তুষারশুভ্র পর্বতমালা, ঘন সবুজ উপত্যকা, জীববৈচিত্র্য আর ঐতিহ্যময় সংস্কৃতি নেপালের বৈশিষ্ট্য। হিমালয়ের দেশ নেপাল। এভারেস্ট, মাকালু, অন্নপূর্ণা, ধৌলাগিরি -হিমালয়ের একের পর এক তুষারশৃঙ্গকে যেন হাত বাড়ালেই ছোঁয়া যায়। সারা বিশ্ব থেকেই পর্যটকেরা এই বিষ্ময়কর অনুভূতির সাক্ষী হতে হাজির হন নেপালে। তেনজিং নোরগে ও এডমন্ড হিলারির এভারেস্ট জয়যাত্রাও শুরু হয়েছিল নেপালের বুক থেকেই। তারপরে একের পর এক অভিযাত্রীদল পৌঁছেছেন সেই লক্ষ্যে। এভারেস্ট জয় তো অনেক বড় স্বপ্ন, তাতো সবার পক্ষে সম্ভব নয়, তবে ট্রেকিং-এর উৎসাহ আর শারীরিক সক্ষমতা থাকলেই নেপালে এসে এভারেস্ট বেস ক্যাম্প ট্রেক করে নেওয়া যায়।
নেপালের আরেক আকর্ষণ একদিকে চিতওয়ানের জঙ্গল, পোখরার হ্রদ, কাঠমান্ডুর মন্দির অন্যদিকে ঝকমকে শপিং ম্যল, ক্যাসিনো আর আধুনিক রেস্তোরাঁগুলি। প্রাচীনত্ব আর আধুনিকতার মেলবন্ধনে নেপালের বৈচিত্রময় লোকসংস্কৃতি পর্যটককে মুগ্ধ করে।
কাঠমান্ডু(Kathmandu)- মন্দিরের শহর কাঠমান্ডু -নেপালের রাজধানী। ৭২৩ খ্রীষ্টাব্দে রাজা গুণ কামদেব কাঠমান্ডু শহরটি গড়ে তোলেন। সংস্কৃত ‘কাষ্ঠ-মন্ডপ’ শব্দটি থেকেই কাঠমান্ডু শব্দের উৎপত্তি বলে মনে করা হয়।
পশুপতিনাথের মন্দিরটিই প্রধান দ্রষ্টব্য। একে একে দেখে নেওয়া যায় রাজরাজেশ্বরী মন্দির, কৈলাস মন্দির, গোরখনাথ মন্দির, বৌদ্ধনাথ মন্দির, স্বয়ম্ভুনাথ, শিব-পার্বতী মন্দির, কালভৈরব মন্দির, বুঢ়ানীলকন্ঠ প্রভৃতি। কাঠমান্ডু থেকে মাউন্টেন ফ্লাইটে খুব কাছ থেকে হিমালয়ের তুষারবৃত শৃঙ্গগুলি দেখে নেওয়া যায়।
কাঠমান্ডু থেকে ৫ কিমি দূরে বাগমতী নদীর ধারে পশুপতিনাথ মন্দির(Pashupatinath Temple)। মন্দিরের কাছেই প্রাচীন শ্মশান। তিনতলা মন্দিরটি প্যাগোডা আকৃতির। মন্দিরের চূড়া সোনার পাতে মোড়া। মূল মন্দিরের দরজাটি রুপোর তৈরি। গেট দিয়ে ঢুকে প্রথমেই যেটা সামনে পড়ে, সেটা হল পাথরের বেদীতে বসানো সোনায় মোড়া বিশাল নন্দী মূর্তি। মন্দিরের গর্ভগৃহে মহাদেবের অবস্থান শিবলিঙ্গরূপে। মন্দিরে একশোটিরও অধিক শিবলিঙ্গ ও অন্যান্য হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি রয়েছে। প্রাচীন শিবমন্দিরটি পঞ্চদশ শতকে রাজা ভূপতীন্দ্র মল্ল নতুন করে গড়ে তোলেন। এটি একটি ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। পশুপতিনাথ মন্দির দর্শনের সঙ্গেই দেখে নেওয়া যায় রাজরাজেশ্বরী, কৈলাস ও গোরখনাথ মন্দির।
