--> :: Amader Chhuti - Brussels ::

Home Page
Current Issue
Archive
Travel Plans
Trekking Routemap
Tips
Explore
Rail
Air travel
Other Websites

Feedback




hit counters
hit counter

ব্রাসেলস (Brussels)

 

বেলজিয়ামের (Belgium) রাজধানী ব্রাসেলস শহর সমগ্র ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ক্যাপিটালও। ইতিহাসের শহর ব্রাসেলস-এ আধুনিকতার রঙমিশেলে অতীত বড় প্রাণবন্ত। ব্রাসেলস শব্দের ডাচ অর্থ “জলা জায়গার ওপর বাড়ি”। সত্যি একসময় এটি নীচু জমির ওপর ছোট্ট একটি শহর ছিল। সেটা প্রায় দশম শতাব্দীর আশেপাশে এক সময়ের কথা। কালক্রমে বাড়তে বাড়তে আজকের এই সাজানো গোছানো ঝকঝকে বৃহৎ শহরে পরিণত হয়েছে।
এই শহরে দ্রষ্টব্যস্থান বেশ কয়েকটি – গ্র্যাণ্ড প্লেস, টাউন হল, রয়াল প্যালেস, ম্যানিকেন পিস, অ্যাটোমিয়াম, রয়াল মিউজিয়াম অফ ফাইন আর্টস, কমিক মিউজিয়াম প্রভৃতি। ব্রাসেলস শহরের প্রাণকেন্দ্র সেন্ট্রাল স্কোয়ার বা গ্র্যান্ড প্লেস (Central Square/Grand Place)। গিল্ড হাউস, সিটি টাউন হল আর ব্রেডহাউস দিয়ে ঘেরা এই গোলাকৃতি জায়গাটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তালিকাভুক্ত। প্রাচীনত্বের দিক থেকে তো বটেই এমনিতেও স্থানটির আভিজাত্যই আলাদা। প্রত্যেক দু’বছর অন্তর “ফ্লাওয়ার কার্পেট” দিয়ে সাজানো হয় সুবিশাল এই চত্ত্বর। সুন্দর এই চত্ত্বরটা ঘিরে দোকানের সারি – চিজ, চকোলেট, কফিশপ, খাবারের দোকান, চিয়ার শপ ইত্যাদি।
১৬৯৫ খ্রীস্টাব্দে নির্মিত টাউন হল (Town Hall)-এ মাঝখানের উন্মুক্ত জায়গাটি ঘিরে রয়েছে বিশালাকৃতি হলগুলি। পাথরের তৈরি বড় বড় ইঁট জুড়ে তৈরি মেঝে। পুরোনো হলগুলোর নীচের তলায় এখন নানারকম দোকান, রেস্তোঁরা আর ছোট ছোট কাফে আর ঠাণ্ডা পানীয়ের দোকান।

