পাহাড়ে চড়ার সময় কী করবেন/ করবেন না
ট্রেকিং বা অভিযানে যাওয়ার আগে আপনার বেড়ানোর রুট সম্পর্কে পরিস্কার একটা ধারণা করে নিন। সঠিক ম্যাপ আর ট্রেকিং-এর সরঞ্জাম সঙ্গে রাখুন। ছবি তুলতে রেডি রাখুন ক্যামেরা। পাহাড়ের বিপদ-আপদ, অসুখ-বিসুখ ও কীভাবে সেসবের মোকাবিলা করবেন তা সম্বন্ধেও একটা ধারণা থাকা দরকার।
- সকাল সকাল শুরু আর সকাল সকাল শেষ -পাহাড়ে চড়ার ক্ষেত্রে এটাই আপ্তবাক্য। দুপুরের পর থেকেই আবহাওয়ার একটা বদল হতে শুরু করে। যেকোন অভিযান বা ট্রেকিং-এ একথা মেনে চললে অনেক অবাঞ্ছিত বিপদ এড়ানো যায়।
- একা চলায় ঝুঁকি অনেক বেশি। অন্তত একজন সঙ্গী থাকলেও পথে সুবিধা হয়।
- প্রয়োজনের অতিরিক্ত জিনিষপত্র নেবেন না। এতে নিজের অথবা যে মানুষটি আপনার বোঝা বইছে তার অযথা কষ্ট বাড়বে।
- খুব দ্রুত বা খুব আস্তে চলা নয়, মাঝামাঝি গতিবেগে এগিয়ে চলুন। তবে সবসময় নিজের ক্ষমতা বুঝে এগোন, অন্যথায় বিপদে পড়তে পারেন। ওপরে ওঠার সময় কথাবার্তা বেশি না বলাই ভালো, তাহলে কম ক্লান্ত হবেন।
- বেশি উচ্চতায় ওঠার আগে শরীরকে মানিয়ে নেওয়ার সময় দিতে হবে। মোটামুটি ২৫০০ মিটার উচ্চতায় পৌঁছালে এক-দু’দিন বিশ্রাম নিয়ে অ্যাক্ল্যাইমাটাইজড হয়ে নেওয়া ভালো।
- চলার পথে দলনেতার নির্দেশ মেনে চলা উচিত।
- দূরত্ব নির্ণয়ের সময় নিজেদের ম্যাপের ওপর নির্ভর করুন। স্থানীয়দের আন্দাজের সঙ্গে আপনার হিসেব নাই মিলতে পারে। তবে পাহাড়ের সময় দিয়ে দূরত্ব মাপাই উচিত হবে।
- পাহাড়ি নদী-নালা বা ঝরনা অতিক্রমের সময় অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হবে। বেলা বাড়ার সঙ্গে এদের গতিবেগ বাড়তে থাকে।
- সকালে হাঁটার সময় পাথুরে পথ বা বোল্ডারের ওপর জমে থাকা বরফের আস্তরণ সম্বন্ধে সতর্ক থাকতে হবে।
- যথেষ্ট পরিমাণে জল পান করতে হবে। তবে সরাসরি নদী বা ঝরনার জল না খাওয়াই ভালো। জল ফুটিয়ে বা জিওলিন দিয়ে খাওয়া উচিত।
- অজানা ফলমূল খাওয়া বা অচেনা লতাগুল্মে হাত দেওয়া ঠিক নয়।
- স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করুন। বিপদে পড়লে এঁরাই আপনার সহায় হবেন। বিনা অনুমতিতে মহিলাদের ছবি তুলবেন না।
- সামনে অন্য কোন দল থাকলে তাদের অনুমতি না নিয়ে অতিক্রম করে যাওয়াটা বাঞ্ছনীয় নয়।
- পথচলার সময় খেলার ছলেও কখনও পাথর গড়াবেন না, বড় বিপদ হয়ে যেতে পারে।
- পথ হারিয়ে ফেললে বা অন্য কোন বিপদে পড়লে আতঙ্কিত না হয়ে মাথা ঠান্ডা রাখুন, বিপদের মোকাবিলা করা সহজ হবে।
- কোন দুর্ঘটনা ঘটলে দ্রুত স্থানীয় বাসিন্দাদের খবর দেওয়ার চেষ্টা করুন।
- অন্য কোন দলের দুর্ঘটনা ঘটলে স্বতঃস্ফুর্তভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়াটাই এই পথের রীতি।
- ধূমপান, মদ্যপান করবেন না।
- অপ্রয়োজনীয় চিৎকার-চেঁচামেচি, জোরে গান শোনা বাঞ্ছনীয় নয়।
- প্লাস্টিক বা অন্যান্য বর্জ্য পদার্থ ফেলে পাহাড়ের পরিবেশ দূষিত করবেন না।