শহর থেকে ৬ কিমি দূরে নেপালের উচ্চতম ও এশিয়ার বৃহত্তম বৌদ্ধস্তূপ বৌদ্ধনাথ (Boudhanath)। এটিও ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। আনুমানিক ২৫০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে স্তূপটি নির্মিত হয়।
কাঠমান্ডু উপত্যকায় পাহাড়ি টিলার ওপর স্বয়ম্ভুনাথ স্তূপ (Swayambhunath Temple)। তের শতকে এই স্তূপটি তৈরি হয়। সাদা গম্বুজাকৃতি স্তূপটি পবিত্র নির্বাণের প্রতীক। গম্বুজের নীচে বুদ্ধের চার জোড়া অনিমেষ চক্ষু। মন্দিরের চত্ত্বরের মধ্যে রয়েছে মিউজিয়াম।
কাঠমান্ডু শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত দরবার স্কোয়ার (Durbar Square) বেড়িয়ে নিতেই গোটা একটা দিন লাগবে। এটি হনুমান ঢোকা প্যালেস স্কোয়ার নামেও স্থানীয়ভাবে পরিচিত। প্রধান দরওয়াজা বা গোল্ডেন গেট দিয়ে ঢোকার মুখেই হনুমানের একটি বিশাল পাথরের মূর্তি রয়েছে। দরবার স্কোয়ারকে দেবতা হনুমানই রক্ষা করছেন বলে মনে করা হয়। দরবার স্কোয়ারে ঢুকলে ন-তলা উঁচু রয়াল প্যালেসটি নজর কাড়ে। ১৭ শতকে এই প্রাসাদটি নির্মাণ করান রাজা পৃথ্বীনারায়ণ সাহু। এটি নওতলে দরবার নামেও পরিচিত। দরবার স্কোয়ারেই রয়েছে ত্রৈলোক্যমোহন মন্দির। ১৬ শতকে রানি ঋদ্ধিলক্ষ্মী এই মন্দিরটি গড়ে তোলেন। ত্রৈলোক্যমোহন মন্দিরের পাশেই কুমারী প্যালেস। এই চত্ত্বরেই রয়েছে শিব-পার্বতী, কালভৈরব ও জগন্নাথ মন্দির ও বিখ্যাত কাষ্ঠমন্ডপ। ১৫৯৬ সালে রাজা লক্ষ্মী নরসিংহ মল্লারের আমলে একটি গাছ কেটেই হনুমান ঢোকা প্যালেসের কাছে এই প্যাগোডাটি তৈরি করা হয়।
কাঠমান্ডু থেকে ৯ কিমি দূরে শিবপুরী পাহাড়ের নীচে বুঢ়ানীলকন্ঠ-এখানে উপাস্য দেবতা বিষ্ণু। পাথরের বিশালাকার বিষ্ণুমূর্তিটি একটি পুষ্করিণীর মধ্যে রয়েছে।
কাঠমান্ডু থেকে ৫ কিমি দূরে বাগমতীর তীরে পাটন(Patan) অনেকগুলি হিন্দু ও বৌদ্ধমন্দির আছে। অতীতে নাম ছিল ললিতপুর। দেড় হাজার বছর আগে লিচ্ছবি বংশের রাজা বরদেব ললিতপুরের পত্তন করেন। কুম্ভেশ্বর, জগতনারায়ণ, কৃষ্ণ, মহাবৌদ্ধ, মচেন্দ্রনাথ প্রভৃতি মন্দিরগুলির ভাস্কর্য অপরূপ। এছাড়াও এখানে হিরণ্যবর্ণ মহাবিহার, মল্ল রাজাদের প্রাসাদ ও পাটন মিউজিয়াম দ্রষ্টব্য। পাটনের দরবার স্কোয়ার ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের অর্ন্তভুক্ত।