ব্রাসেলস পার্ক (Brussels Park)-এর সামনে রয়াল প্যালেস (Royal Palace) বা রাজবাড়িতে সংরক্ষিত রয়েছে রাজপরিবারের ইতিহাস। মূল প্রাসাদটি ১১ শতকের শেষভাগ থেকে ১২ শতকের প্রথমপর্বে তৈরি হয়েছিল। ১৭৩১ সালের বিধ্বংসী আগুনে ভস্মীভূত প্রাসাদটিকে পরবর্তীকালে পুনর্নির্মাণ করা হয়। তবে আজকে আমরা যে স্থাপত্যটি দেখতে পাই সেটিকে ঠিকঠাকভাবে গড়ে তুলেছিলেন দ্বিতীয় লেওপাদ ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগে।
১৯৫৮ সালে ব্রাসেলস-এর মাটিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ওয়ার্ল্ড ফেয়ার। সেই সময় অ্যাটোমিয়াম (Atomium) নামক একটি স্ট্রাকচার গড়ে তলা হয়। এটি দেখতে একটি লৌহ অণুর মত। এর কাছেই মিনি ইউরোপ পার্ক (Mini Europe Park)
“রু দে লেতুভ” আর “রু দে গ্র্যান্ড কারস”-এর সংযোগস্থলে অবস্থিত ‘ম্যানিকেন পিস’ (Manneken Pis) নামক ৬১ মিটার দীর্ঘ বিখ্যাত নগ্ন শিশু মূর্তিটি ১৬১৯ সালে শিল্পী হিয়েরোনিমাস নির্মাণ করেন। প্রচলিত গল্পকথা বলে, এক ধনী ব্যবসায়ীর আড়াই বছরের ছোট্ট ছেলেটি হারিয়ে গিয়েছিল ব্রাসেলস শহরে। আনাচে কানাচে খুঁজতে খুঁজতে শেষপর্যন্ত যখন তাকে পাওয়া গেল তখন সে শহরের এক প্রান্তে ফোয়ারার জলের মধ্যে নিশ্চিন্তমনে প্রস্রাব করছিল। তার বাবা তাকে ফিরে পাওয়ার আনন্দেই সেই জায়গায় বানিয়ে ফেললেন ব্রোঞ্জের আস্ত একটা মূর্তিই ঠিক যেমনটি তাকে দেখতে পেয়েছিলেন তিনি। যুদ্ধের সময়ে দেবদূতের মতো সেই নগ্ন শিশুমূর্তি নাকি বাঁচিয়ে ছিল এই শহরের মানুষজনকে। এই মূর্তিটি চুরি গিয়েছেও বেশ কয়েকবার এমনই এর জনপ্রিয়তা। প্রতিবারই নতুন করে বানানো হয়েছে মূর্তিটি। ব্রাসেলস শহরে এই স্ট্যাচুটিকে ঘিরে সারা বছর ধরেই চলে নানা উৎসবের পালা। উৎসবের দিনে নানা পোষাকে সেজে ওঠে এই কিংবদন্তী শিশু। গ্র্যান্ড প্লেসের সিটি মিউজিয়ামে গেলেই দেখা যায় এই ছোট্ট মূর্তিটির অজস্র পোষাকের সম্ভার।
ব্রাসেলসে সব মিলিয়ে ৮০ টিরও বেশি মিউজিয়াম আছে। যার মধ্যে অন্যতম মিউজিয়াম অফ আর্ট অ্যান্ড হিস্ট্রি, রয়াল মিউজিয়াম অফ ফাইন আর্টস, কমিক স্ট্রিপ মিউজিয়াম ইত্যাদি। বেলজিয়ামের কমিক সাহিত্যের ইতিহাস রয়েছে কমিক স্ট্রিপ মিউজিয়াম (Comic Strip Museum)-এ যার অন্যতম হল টিনটিন। সৃষ্টি ও স্রষ্টা দুজনেরই জন্ম এই শহরেই। তাই টিনটিন (Tintin) ও হার্জকে (Herge) ভালোভাবে চিনে নিতে একবার ঘুরে আসতে হবে কমিক মিউজিয়াম। রয়াল মিউজিয়াম অফ ফাইন আর্টস (Royal Museum of Fine Arts) ভালোলাগবে শিল্পপ্রেমীদের। ব্রুজেল, রজার ভ্যান ডার ওয়েডেন, রবার্ট ক্যাম্পিন, অ্যান্টনি ভ্যান ডাইক, জ্যাকব জর্ডিয়ান-এর মত বিশিষ্ট শিল্পীদের হাতে আঁকা ছবি এই মিউজিয়ামের সম্পদ। সারা পৃথিবীর বিভিন্ন সভ্যতার  পরিচয় পাওয়া যাবে মিউজিয়াম অফ আর্ট অ্যান্ড হিস্ট্রি (Museum of Art and History)-তে। এখানে রয়েছে সিনকোয়ান্তেনেয়ার মিউজিয়াম, চাইনিজ পাভিলিয়ন, জাপানিজ টাওয়ার, মিউজিয়াম অফ জাপানিজ আর্ট, মিউজিকাল ইন্সট্রুমেন্ট মিউজিয়াম, পোর্তে দে হেল মিউজিয়াম, হোরতা-ল্যামবিউক্স প্যাভিলিয়ন আর চালর্স লোরেইন-এর প্রাসাদ।
বেলজিয়ামের জাতীয় অর্কেস্ট্রার কনসার্ট হল, সিনেমা, থিয়েটার, সাহিত্য সভা, স্টুডিও, এক্সিবিশন হল এমন নানাকিছু নিয়ে ব্রাসেলসের আরেক আকর্ষণ ১৯২৮ সালে তৈরি হওয়া ‘বোজার’ (Bozar)


যাওয়াঃ ব্রাসেলস শহরে দুটি এয়ারপোর্ট – ব্রাসেলস এয়ারপোর্ট (Brussels Airport) এবং চারলেরই এয়ারপোর্ট (Charleroi Airport)। এছাড়া লন্ডন, আমস্টারডাম, প্যারিস থেকে এশহরে আসার জন্য বেশ কয়েকটি হাই স্পিড ট্রেন আছে।

অন্যান্যঃ – বিখ্যাত বেলজিয়াম চকোলেট (Belgian Chocolate) আর নানারকম বিয়ারের জন্য ব্রাসেলসের পরিচিতি রয়েছে। ব্রাসেলস শহরের আবহাওয়া বেশ মনোরম। হাল্কা ঠান্ডা ও মাঝেমধ্যে বৃষ্টিপাত হয়। হালকা গরম পোষাকের সঙ্গে উইন্ডচিটার আর ছাতা থাকলে ভালো হয়।

কয়েকটি ওয়েব ঠিকানাঃ
http://www.visitbelgium.com/
http://www.brussels.info/government/
http://www.brussels-belgium-travel-guide.com

~ ভ্রমণ কাহিনিঃ একটুকরো ব্রাসেলস ~

 

Album

Live Traffic Feed

To view this site correctly, please click here to download the Bangla Font and copy it to your c:\windows\Fonts directory.

For any queries/complaints, please contact admin@amaderchhuti.com
Best viewed in FF or IE at a resolution of 1024x768 or higher