মধ্য এশিয়ার একটি প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র উজবেকিস্তান। ১৯২৪ থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত এটি সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্গত ছিল। ১৯৯২ সালে ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসেবে উজবেকিস্তান দেশের জন্ম হয়। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সভ্যতা সংযুক্তকারী বিখ্যাত রেশম পথের ওপরে এর অবস্থান একে ভৌগোলিক এবং ঐতিহাসিক তাৎপর্য দিয়েছে।
মধ্য এশিয়ায় কাজাকস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও কিরগিস্তান দেশগুলি ঘিরে রয়েছে উজবেকিস্তানকে। এর উত্তর ও দক্ষিণের কিছুটা জায়গা জুড়ে রয়েছে আরাল সি। উঁচু-নীচু পাহাড়-পর্বত আর রুক্ষ-শুষ্ক দিগন্ত বিস্তৃত মরুভূমিই এদেশের বৈশিষ্ট্য। আবহাওয়া চরম প্রকৃতির। গরমের সময় প্রবল উত্তাপ আর শীতকালে পারদ নেমে যায় শূন্যের অনেক নীচে। বৃষ্টিপাতও খুব কম।
উজবেকিস্তানের প্রধান ভাষা উজবেক। চোদ্দ শতাংশ মানুষ রুশ ভাষায় কথা বলেন। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী দেশগুলির ভাষাও, যেমন – তুর্কমেন, কাজাক, কিরগিজ প্রভৃতি এখানে প্রচলিত। এখানকার মুদ্রার নাম সোম (Som)। আঠেরো বছরের ছেলেদের জন্য আর্মি সার্ভিসিং বাধ্যতামূলক। সরকার থেকে বিনা খরচে শিশুদের সমস্ত রকম টিকা দেওয়া হয়। পতাকার চারটে রঙ – নীল – পবিত্রতা, সাদা – শক্তি, সবুজ – মা, লাল – রক্ত-এর প্রতীক । বারোটা প্রভিন্স বোঝাতে পতাকায় বারোটি তারা ব্যবহার করা হয়। অর্দ্ধেক চাঁদের অর্থ গ্রোয়িং কান্ট্রি।
বিখ্যাত ঐতিহাসিক আলবেরুণী উজবেকিস্তানের মানুষ ছিলেন। মঙ্গোলিয়া থেকে এসে চেঙ্গিস খানও এখানে কিছুকাল রাজত্ব করেছিলেন।
উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দ (Tashkent)। তাসখন্দ মানে পাথুরে শহর। শহরের প্রধান আকর্ষণ ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্কোয়ার। উজবেক প্রেসিডেন্টের উদ্যোগে ১৯৯৮-৯৯ সালে তৈরি পার্কটিতে রয়েছে বিশাল বড় ধাতুর তৈরি একটি মাতৃমূর্তি। গালে হাত দিয়ে চিন্তিত মুখের এই মূর্তিটির সামনে সর্বক্ষণ জ্বলছে অগ্নিশিখা। যুদ্ধে যাওয়া উজবেকদের জন্য দেশমাতৃকার চিন্তার প্রতিমূর্তিস্বরূপ। কাছেই একটি সুদৃশ্য ভবনের বারান্দায় সার দিয়ে রয়েছে ধাতব বই, যার পাতায় পাতায় লেখা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত উজবেক সেনাদের নাম। ষোলটি সুন্দর স্তম্ভের ওপর অসাধারণ ফটক। উচ্চতা তিরিশ ফুটের মতো। ওপরে দুটো উড়ন্ত