শহর থেকে ১৪ কিমি দূরে ভক্তপুর(Bhaktapur)। পথে পড়বে পবিত্র পুষ্করিণী সিদ্ধিপোখরি। ভক্তপুরের দ্রষ্টব্যগুলির মধ্যে রয়েছে ‘প্যালেস অব ফিফটি ফাইভ উইন্ডোজ’ নামে খ্যাত প্রাচীন রাজপ্রাসাদ, নিয়াতাপোল মন্দির, ভৈরবনাথ মন্দির, পশুপতি মন্দির, দত্তাত্রেয় মন্দির, মিউজিয়াম, লায়ন গেট, গোল্ডেন গেট, বড় ঘন্টা প্রভৃতি।
কাঠমান্ডু থেকে সড়ক পথে ঘন্টা চারেকের দূরত্বে ৭,৬২০ ফুট উচ্চতায় নির্জন দমন(Daman)। এখান থেকে অন্নপূর্ণা, ধৌলাগিরি, এভারেস্ট প্রভৃতি তুষারশৃঙ্গগুলি অপরূপ লাগে।
চিতওয়ান ন্যাশনাল পার্ক(Royal Chitwan National Park)- চিতওয়ান অরণ্যের খ্যাতি একশৃঙ্গ গন্ডার ও রয়্যালবেঙ্গল টাইগারের জন্য। ৯৩২ বর্গ কিমি ব্যপী এই অরণ্য ৫০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৫৫ প্রজাতির উভচর ও সরীসৃপ এবং ৫২৫ প্রজাতির পাখির বাসভূমি। অরণ্যের বুক চিরে বয়ে যাচ্ছে রাপ্তি ও নারায়ণী নদী। এছাড়া গাউর, চিতল, সম্বর, বার্কিং ডিয়ার, বুনো শুয়োর, হাতি প্রভৃতি জীবজন্তুর দেখা মেলে। ১৯৮৪ সালে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এই অরণ্য। নদীতে ক্যানোরাইড এবং অরণ্যে হাতির পিঠে ভ্রমণের ব্যবস্থা আছে।
পোখরা(Pokhara)- পোখরার প্রধান আকর্ষণ ফেওয়া লেক(Phewa Lake)। লেকের একপাড়ে ঘন জঙ্গল কুইন ফরেস্ট, উল্টোদিকে খাড়া উঠে গেছে সারাংকোটে পাহাড়। ফেওয়া লেকের ওপর ছাতার মতো রয়েছে অন্নপূর্ণা পর্বতমালা(Annapurna Range)। মাছের লেজের মতো দেখতে মচ্ছ পুছরে (Machhapuchhare Peak) শিখরটি (৬,৯৭৭ মিটার) সুন্দর দেখতে লাগে। লেকের মাঝে বরাহি দেবীর মন্দির। লেকে বোটিংয়ের ব্যবস্থা আছে। শহরের মাঝ বরাবর বয়ে চলেছে শ্বেত গন্ডকী নদী। ২ কিমি দূরে ছাঙ্গো জলপ্রপাত বা দেবী ফলস। পোখরা থেকে ২ ঘন্টার দূরে স্ট্যালাগমাইট ও স্ট্যালাকমাইটের প্রাকৃতিক কারুকার্যে ভরা মহেন্দ্র গুহা। শহর থেকে ৪ কিমি দূরে পুরনো বাজারে রয়েছে বিন্ধ্যবাসিনীর প্রাচীন মন্দির। পোখরা মাউন্টেন মিউজিয়াম (Pokhara Mountain Museum) ও ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম দুটি দ্রষ্টব্য।
পোখরা থেকে এভারেস্ট এয়ারের বিশেষ উড়ানে আকাশপথে দেখে নেওয়া যায় পশ্চিম হিমালয় পর্বতমালার অংশবিশেষ।
পোখরা থেকে হেলিকপ্টারে জমসম পৌঁছে ঘন্টাদুয়েকের যাত্রায় বেড়িয়ে নেওয়া যায় মুক্তিনাথ(Muktinath)। এখানে মুক্তিনাথ মন্দির ও জ্বালামুখী মন্দির দর্শনীয়। আকাশ পরিষ্কার থাকলে এখান থেকে অন্নপূর্ণা রেঞ্জ খুব সুন্দর দেখা যায়।
পোখরা থেকে গাড়িতে কুরিন্তার পৌঁছে কেবলকারে মনোকামনা দেবীর মন্দির দর্শন করা যায়।
