Home Page
Current Issue
Archive
Travel Plans
Trekking Routemap
Tips
Explore
Rail
Air travel
Other websites

Feedback



hit counters
hit counter

 

 

১২শ বর্ষ ২য় সংখ্যা
ভাদ্র - অগ্রহায়ণ ১৪২৯

 



কয়েকদিন ধরেই ছেলেবেলার রূপনারায়ণপুর স্টেশনটার কথা মনে পড়ছিল। সেইসময়ের বিহার সীমান্তে পশ্চিমবঙ্গের শেষ স্টেশন। এমনিতে চিত্তরঞ্জনকে বাংলার শেষ শহর বলা হলেও তার রেলস্টেশনটির অবস্থান তখনকার বিহার অর্থাৎ আজকের ঝাড়খন্ডের ভূমিতে। কত বিকেল কাটিয়েছি বেঞ্চিতে বসে, প্রায় জনবিরল প্ল্যাটফর্মে হাঁটতে হাঁটতে অথবা ওভারব্রিজে। হাওড়া-দিল্লি মেইন লাইনের মধ্যে পড়লেও বেশিরভাগ ট্রেনই দাঁড়াত না রূপনারায়ণপুরে। বাঁশি বাজিয়ে চলে যেত দূরের হাতছানি দিয়ে। রেললাইনটা ছিল শহরের ভূমিতল থেকে খানিক নিচে, খাড়াই জমি উঠে গিয়েছে দুপাশে। মনে হত যেন সবুজ কোনও গিরিখাতের মাঝে রয়েছে শান্ত ছোট্ট স্টেশনটি।
এসব ভাবতে ভাবতেই হাতে এসে পড়ল বিশ্বনাথ ঘোষের লেখা 'চা-ই চা-ই' বইটি। দূরপাল্লার ট্রেন পথিমধ্যে কোনও স্টেশনে পৌঁছলেই যে ডাকটা সবচেয়ে আগে কানে আসে।
হাওড়া থেকে রওনা হওয়ার ঘন্টা দু-তিনের মধ্যেই ট্রেন পৌঁছেছে খড়গপুর জংশন স্টেশনে। ছেলেবেলা থেকেই যার নাম জানি ভারতের সবচেয়ে লম্বা প্ল্যাটফর্ম হিসেবে। দক্ষিণ ও মধ্য ভারতের বিভিন্ন জায়গার সঙ্গে পুবের সংযোগস্থল। রাতের খাওয়া হয়ে যেত ততক্ষণে, তাই 'চায়ে চায়ে' শুনলেও তাদের ডাকা হত না। কিন্তু ট্রেন দাঁড়াত বেশ কিছুক্ষণই, যাতায়াতের পথে। ফিরতি যাত্রায় অবশ্য কখনও কখনও চা খেয়েওছি এখানে। তবে না নামলেও খড়গপুর ছোট শহর নয়, চেনা-পরিচিত দু-একজন থাকেও, অর্থাৎ কোনোদিন নেমে পড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
বিশ্বনাথ অবশ্য সেইসব স্টেশনকেই বেছেছেন যার পিছনের শহরটা এতই ছোট এবং গুরুত্বহীন যে স্থানীয় লোকজন ছাড়া প্রায় কেউই সেসব স্টেশনে নামবেন না, অথচ জংশন স্টেশনটি সরগরম, ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলকে যুক্ত করতে। প্রবাসী বাঙালি বিশ্বনাথের বাড়ি কানপুরে। বছরকয়েক আগে একবার কানপুর থেকে কর্মস্থল চেন্নাইয়ে ফেরার সময় গোরখপুর-ত্রিবান্দ্রাম এক্সপ্রেস ইটারসি স্টেশনে দাঁড়ালে মাটির ভাঁড়ে চা খেতে খেতেই লেখাটা মাথায় আসে তাঁর। বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ২০০৯ সালে।
বেনারস যাওয়ার সময় দুবারই নেমেছিলাম মুঘলসরাই স্টেশনে, সম্প্রতি তার নাম বদলে হল পণ্ডিত দীন দয়াল উপাধ্যায় জংশন। দিল্লি যাতায়াতের পথেও ট্রেন দাঁড়িয়েছে এখানে বেশ কিছুক্ষণ। ছেলেবেলায় কানপুর থেকে কলকাতা যাওয়ার সময় এই স্টেশনেই দুপুরের খাওয়াদাওয়া হত বলে বিশ্বনাথ জানিয়েছেন। কিন্তু সেই স্টেশনেই যখন ভোরের আলো ফোটার আগে পৌঁছলেন, তখন তিনি নিজেও আর খুব একটা নিঃসংশয় নন। তাঁর চেনাপরিচিতেরা ইতিমধ্যেই আসার আগে জায়গাটা ভালো নয় বলে সাবধান করেছিলেন। মুঘলসরাই শহরে পৌঁছে একের পর এক বিচিত্র অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে সময় কাটে বিশ্বনাথের। পাব-এ বসে আলাপ হয় স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে। ঘুরতে ঘুরতে পরিচয় হয় ফলাহারী বাবা আর গুরুবক্স কাপাহীর সঙ্গে। এই কাপাহীই মুঘলসরাই স্টেশনে দীন দয়াল উপাধ্যায়ের মৃতদেহ সনাক্ত করেছিলেন। মুঘলসরাই, ঝাঁসি বা ইটারসির অভিজ্ঞতা বিশ্বনাথকে উৎসাহ দিয়েছিল দক্ষিণের গুন্টাকল আর আরাক্কোনাম, জোলারপেট্টাই যেতে, যদিও সেগুলি তাঁকে একেবারেই হতাশ করেছিল। অবশেষে পৌঁছেছিলেন শোরানুরে। শতাধিক বছরের পুরনো এই জায়গাটির ওপর দিয়ে সাউথ ইন্ডিয়ান রেলওয়ে মাদ্রাজ থেকে ম্যাঙ্গালোর পর্যন্ত ট্রেন চালু করতেই এর স্থানমাহাত্ম্য বেড়ে গেল হুড়মুড়িয়ে। এরপর কোচিনও জুড়ল এখানে। আজকাল দিল্লি থেকেও ট্রেন আসে। স্টেশনলাগোয়া ছোট্ট শহরটিতে পুরনো এক বন্ধু আর নীলা নামে এক নদীর সঙ্গে দেখা মনে রয়ে যায় বিশ্বনাথের। তাঁর লেখা আরেকটি অ-সাধারণ ভ্রমণসম্পর্কিত বই 'গেজিং অ্যাট দ্য নেইবারস – ট্রাভেলস অ্যাক্রস দ্য লাইন দ্যাট পার্টিশনড ইন্ডিয়া'।