সারস। পার্কের কোথাও রয়েছে ছোটদের জন্যে খেলার আয়োজন, কোথাওবা জলাশয়ে ভেসে বেড়াচ্ছে রাজহাঁসের পাল। মালবেরি, প্লাটান, পাতাবাহারের ঝাড় – নানারকম গাছ আর ফুলের শোভায় সজ্জিত পার্কটিতে রয়েছে নানা মাপের প্রায় পঞ্চাশটি ফোয়ারা। এই শহরের সঙ্গে লালবাহাদুর শাস্ত্রীর স্মৃতি জড়িয়ে আছে। ১৯৬৬ সালের ১১ জানুয়ারি এখানেই লালবাহাদুর শাস্ত্রীর উপস্থিতিতে পাকিস্তানের সঙ্গে শান্তিচুক্তি হয়। শহরে লালবাহাদুর শাস্ত্রীর একটি আবক্ষ মূর্তি এবং তাঁর নামে একটি রাস্তা আছে। চেঙ্গিস খাঁ-এর হাতে ধ্বংস হয়ে যাওয়া শহরটিকে পরবর্তীকালে তৈমুর পুনর্নির্মাণ করলেও আবারও কাঝাক, ইরান এবং মঙ্গোলীয় হানায় বিধ্বস্ত হয়। তবে আজকের সাজানোগোছানো ঝকঝকে শহর, চওড়া রাস্তাঘাট, হকারমুক্ত ফুটপাথ, বহুতল বাড়ি, চোখধাঁধানো শপিং মল এইসব আধুনিক উপকরণ দেখলে ইতিহাসের গল্প অবিশ্বাস্য ঠেকে। কেনাকাটার সবচেয়ে বড় জায়গা চোরসু বাজার।
তাসখণ্ড থেকে উরগেন হয়ে পৌঁছনো যায় খিভায় (Khibha)। উরগেন থেকে খিভার পথে পড়বে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ইচান কালা কমপ্লেক্স (Ichan Kala Complex), কালটা মিনার, মহম্মদ আমিন খান মাদ্রাসা, জুম্মা মসজিদ, বোরগাজী খান মাদ্রাসা, ইসলাম খোজা মাদ্রাসা ও মিনার,তাস খাউনি এবং হারেম এবং পাহাড়ের গায়ে অনেক প্রাচীন সমাধি। প্রাচীন কালে খিভার শাসকদের বাসস্থান ছিল কুন্যা আর্ক (Kunya Ark)।
খিভা থেকে বুখারা যাওয়ার সময় বিখ্যাত সিল্ক রুট ধরে পার হতে হবে মরুপ্রান্তর। উজবেকিস্তানের উত্তরের নিম্নভূমি আসলে কিজিলকুম নামের এক বিশাল মরুভূমি যা দক্ষিণ কাজাকিস্তানেও প্রসারিত হয়েছে। তুর্কী ভাষায় ‘কিজিলকুম’-এর অর্থ লাল রঙের বালি। বেশ উঁচুনীচু। রুক্ষ্ম ধূ ধূ বালির মাঝে মাঝে কাঁটাগাছ। প্রাচীনকালে এই পথ দিয়ে চলত উটের ক্যারাভান। এই ক্যারাভানেই চলত রেশম পরিবহন। এই পথে পড়বে ২৫৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ উজবেকিস্তানের বিখ্যাত নদী আমু দরিয়া। আমু দরিয়া এবং আরেক নদী সির দরিয়া-র দোয়াব অঞ্চলে অবস্থিত এই মরুভূমি। কিজিলকুম নেচার রিজার্ভ-এ চোখে পড়বে বুখারা হরিণ, পার্সি গ্যাজেল, স্থানীয় ছোট ছোট ঘোড়া এবং বিরল প্রজাতির কিছু সরীসৃপ। কিজিলকুম মরুপ্রান্তরের সর্বত্রই অবাধ গতি বড় আকারের মনিটর লিজার্ডের। স্থানীয় মানুষদের অধিকাংশেরই প্রধান পেশা ভেড়া, উট প্রভৃতি পশুপালন।