লুম্বিনী(Lumbini)- গৌতমবুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনী নেপালের দক্ষিণে অবস্থিত। সারা বিশ্বের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে এটি একটি পবিত্র স্থান। ঐতিহাসিক লুম্বিনী উদ্যানে অনেকগুলি প্রাচীন স্তূপ ও মনাস্ট্রি রয়েছে। ২৫০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে খোদিত অশোকের শিলালিপিতে রয়েছে বুদ্ধের জন্মগাথা।
লুম্বিনীর অন্যান্য দ্রষ্টব্যের মধ্যে রয়েছে মায়ামন্দির ও প্রাচীন কপিলাবস্তু(Kapilavastu)। স্থানীয় লোকসংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হতে সোমবারের বাজারটি ঘুরে দেখতে হবে।
যাওয়াঃ- বিমানবন্দর কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন এয়ারপোর্ট (Tribhuvan International Airport)। নানান দেশের উড়ানই কাঠমান্ডু যাচ্ছে নিয়মিত। সড়কপথে ভারত-নেপাল সীমান্তের কাকরভিটা, বিরজুং, রক্সৌল (Raxaul), সুনৌলি, নেপালগঞ্জ, ধানগাধি, মহেন্দ্রনগর এবং চিন-নেপাল সীমান্তের কোদারি দিয়ে নেপাল প্রবেশ করা যায়।
কাঠমান্ডু থেকে নেপালের অন্যান্য স্থানগুলি প্যাকেজ ট্যুরে বা গাড়িতে বেড়িয়ে নেওয়া যায়। পোখরা ও মুক্তিনাথের জন্য হেলিকপ্টার সর্ভিস আছে। চিতওয়ানেও উড়ানে পৌঁছোনো যায়। বিমানে বা বাস যাত্রায় পৌঁছাতে হবে লুম্বিনী।
মরসুমঃ- ফেব্রুয়ারি থেকে মে এবং অগাস্ট থেকে নভেম্বর বেড়ানোর জন্য মনোরম।
থাকাঃ- নেপালে বেড়ানো ও থাকার জন্য নেপাল ট্যুরিজমের নানা প্যাকেজ ও ব্যবস্থা আছে। এছাড়া রয়েছে নানান বেসরকারি ব্যবস্থাপনা।
ট্রেকিং- ট্রেকারদের স্বর্গ নেপাল। হিমালয়ের বিরাট রেঞ্জ আর সবুজ তরাই অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় পর্যটকদের চিরকালের স্বপ্ন। নেপালের প্রধান প্রধান ট্রেকিং জোনগুলি হল এভারেস্ট রিজিওন, অন্নপূর্ণা রিজিওন, লাংটাং রিজিওন। এছাড়া কাঞ্চনজঙ্ঘা (Kanchenjunga) ও মাকালু (Makalu) বেস ক্যাম্প, রলওয়ালিং, ধৌলাগিরি (Dhaulagiri), গণেশ হিমাল ট্রেক এবং রেসট্রিকটেড এরিয়া ট্রেকের মধ্যে মানালসু, আপার ও লোয়ার দোলপো, লো-মাথাং।
এভারেস্ট বেস ক্যাম্প ট্রেকিং(Everest Base Camp Trekking)- নেপালের জনপ্রিয় একটি ট্রেকিং এভারেস্ট বেস ক্যাম্প। সারা বিশ্ব থেকেই উৎসাহী ট্রেকার্সরা নিয়মিতই নেপালে আসেন এই ট্রেকটি করতে। এভারেস্ট বেস ক্যাম্প ট্রেকিং শুরু ও শেষ হয় লুকলা-য় (Lukla)। তাই এটি গেটওয়ে অব এভারেস্ট নামেও সুপরিচিত। লুকলায় এয়ারপোর্ট তৈরিতে সাহায্য করেছিলেন এডমণ্ড হিলারি।