ছোট ছোট সামান্য সামান্য দেখা জুড়ে জুড়েই যে একটি চমৎকার ভ্রমণকাহিনি হতে পারে তা প্রথম চিনিয়েছিলেন বিভূতিভূষণ। দেখা আর লেখার ভঙ্গী সম্পূর্ণ আলাদা হলেও বিশ্বনাথের বইগুলি পড়লেও মনে হয় ব্যাগ গুছিয়ে একা বেড়িয়ে পড়ি, আর তারপর চলে যাওয়া যায় যেকোনও দিকেই…

 - দময়ন্তী দাশগুপ্ত

~ এই সংখ্যায় ~


~ আরশিনগর ~

সবুজ দ্বীপ মৌসুনি – অর্পিতা চক্রবর্তী

ফ্রেডেরিক নগরের সেমেট্রিতে
– গৌরব বিশ্বাস

ইতিহাসের সন্ধানে মুর্শিদাবাদে
– সৌমাভ ঘোষ

~ সব পেয়েছির দেশ ~

উত্তরাখণ্ডে ট্রেক – মৃণাল মণ্ডল

অমরনাথ দর্শন – নিবেদিতা কবিরাজ

~ ভুবনডাঙা ~

একলা মেয়ে ইথিওপিয়ায় – যশোধরা রায়চৌধুরী

ভিয়েতনাম-কাম্বোডিয়া – সাতান্ন বছর পরে আবার
– তপন পাল

তাঞ্জানিয়ার ওল্ডুভাই গর্জ – দেবযানী চক্রবর্তী

~ শেষ পাতা ~

তুমলিং – সাধ ও সাধ্যের ট্রেকিং – প্রদীপ্ত চক্রবর্তী

কাম্বোডিয়ার আঙ্করভাট মন্দির চত্বরে - আলোকচিত্রী শ্রী তপন পাল

HTML Comment Box is loading comments...


Album

Live Traffic Feed

To view this site correctly, please click here to download the Bangla Font and copy it to your c:\windows\Fonts directory.

For any queries/complaints, please contact admin@amaderchhuti.com
Best viewed in FF or IE at a resolution of 1024x768 or higher