মরক্কো যেমন মধ্যপ্রাচ্যের প্রাচীন অথচ জীবন্ত শহর, বুখারাও মধ্যএশিয়ার সেরকমই একটি পুরোনো অথচ প্রাণবন্ত শহর। শোনা যায় সংস্কৃত ‘বিহারা’ শব্দটি থেকে ‘বুখারা’ শব্দের উৎপত্তি। ওল্ড বুখারা ঢোকার মুখে রাস্তার দুদিকের প্রাকার মুসলিম স্থাপত্যের সাক্ষ্য বহন করছে। ষষ্ঠ শতাব্দীতে এই প্রাকার তৈরি হয়েছিল। প্রাকারটির উচ্চতা ১০ মিটার, চওড়া ৮ মিটার এবং ব্যাপ্তি ৩০০ কিলোমিটার। অষ্টম শতাব্দীতে আরবদের আক্রমণে এই প্রাকারের কিছু অংশ ধ্বংস হয়ে যায়। পরে ১৯২০ সালে রেড আর্মিও খানিকটা ধ্বংস করেছিল। এখানে এগারোটা গেট আছে। ষষ্ঠদশ শতাব্দীতে তৈরি সিটাডেল আর্ক (Citadel Ark) বুখারার শাসকদের রাজপ্রাসাদ। ২০ মিটার উঁচু একটা পাহাড় বানিয়ে তার ওপর তৈরি হয়েছে এই প্রাসাদ। রেড আর্মির আক্রমণে এই প্রাসাদেরও কিছু অংশ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছিল। কিছুটা এগিয়ে চশমা আয়ুব মৌসলিয়াম (Chashma Ayub Mausoleum)। এই মৌসলিয়ামকে ঘিরে গল্পকথা রয়েছে। শোনা যায় বুখারাতে জলের অভাব চিরদিনের মত মেটাতে প্রফেট জোভ (আয়ুব) এই মৌসলিয়ামের একটা জায়গা চিহ্নিত করে তাঁর শিষ্যদের বলেন শলাকা গরম করে মাটি খুঁড়তে। মাটির ভেতর থেকে পরিষ্কার সুস্বাদু জল বেরিয়ে আসে। এই জল আজও পবিত্র বলে মনে করা হয়। নবম বা দশম শতাব্দীতে নির্মিত ইসমাইল সামানি মৌসলিয়াম-এ ‘সামানিড’ সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ইসমাইল সামানি-র মৃতদেহ শায়িত আছে। এর মিনারগুলি খুবই কারুকার্যমণ্ডিত। এই সামানিড বংশই মধ্য এশিয়ায় রাজত্বকারী শেষ পার্শি বংশ। ১৭১৪ সালে নির্মিত বোলো খাউজ মসজিদ (Bolo Khauz Mosque) – এখানে কাঠের কাজ করা কুড়িটি স্তম্ভ আছে। বড় গাছ না থাকায় স্তম্ভের কাঠ রাশিয়ার থেকে আনা হয়েছিল। মিনার-ই-কালান নামে প্রসিদ্ধ ১৫০ ফুট উঁচু টাওয়ারটি ইতিহাসের পাতায় পরিচিত ‘ডেথ টাওয়ার’ নামে। ১৫১৪ সালে নির্মিত হয়েছিল কালান মসজিদ। মির-ই-আরাব মাদ্রাসাটি ইয়েমেনের অধিবাসী শেখ আবদুল্লা ইয়ামানির তৈরি। ‘হৌজ’ কথার অর্থ পুকুর। লব-ই-হৌজ জলাশয়টিকে ঘিরে বিশাল একটি স্থাপত্য রয়েছে। এর ভেতরের কারুকার্য খুব সুন্দর। সেখানে রয়েছে কুকেলদাশ মাদ্রাসা।
বুখারা থেকে সমরখন্দ যাওয়ার পথে ঘুরে নেওয়া যায় সবুজ বাগিচায় সাজানো শহর শখরিসবজ (Shakhrisabz) – এর কাছেই একটি গ্রামে জন্মেছিলেন তৈমুর লঙ। তৈমুরই এখানকার প্রথম জাতীয় নেতা। তাঁর বাবা ছিলেন মঙ্গোলিয়ান মুসলিম, মা স্থানীয় নারী। তৈমুর নিজেকে চেঙ্গিস খাঁ-এর বংশধর হিসেবে দাবী করতেন। তৈমুরের সবচেয়ে বড় আকাঙ্খা ছিল চিন জয় করা। কিন্তু যুদ্ধ করতে গিয়ে পথে অসুস্থ হয়ে ছিয়ানব্বই বছর বয়সে মারা যান। ভারতে মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বাবর ছিলেন তৈমুরের বংশধর। বিখ্যাত সিল্ক রুটটিও তৈমুরের সহায়তায় তৈরি হয়। ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তালিকাভুক্ত এই শহর। তৈমুরের বৈভবের নিদর্শন হিসেবে আজ এখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে একসারায় (Aksaray) শ্বেত প্রাসাদ। উলুক বেগ ছিলেন একাধারে বিজ্ঞানী এবং অ্যাস্ট্রোনমার। মাত্র পনের বছর বয়সে এখানকার প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। তাঁর তৈরি কোক গুম্বাজ (Kok Gumbaz) বা ব্লু ডোম মসজিদ (Blue Dome)আরেকটি দ্রষ্টব্য। শখরিসবজ-এ খুব সুন্দর কার্পেট এবং উজবেকিস্তানে ব্যবহৃত এক বিশেষ ধরণের টুপি পাওয়া যায়। মার্কো পোলো আবিস্কৃত গ্রেট উজবেক হাইওয়ে এই শহরের মধ্যে দিয়ে গেছে।
সিল্করুটের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত সমরখন্দই (Samarkand) ছিল প্রাচীনকালে উজবেকিস্তানের রাজধানী। সমস্ত শহর প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। জমি খুবই উর্বর। এখানে প্রচুর সোনা পাওয়া যায়। সমরখন্দের মূল আকর্ষণ রেগিস্তান স্কোয়ার বাজার - গালিচা, সিল্কজাত সুন্দর হাতে কাজ করা জিনিসের অফুরান ভাণ্ডার। রেগিস্তান হল তিনটি বড় ইমারতের কেন্দ্রস্থল – তিনটি ভিন্ন মাদ্রাসা ইসলাম স্থাপত্যের নিদর্শন বহন করে চলেছে। ভারত জয় উপলক্ষে তৈমুর সমরখন্দে একটি মসজিদও নির্মাণ করেছিলেন। প্রায় সাড়ে চারশো থামে ঘেরা এই বিবি-খায়াম মসজিদটি। গুর এমির মৌসলিয়াম (Gur Emir Mausoleum) – তৈমুরের পরিবারের সমাধিক্ষেত্রটির দরজা এবং ভিতরটা খুব কাজ করা। উলুক বেগের তৈরি অবজারভেটরি এখন মিউজিয়ামে পরিণত হয়েছে।
সমরখন্দ থেকে তাসখন্দ যাওয়ার পুরো পথটাই ‘বাম-ই-দুনিয়া’ অর্থাৎ পৃথিবীর ছাদ পামীর মালভূমির ওপর দিয়ে। দুদিকেই ধু ধু কঠিন প্রান্তর। আবার কখনও পাশে সবুজ ক্ষেত। রাস্তার দু’ধারে মাঝে মাঝে আবার লম্বা লম্বা গাছ। এইসব জায়গায় আবার দূরে দূরে দু’একটা বাড়ি। রাস্তার দু’পাশে আপেল গাছ। মধ্য এশিয়ার উজবেকিস্তানে অবস্থিত পামীর রেঞ্জ পৃথিবীর উচ্চতম পর্বতমালাগুলির মধ্যে অন্যতম। এটা প্রধানত সমরখন্দকেই ঘিরে রয়েছে। ফারগানা ভ্যালির পথে পামীরের সৌন্দর্য আবার একেবারে অন্যরকম। বাঁদিকে প্রায় খাড়া সবুজ পাহাড়। ডানদিকে অনেক দূরে নিরবিচ্ছিন্ন আরেক সারি পাহাড়। দূরের পর্বতমালা বরফের চাদরে ঢাকা। আর মাঝখানে বিস্তীর্ণ সমতলভূমি। হিমালয়, তিয়ানশান, কারাকোরাম, কুনলুন ও হিন্দুকুশ – নামী গিরিমালার সংযোগস্থলে প্রায় ৬০ হাজার বর্গকিলোমিটার