~ ৮ম বর্ষ ২য় সংখ্যা - শ্রাবণ ১৪২৫ ~
পরণে সবুজ শাড়ি আর ব্লাউজ। মাজা মাজা গায়ের রঙ। বয়স সত্তরের আশপাশে হবে। প্রায় সাদা হয়ে যাওয়া চুল পরিচ্ছন্ন করে পিছনে বাঁধা, দুদিকে কানের পাশে বড় কালো ক্লিপ দিয়ে আটকানো। মুখে সর্বদাই হাসি লেগে রয়েছে। চোখ দুটো হাসছে যেন সর্বক্ষণ। স্বচ্ছন্দ হিন্দি বলছেন। নিজেই বললেন, জেন্ডার-এ গন্ডগোল হয়, তবে চলে যায়। মাদ্রাজ থেকে ট্রেনে সাত ঘন্টার দূরত্বে এক গ্রামে বাড়ি। ট্যুর অপারেটরের সঙ্গে এসেছেন। বাহাত্তর জনের দলে গ্যাংটক, দার্জিলিং ঘুরে এখন কলকাতায় যাচ্ছেন – এনজেপি থেকে রাতের পদাতিক এক্সপ্রেসের স্লিপার কোচে। নিজের পরিবার থেকে তিনি একাই – আমাদের কামরাতেও তাই। সঙ্গীদের টিকেট অন্য অন্য কামরায় পড়েছে। কথায় কথায় মনে হল স্বামী-পুত্র হয়তো মারা গেছেন। তবে পথেই আপনজন গড়ে নিচ্ছেন অনায়াস গল্প করার ঢং-এ। সাইড লোয়ার বার্থে মুখোমুখি বসা মালদার বাসিন্দা অল্পবয়স্ক ছেলেটি ফোনে তাঁর নম্বর সেভ করে 'আন্টি মাদ্রাজ' নামে। বলে, কাল ফোন করব কিন্তু আন্টি।
ঊনআশি সালে একবার ছেলের চাকরির সূত্রে শিলিগুড়ি এসেছিলেন। তখন পঞ্চাশ টাকা ঘরভাড়া। কিন্তু সেই ঘরে এই এত বড় বড় 'কিড়া' ছিল - আঙুলে মাপ দেখান। সেই ভয়ে কদিন বাদেই পালিয়ে গেছিলেন। সেবারেও দার্জিলিং এসেছিলেন, কিন্তু এখন আর ভালো করে মনে নেই সেকথা।
তবে ট্যুর অপারেটরদের সঙ্গে ঘোরা মানে তো ওই কোথাও নিয়ে গিয়ে এক দুই তিন চার এই এই দেখো ব্যস, হয়ে গেল - আঙুল নাড়িয়ে দেখান তিনি। বারো হাজার টাকা নিয়েছিল। তারপর খাওয়া খরচ এটা ওটা সব আলাদা, কুড়ি হাজার পেরিয়ে গেছে। বলছেন, কিন্তু সবই হাসিমুখে।
হাতের কাছে একটা ব্যাগ। ওরই থেকে বেরোচ্ছে চাদর কিম্বা টুকিটাকি খাবার। আর সিটের নীচে আরেকটা ব্যাগ। সাইড লোয়ারে একটু কাত হয়ে ঠেসান দিয়ে বসে কখনও বাঙালি সহযাত্রীর সঙ্গে হিন্দিতে, আবার কখনওবা নিজের দলের কেউ দেখা করতে এলে তামিলে গল্প করে যাচ্ছেন।
আর আমি দেখছিলাম এক চিরন্তন ভ্রমণকারীকে ওই মাদ্রাজিনীর মধ্যে।
চরৈবেতি...
- দময়ন্তী দাশগুপ্ত
এই সংখ্যায় -
"রাত্রি থাকিতেই জাগিয়াছি। আমরা তিনটী মহিলা খুব পুরু কাপড়ে শরীর ঢাকিয়া একটু দূরবর্ত্তী উচ্চশৃঙ্গে চলিলাম। প্রভাতের মৃদুমন্দ বায়ু-হিল্লোল আমাদের শরীর মনে যেন নবজীবন সঞ্চার করিয়া দিল। যে অভিনব দৃশ্য সম্মুখে বিরাজমান, তাহা দেখিতে দেখিতে সত্যই আপনাকে ভুলিতেছি। এ অতুলনীয় দৃশ্যের এক কণাও চিত্রিত করা ভাষার সাধ্য নহে।" - শ্রীমতী স্বর্ণপ্রভা বসুর কলমে "বঙ্গ মহিলার হিমালয় ভ্রমণ" |
"যদি একটা গাড়ি লগে-লগেই থাকে তবে একবারে সিমলা থেকে মানালি ঘুরে রোহ্তাং ঘুরে সোলাং ঘুরে বশিষ্ঠ ঘুরে হিড়িম্বা-মনু-মণিকরণ-নগ্গর-কুলু সমস্তটা ঘুরে, একরাত মান্ডিতে কাটিয়ে সোওওজা কালকা পৌঁছে যাওয়া যাবে, সুবিধাও হবেক আর সস্তাও হবেক মনে হয়। এই ধরনের প্রি-ডমিনেন্ট ‘মনে হওয়া’কে সাইডে রেখে সিমলা-মানালি আসুন, কেননা থোড়া থোড়া করে আরও অনেক অ্যাডজাস্ট করা বাকি এখনও!" |
~ আরশিনগর ~
আহালদাড়ায় একবেলা – সঞ্চারী সরকার |
~ সব পেয়েছির দেশ ~
সোনায় মোড়া দেশ – শরণ্যা ব্যানার্জী |
মিজোরামে নতুন বছর – সুবীর কুমার রায় |
~ ভুবনডাঙা ~
জুরিখ থেকে আল্পসের তিত্লিস হিমবাহে – সুদীপা দাস ভট্টাচার্য |
~ শেষ পাতা ~
স্যুইৎজারল্যান্ডের এঙ্গেলবার্গ গ্রামে প্যারাগ্লাইডিং - আলোকচিত্রী শ্রীমতী সুদীপা দাস ভট্টাচার্য্য
ভালো লাগলে জানান বন্ধুদের |
||