নানান মান ও দামের অজস্র হোটেল আছে।
চেরাপুঞ্জি (Cherrapunji)- শিলং থেকে ৫৪কিমি দূরে ১,৩০০ মিটার উচ্চতায় মেঘ বৃষ্টির দেশ চেরাপুঞ্জি। কমলালেবুর বাগান, মধু আর চুনাপাথরের গুহার জন্য খ্যাত চেরাপুঞ্জি। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতও হয় এইখানেই । চেরাপুঞ্জির কাছে খাসি পাহাড়ের ঢালে অবস্থিত মৌসিনরামের খ্যাতিও বৃষ্টির জন্য। মৌসিনরামের আরণ্যক পরিবেশে চুনাপাথরের গুহাটিও দ্রষ্টব্য। চেরাপুঞ্জি থেকে ২কিমি দূরে মৌসমাই জলপ্রপাত। প্রায় দু’হাজার ফুট ওপর থেকে রামধনু রং ছড়িয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছে জলধারা। মৌসমাই-এর কাছেই আর এক আকর্ষণীয় জলপ্রপাত নোহ-কালিকাই।
যাওয়াঃ- শিলং থেকে বাসে বা ভাড়া গাড়িতে চেরাপুঞ্জি পৌঁছান যায়। সারাদিন বেড়িয়ে শিলং ফিরেও আসা যায়। মেঘালয় ট্যুরিজমের কনডাকটেড ট্যুরেও বেড়িয়ে নেওয়া যায় চেরাপুঞ্জি।
থাকাঃ- মোসমাই-এর কাছে এমটি ডি সি-র অর্কিড হোটেল। এছাড়া রামকৃষ্ণ মিশন বা আমেরিকান মিশনের অতিথিশালায় থাকা যায়।