অংশ নিয়ে পামীর ছড়িয়ে আছে উজবেকিস্তান, চিন, কিরঘিস্তান, তাজিকিস্তান-এ। খনিজ সম্পদে পূর্ণ এই পামীর মালভূমি। টলেমির লেখায় আছে পামীরের ওপরে বাণিজ্যপথের কথা। চিন থেকে অনেক বৌদ্ধও এসেছেন এই পথে। এই ফারগানা ভ্যালি বাবরের জন্মস্থানও। আগে এখানে পার্সিদের প্রাধান্য ছিল। এখান থেকে বিতাড়িত হয়ে বাবর প্রথমে আফগানিস্তানে আসেন এবং পরবর্তীকালে ভারত জয় করেন। অষ্টাদশ শতকে স্বাধীনতা আন্দোলন করে ফারগানা স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীস্কৃতি পেলেও পরে আবার রাশিয়ার দখলে চলে যায়। বাগান, চাষবাস আর জীবজন্তু পালন স্থানীয় মানুষদের প্রধান জীবিকা। এছাড়া ইতিহাস খ্যাত সিল্কের ব্যবসা আজও চলে আসছে। পাশাপাশি চলে তুলো ও তামাকের চাষ। ফারগানা ভ্যালির আরেক দ্রষ্টব্য আর্ট গ্যালারি। স্থানীয় শিল্পীদের আঁকা ক্যানভাসের অনবদ্য শিল্পভাণ্ডার।
পামীর হাইওয়ের পোশাকি নাম এম ৪১। পাহাড়ি রাস্তা কিন্তু খুব চওড়া। এই পথে পৌঁছনো যাবে আরেক শহর কোকন্দ (Kokand) –এ। এটি আগে এই অঞ্চলের রাজধানী ছিল। এখানের উল্লেখযোগ্য দ্রষ্টব্য খান প্যালেস মিউজিয়াম, ফ্রাইডে মস্ক এবং নরবুট্যাবি (Norbutabiy) মাদ্রাসা। রিশান-এ রয়েছে সেরামিক ফ্যাক্ট্রি। সমরখন্দ আর তাসখন্দের মাঝে মধ্য এশিয়ার বৃহত্তম রেশম উৎপাদন কেন্দ্র মার্গিলান (Margilan) শহর। এখানে রেশম কীট থেকে কীভাবে সিল্ক সুতো তৈরি হয় তা নিজের চোখে দেখে নেওয়া যায়।
যাওয়াঃ উজবেকিস্তানে মোট এগারটি এয়ারপোর্ট আছে। এরমধ্যে ছ’টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ইউরোপের প্রায় সব দেশেরই বিমান সারাদিনে কখনও না কখনও একবার ছুঁয়ে যায় মধ্য এশিয়ার এই দেশটি। সবচেয়ে জনপ্রিয় তাশকেন্ট ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট।
অন্যান্য তথ্যঃ উজবেকিস্তানের খাওয়া-দাওয়া উপাদেয়। মাংস, গাজর ও পেঁয়াজ দিয়ে বানানো পালব রাইস, শার্বা স্যুপ ও ন্যুডলস দিয়ে তৈরি বিভিন্ন খাবার বেশ জনপ্রিয়। স্থানীয় মানুষ গ্রিন টি পছন্দ করেন। এখানে থাকা-খাওয়ার খরচ তেমন অতিরিক্ত কিছু নয়, সেই তুলনায় মান বেশ ভালো। পর্যটকেরা ইচ্ছা করলে হাইকিং, বাইকিং, মাউন্টেনিয়ারিং প্রভৃতি বিভিন্ন অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসে যোগ দিতে পারেন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন শহরগুলি। স্থানীয় মানুষও খুব অতিথিবৎসল।
তথ্য সহায়তাঃ মঞ্জুশ্রী সিকদার ও মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়
|| ভ্রমণ কাহিনি - রেশম পথের যাত্রী ||