লুকলা থেকে হাঁটা শুরু করে দুধকোশী উপত্যকা (Dudhkoshi Valley) হয়ে ২ দিনের ট্রেকপথে পৌঁছান যাবে নামচে বাজার (Namche Bazaar)। পথে ফাকডিং বা মনজোতে প্রথমদিনের বিশ্রাম। মনজোর কাছেই সাগরমাথা ন্যাশনাল পার্কের (Sagarmatha National Park) জোরসালে চেক পয়েন্ট । এখানে অনুমতিপত্র দেখে নেওয়া হয়। দুধকোশী নদীর কোল ঘেঁষে কিছুটা এগিয়ে ঝোলানো ব্রিজ পেরিয়ে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে পাহাড়ি পথ উঠে গেছে নামচে বাজারের দিকে।
হোটেল, রেস্টুরেন্ট, ট্রেকিং-এর সরঞ্জামের দোকান, পাব, সাইবার কাফে সব নিয়ে বেশ জমজমাট এলাকা নামচে বাজার। এখানে দিনদুয়েক থাকলে হাই অল্টিচুডে ধীরে ধীরে শরীরকে মানিয়ে নেওয়ার ব্যাপারটা কিছুটা অভ্যেস হবে। নামচে থেকে কয়েক ঘন্টার হাঁটাপথে বেড়িয়ে নেওয়া যায় স্যাংবোচে বা থামে, খুমজুম আর খুন্ডের মতো শেরপা গ্রামগুলি।
নামচে বাজারকে পিছনে ফেলে ইমজা খোলা উপত্যকা দিয়ে পথ এগিয়ে চলেছে। উপত্যকার বুক থেকে থামসেরকু, কাংটেগা আর আমা দাবলাম পর্বতমালার অসাধারণ ছবি মনে আঁকা হয়ে যায়। দিগন্তরেখায় তখন দুই প্রহরী মাথা তুলে দাঁড়িয়ে -লোহৎসে আর এভারেস্ট (Everest)। নামচের পরের বিশ্রামস্থল ইমজা খোলা পেরিয়ে থ্যাংবোচে। সবুজ প্রকৃতির মাঝে অপরূপ পরিবেশে থ্যাংবোচে মনাস্ট্রি (Thyangboche Monastery) -পশ্চাৎপটে শ্বেতশুভ্র মাউন্ট আমা দাবলাম। ১৯৮৯ সালে মূল মনাস্ট্রিটি আগুনে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর নতুন মনাস্ট্রিটি গড়ে তোলা হয়।
থ্যাংবোচে থেকে প্যাংবোচে হয়ে পথ থেমেছে ফেরিচে বা ডিংবোচেতে-রাত্রির বিশ্রাম। শরীরটাকে আরেকটু মানিয়ে নেওয়ার জন্য এখানেও একদিন থেকে যাওয়া ভালো। বেড়িয়ে নেওয়া যায় ডিংবোচে থেকে ৩ ঘন্টার হাঁটাপথে ছুকুং।
ডিংবোচে বা ফেরিচে থেকে ৬ ঘন্টার হাঁটায় খুম্বু গ্লেসিয়ারের (Khumbu glacier) লবুচে পয়েন্টে পৌঁছান যাবে। এপথে শেষ বিশ্রামস্থল গোরক শেপ (Gorak Shep) । এখানে কালা পাত্থর (Kala Patthar) ভিউপয়েন্ট থেকে এভারেস্টের বিস্ময়কর অপরূপ রূপ প্রত্যক্ষ করা যায়। এখান থেকে গ্লেসিয়ারের গা বেয়ে ৫ ঘন্টার যাত্রাপথে এভারেস্ট বেস ক্যাম্প।
~ ভ্রমণ কাহিনি- আকাশে ছড়ানো মেঘের কাছাকাছি~
~এভারেস্ট বেস ক্যাম্প ট্রেক রুট ম্যাপ ~