ইন্টারনেটের দুনিয়াতে গোটা পৃথিবীটা যেমন নাগালের মধ্যে চলে আসে, তেমনি মানুষের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া আর বন্ধুত্ব গড়ে তোলাও আজ খুবই সহজ। একই ভাবে ভ্রমণও পারে দূরকে কাছে আনতে, অপরিচিতকে আত্মীয়তার বন্ধনে আপন করে নিতে। ভ্রমণকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠতে পারে একটা অন্য রকম পৃথিবী - যেখানে সবাই হয়ে উঠবে পরস্পরের বন্ধু।
চেনা জীবনের চার দেওয়ালের বাইরে তো আমরা সবাই-ই মাঝেমধ্যে হারিয়ে যেতে চাই। পকেটের জমাখরচ আর ছুটির অঙ্ক মিলিয়ে ছুট লাগাই পিঠে রুকস্যাক, কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে। ক্যামেরায় বেঁধে রাখতে চাই সেইসব মুহূর্তগুলোকে - যা রয়ে গেল চিরদিনের সম্পদ হয়ে। ডায়েরির পাতা ভরে ওঠে প্রকৃতি আর মানুষের নিবিড় সান্নিধ্যের কথায়। ভালোলাগার এই ছোট ছোট মুহূর্তগুলো ইচ্ছে করে সবার সঙ্গে ভাগ করে নিতে। এইসব ভাবনার পাশাপাশি ভালোবাসা আর নতুন কিছু করার ইচ্ছা থেকেই জন্ম নিয়েছে ‘আমাদের ছুটি’।
বাংলাভাষায় বেশ কিছু উঁচু মানের সাহিত্যপত্রিকার ওয়েবসাইট থাকলেও ভ্রমণকাহিনি, বেড়ানোর ছবি, তথ্য, বেড়ানোর প্ল্যান, খবর এবং আরও নানাকিছু নিয়ে একটা পূর্ণাঙ্গ বাংলা ভ্রমণ ই-পত্রিকা ওয়েবে আর নেই – আমরা সেই অভাবটাই পূরণ করতে চেয়েছি। পৌঁছে দিতে চেয়েছি পাঠকদের কাছে বিনামূল্যে। আমাদের ইচ্ছে ‘আমাদের ছুটি’ -কে একটা মঞ্চ হিসেবে গড়ে তোলার – দুই বাংলা, ভারত - তথা পৃথিবীর নানান প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা যেসব মানুষ বাংলাভাষাকে ভালবাসেন, এখানে অন্যদের সাথে শেয়ার করতে পারেন তাঁদের বেড়ানোর প্রিয় স্মৃতি –কথায় আর ছবিতে।
পত্রিকাটির পুরোদস্তুর পরিকল্পনা শুরু হয়েছিল ২০০৯-এ। প্রায় দু’বছর ধরে চলে ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গার তথ্য লেখা, আলোকচিত্র সংগ্রহ, লেখা জোগাড় করার কাজ। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল বন্ধু ও ভ্রাতৃপ্রতিম সুপ্রতিম ঘোষ ও অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। বিপুল তথ্য কম্পোজ করার কাজটি খুব দ্রুত এবং সুন্দরভাবে করে দিয়েছেন রুবী পাত্র ও ঊর্মিলা পাত্র। ওয়েবসাইটটি প্রাথমিকভাবে ডিজাইন ও ডেভেলপ করেছেন মধুবন্তী বসু এবং পরবর্তীতে শ্রীসারদা এন্টারপ্রাইজ সংস্থা। তবে প্রাথমিক ডিজাইনের পর থেকে কারিগরি বিন্যাসের অনেকটাই সামলাচ্ছে দীপ। ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে (বৈশাখ, ১৪১৮) পত্রিকা প্রকাশের পর দুই বাংলার বেশ কিছু মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে এসেছেন তাঁদের কিছু ভালোলাগার সময় ‘আমাদের ছুটি’-র সঙ্গে ভাগ করে নিতে। কেউ নিয়মিত দিচ্ছেন তথ্য, জোগাড় করে দিচ্ছেন লেখা-ছবি, কেউবা এঁকে দিচ্ছেন ম্যাপ। এঁদের মধ্যে রয়েছেন সুবীর কুমার রায়, রফিকুল ইসলাম সাগর, কৌশিক মোদক ও ফেসবুকের ‘ট্যুরিজম বাংলাদেশ’ পেজ-এর অ্যাডমিন বন্ধুরা।
আর আমরা - যারা রোজকার এই ধরাবাঁধা জীবনেই হঠাৎ খুঁজে পেয়ে যাই ছুটির জানলার কপাটখানা – মনফকিরার একতারাটা নিয়ে বেরিয়ে পড়ি অচিনের সন্ধানে? তাদের লেখায়-আলোকচিত্রেই তো ভরে উঠছে পত্রিকার পাতা, ছবির অ্যালবাম, তাদের ছুটির কথা আগ্রহী পাঠকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্যই তো ‘আমাদের ছুটি’-র এই আয়োজন। আসলে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে থাকা বাংলাভাষী পাঠকই এই পত্রিকার লেখক, তাঁরাই আলোকচিত্রী। আগ্রহী পাঠকদের বেড়ানোর কথা আর ছবিতে সেজে উঠুক পত্রিকার পাতা – আবছা হয়ে যাক লেখক-পাঠকের ব্যবধান।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ 'আমাদের ছুটি'-তে যথাসম্ভব নির্ভুল তথ্য পরিবেশনের চেষ্টা করা হয়েছে, তবু বেড়ানোর আয়োজন করার আগে পাঠককে তথ্যগুলি অন্যত্রও যাচাই করে নিতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
"আমাদের ছুটি" ভ্রমণ পত্রিকাটি কোন ব্যবসায়িক মনোবৃত্তি থেকে প্রকাশিত হয় না। পত্রিকাটি থেকে আমরা কোন আর্থিক লাভ করিনা। এই পত্রিকাটির সম্পদ দুই বাংলার সেইসব ভ্রমণপ্রিয় মানুষ যাঁরা অর্থ রোজগারের প্রত্যাশা ছাড়াই ভ্রমণ কাহিনি ও ছবি পাঠিয়ে ওয়েবসাইটটিকে সমৃদ্ধ করে চলেছেন এবং আরো বেশ কয়েক হাজার পাঠক যাঁরা নিয়মিত দেখছেন এই ওয়েবসাইটটি গত কয়েক বছর ধরে।
আমাদের অনুরোধ "আমাদের ছুটি"-তে লেখা-ছবি-তথ্য দিয়ে, প্রচারের কাজে সাহায্য করে পত্রিকাটিকে এগিয়ে নিয়ে চলুন। ওয়েবসাইটে প্রকাশের জন্য লেখা-ছবি-তথ্য পাঠানোর বিষয়ে বিস্তারিত জানতে দেখুন এখানে।
যোগাযোগঃ
ই-মেল ঠিকানা - admin@amaderchhuti.com অথবা amaderchhuti@gmail.com
ফেসবুক পেজ - https://www.facebook.com/amaderchhuti
ফেসবুক গ্রুপ - https://www.facebook.com/groups/amaderchhuti
পরিকল্পনাঃ দীপ